প্রায় একবছরের বেশি সময় ধরেই জেলে রয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee)। শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায়। অপরদিকে, অন্য এক জেলে রাখা হয়েছে তাঁর একসময়ের ঘনিষ্ঠ বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কে (Arpita Mukherjee)।
একাধিকবার আদালতে তাঁদের জামিনের আবেদন করা হলেও প্রত্যেকবার খারিজ করেছেন বিচারপতি। তাঁদের জেরার পর একের পর এক রাঘব বোয়ালের সূত্র খুঁজে পেয়েছেন ইডির দুঁদে গোয়েন্দারা। তাদের মধ্যে অনেকেই এখন জেলের অন্ধকারে রয়েছে।
মঙ্গলবার বিচার ভবনে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় শুনানি ছিল পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং অর্পিতা মুখোপাধ্যায় সহ একাধিক অভিযুক্তদের। এদিন ব্যাঙ্কশাল আদালতে ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে আদালতে পেশ করা হয় পার্থ চট্টোপাধ্যায়, তাঁর সঙ্গিনী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কে।
শুনানিতে বিচারক প্রথমেই পার্থকে তাঁর শরীরের অবস্থা জিজ্ঞেস করেন। উত্তরে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী জানান যে, তাঁর শরীর ভালো নেই। তিনি তা সিবিআইকে জানিয়েছেন বলেও এদিন জানান বিচারপতিকে। এসব শুনে বিচারপতি পার্থকে বলেন, “পার্থ চট্টোপাধ্যায় সঙ্গে জেল কর্তৃপক্ষ আছেন? ওঁর কিছু হেলথ ইস্যু আছে। ট্রিটমেন্ট জন্য অর্ডার হয়ে গিয়েছে। সেগুলো যাতে ঠিক করে হয় দেখবেন।”
তারপর বিচারপতি জেল কর্তৃপক্ষকে পার্থ-ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের শারীরিক অবস্থার বিষয়ে প্রশ্ন করেন। বিচারপতি বলেন, “উনি কেমন আছেন? আপনাদের রিপোর্টে দেখছি এক্স রে এবং স্ক্যান প্রয়োজন। কবে হবে এটা? দেখবেন যেন ভালভাবে চিকিৎসা হয়। যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসা করাতে হবে। আপনারা তো এসএসকেএম-এ ট্রিটমেন্ট করান। রাজ্যের সবচেয়ে ভাল সুপার স্পেশালিস্ট হাসপাতাল এটা।” এরপর বিচারপতি অর্পিতাকে শারীরিক অবস্থার বিষয়ে প্রশ্ন করলে অর্পিতা বলেন, “আমার শরীর ভালো নেই”। এরপর বিচারপতি তাকে বলেন, “ওঁদের উপর দায়িত্ব। যদি আপনার কিছু হয় তাঁর দায়িত্ব জেল কর্তৃপক্ষের। আইন সেই দায়িত্ব জেলকে দিয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসা করান। আমি আজই অর্ডার করে দেব।”
প্রসঙ্গত, গতবছর রাজ্যের শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্তের দায়ভার গ্রহণ করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি (ED) এবং সিবিআই (CBI)। গত ২২ শে জুলাই তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রীর বাড়িতে হানা দেয় দুঁদে গোয়েন্দারা। সেখানে তাঁকে জেরার মাধ্যমে অর্পিতার সূত্র পায়।
অর্পিতার ফ্ল্যাটে হানা দিয়ে কোটি টাকার সন্ধান পান গোয়েন্দারা। এর পরেই প্রথমে পার্থ এবং অর্পিতা ও পরে একে একে অনেক প্রভাবশালীকে গ্রেপ্তার করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।