আর বিনামূল্যে রেশন নয়, এবার থেকে দিতে হবে টাকা! বন্ধ হতে চলেছে ফ্রি রেশন পরিষেবা।
দরিদ্র ও মধ্যবিত্তের খাদ্য সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে শুরু হয়েছিল রেশন প্রকল্প। মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে লড়াই করার জন্য সরকার এই প্রকল্পের আওতায় বিনামূল্যে রেশন সামগ্রী সরবরাহের উদ্যোগ নেয়, যা করোনা মহামারির সময় লক্ষ লক্ষ মানুষকে সাহায্য করেছে। কিন্তু নীতি আয়োগের সাম্প্রতিক রিপোর্ট অনুযায়ী, এই বিনামূল্য পরিষেবা বন্ধ হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
নীতি আয়োগের রিপোর্টে উঠে এসেছে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
সম্প্রতি প্রকাশিত ‘মাল্টি ডাইমেনশনাল পভার্টি ইন ইন্ডিয়া সিন্স ২০০৫-২০০৬’ শীর্ষক রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে ২৪ কোটি ৮২ লক্ষ মানুষকে দরিদ্রসীমার উপরে আনা হয়েছে। এই তথ্যের ভিত্তিতে অনুমান করা হচ্ছে যে, ফ্রি রেশন প্রকল্প হয়ত আর চালু থাকবে না। একই সঙ্গে প্রশ্ন উঠেছে, ৮০ কোটির রেশন গ্রাহকের তালিকা থেকে এই ২৪ কোটির নাম বাদ দেওয়ার পরিকল্পনা করছে সরকার?
রেশন ডিলারদের আয়ের উন্নতির জন্য নতুন পরিকল্পনা
নীতি আয়োগ সম্প্রতি ‘ওয়ার্কিং গ্রুপ অফ মডেল ফেয়ার প্রাইস শপ’-এর বৈঠকে রেশন ডিলারদের আয়ের উন্নতির জন্য একটি প্রস্তাব পেশ করেছে। এতে বলা হয়েছে, প্রতি কেজি রেশনের জন্য গ্রাহকদের থেকে ১ থেকে ১.৫ টাকা নেওয়া হলে ডিলারদের আয় কেজি প্রতি ৫ থেকে ৭ টাকা বাড়বে। অর্থাৎ, ফ্রি রেশন পরিষেবা বন্ধ করে তার জন্য সামান্য মূল্য নির্ধারণের পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
সরকারি বিজ্ঞপ্তি শীঘ্রই প্রকাশিত হতে পারে
বর্তমানে রেশন ডিলাররা প্রতি কেজি সামগ্রীর জন্য মাত্র ৯০ পয়সা কমিশন পান। ডিলারদের এই কমিশন বাড়ানোর জন্যই গ্রাহকদের কাছ থেকে সামান্য টাকা নেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে। শীঘ্রই এ নিয়ে সরকারের তরফ থেকে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতামত
বিশেষজ্ঞদের মতে, রেশন ডিলারদের আয়ের উন্নতি ঘটানোর যুক্তি দেখিয়ে বিনামূল্যে রেশন পরিষেবা বন্ধ করার প্রস্তাবটি কার্যকর করা হতে পারে। এর ফলে, ভবিষ্যতে চাল, গম এবং অন্যান্য রেশন সামগ্রী পেতে গ্রাহকদের একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ ব্যয় করতে হতে পারে।
দরিদ্র ও মধ্যবিত্তের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ
ফ্রি রেশন প্রকল্প বন্ধ হলে দেশের দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির উপর এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। মহামারির পর যেভাবে এই শ্রেণির উপর অর্থনৈতিক চাপ বেড়েছে, তাতে ফ্রি রেশন প্রকল্প বন্ধের সিদ্ধান্ত তাদের জীবনে বড় পরিবর্তন আনবে।
সরকারের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের দিকে এখন সবার নজর। এ নিয়ে শীঘ্রই আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসতে পারে।