“সেইদিনের অপেক্ষায়”!

Published By: Khabar India Online | Published On:

“সেইদিনের অপেক্ষায়”

সোহিনী ঘোষ।

কলমে: সোহিনী ঘোষ।

রাত্রি মনে মনে ঠিক করেছে সে আর মন খারাপ করবে না। যার জন্য সে সেই ছোটবেলা থেকে অপেক্ষা করেছে ভালোবেসেছে প্রেম পরিণতি পেয়েছে, বিয়ে সন্তান সব হয়েছে। আজ সেই ভালোবাসা কোথায় যেন হারিয়ে গেছে।

বয়স বাড়ার সাথে সাথে সংসারে এমনভাবে নির্লিপ্ত হয়েছে। কেবল ভালোবাসার ওপর বিশ্বাস ভরসা করে এতকাল সংসারকে আগলে রেখেছে। সেই মানুষটা কি করে তাকে ভুলে অন্য একজনের সাথে সুখ দুঃখ ভাগ করে নিতে পারে।

রাত্রির ভালোবাসা একমাত্র অধিকার মনের মানুষকে ভালোবাসার। সেই মানুষকে অন্য কেউ ভালোবাসবে মানে সম্পর্ক হবে প্রেমের। তা মানা বড় কঠিন।

নিত্য অশান্তি করছে তবু সেই অশান্তি কেবল ভালোবাসার টানে। রাত্রি চায় না তার ভালোবাসাকে কেউ ভালোবাসুক, ভালোবাসাও অন্য কাউকে ভালোবাসুক।

আরও পড়ুন -  মনোকিনিতে নজর কাড়লেন অভিনেত্রী শুভশ্রী, ইন্দোনেশিয়ার বালিতে হবু মা

প্রতিদিনের মান অভিমানে আজ আর কাজ হয় না। দূরত্ব যেন বেড়েই চলেছে। বার বার কাছে আস্তে চেয়েছে, রাত্রি সব ভুলে কিন্তু পলাশ কাছে টানতে পারেনি। আগের মত ভালোবাসতে পারেনা। তার মনে অন্য নারী। মহিয়সী নারী। লালসা ছলনায় ভুলিয়েছে।

অপেক্ষা কেবল সেই দিনের – জীবনের একটা বাঁক আসবেই যখন রাত্রির কাছে ফিরে আসতেই হবে। সমস্ত টান শেষ হবার অপেক্ষা।

এতদিন রাত্রি ভালো মেয়ে ভালো বউ ভালো মা হয়ে বেঁচেছে। এবার সে ঠিক করেছে আর নয়। কি পেয়েছে সে? জীবনের প্রায় তিন ভাগ কাটানো হয়ে গেছে। কি পেল সে? কিভাবে তাকে ভালবাসল?

চায়ের কাপে চুমুক দিতে দিতে রাত্রি ভেবেছে জীবনে সব ক’টা দিন সে ভালো হয়ে বাঁচতে চেষ্টা করেছে। একনিষ্ট ভাবে সংসার করেছে সেই মানুষটাকে বিশ্বাস ভরসা ভালোবাসার কথা ভেবে।

আরও পড়ুন -  ‘চোখে চোখে কত কথা, মুখে কেন বলনা’, কাকে বলছেন ? শ্রীময়ী চট্টরাজ !

আজকাল পলাশই যখন তার কথা ভাবে না তাহলে তার কি দরকার তার বাবা মা তার আত্মীয়ের কথা ভেবে?

একটু বুঝুক সবাই। একটু বা একটু কেন বেশ খারাপ বউ, বৌমা হয়েই বাঁচবে সে। ভালোর সংজ্ঞা কি জানেন তো?

যতদিন আপনি সন্তান হিসাবে বাবা-মায়ের প্রতিটি কথা বাধ্য হয়ে মানবেন, স্ত্রী হয়ে স্বামীর সব সব ন্যায়- অন্যায় আপনি মেনে নিতে পারবেন, বৌমা হয়ে শাশুড়ি শ্বশুরের সবরকম আবদার বা অত্যাচার বা জোর খাটানো আপনি মুখ বুজে সইবেন, আত্মীয়দের কথায় তাল মিলিয়ে বা বন্ধু-বান্ধবদের মনের মত হয়ে চলতে পারবেন তাহলে আপনি ভালো। প্রেমিক বা প্রেমিকা যেই হোন না কেন একে ওপরের বিরোধিতা করা চলবে না। একেই বলে ভালো হওয়া।

আরও পড়ুন -  ODI World Cup 2023: নিরপেক্ষ ভেন্যুতে বিশ্বকাপ খেলবে পাকিস্তান, ICC কর্মকর্তার দাবি

এবার রাত্রি সেই ভালো হওয়ার থেকে বেরিয়ে এসে খারাপ হয়ে বাঁচবে। নিজের মনের মতো করে বাঁচবে।

এই যে নিজের মতো করে বাঁচা এটাই হল সবার চোখে খারাপ হওয়া।

রাত্রি ভাবলো হলাম ই না হয় খারাপ। জীবনের দুই-তৃতীয়াংশ ভালো হয়ে কাটিয়ে অবহেলা, অবজ্ঞাই পেলাম। আজও পাই। তবু মনের কথা তো শোনা হবে।

রাত্রি একা বাঁচে, এক গান শোনে, একাই ঘুরে বেড়ায়। যা চায় মনে তাই করে।

যেদিন পলাশ তার ভালোবাসার মানুষ রাত্রিকে মিস করবে সেদিন সে আবার ভালো হয়ে থাকবে।

কেবল অপেক্ষা করা ছাড়া রাত্রির আর কোন উপায় নেই।