“ইচ্ছে পূরণ”

Published By: Khabar India Online | Published On:

“ইচ্ছে পূরণ”

সোহিনী ঘোষ

কলমেঃ সোহিনী ঘোষ। 

কলেজে বের হবার সময় রোহিত সবাইকে বলে বের হয়। দিদা – দাদু,বোন ,মামী সবাইকে। আজ বোন স্কুলে বের হবার সময়ও রোহিতের কানে এল -মা আসলাম।

রোহিতের মনে হল আমি তো এটা বলতে পারিনা -মা আসি। ইসস আমারও যদি মা থাকতো আমিও বোনের মত বলতে পারতাম – মা আসি।

মায়ের মুখখানা মনে পড়ে গেল। স্কুল যাবার সময় দরজায় দাঁড়িয়ে মা বলত – সাবধানে যাবি বাবা। রাস্তাঘাট দেখে শুনে পার হবি।

আজ আর বলে না কেউ এ কথা। দিদা-দাদু -হ্যাঁ এসো – এটুকুই বলে।

আরও পড়ুন -  এই মাসেই শেষ ‘মিঠিঝোরা’! এল বড় সত্যি খবর

অনেক বছর হল মা-বাবা সবাইকে হারিয়ে ফেলেছে। কাকারাও দায় নিতে চায় নি। অবশেষে আশ্রয় মিলেছে মামাবাড়িতে। ভালো সবাই বাসে কিন্তু কোথাও যেন নিজেকে খুব একা – বাড়তি বলে মনে হয় রোহিতের। মামা- মামীর সংসার।

আজকাল সে গোটা দুই টিউশন জোগাড় করেছে। হাত খরচ চালানোর জন্য। মামা দেয় কিন্তু খুব কেমন যেন আড়ষ্টতা অনুভূত হয় রোহিতের মনে।

সেদিন খুব ইচ্ছে হচ্ছিল ক্যাডবেরি খেতে কিন্তু হাতে যে ক’টা টাকা আছে তা খরচ করে ফেললে আবার মামার কাছে চাইতে হবে। তাই আর সেদিন ক্যাডবেরি খায় নি। কলেজ থেকে এক এক দিন অনেকটা পথ পায়ে হেঁটেই স্টেশনে আসে। খাতা কিনতে হবে – মামাকে সব সময় বলা কেমন যেন। তাই ক’দিন কেনে নি। জুতোটাও প্রায় ক্ষয়ে এসেছে। মুচিকে দিয়ে ঠিক করিয়ে নেবে ভাবছে।

আরও পড়ুন -  নদী পেরিয়ে

এভাবে চলতে সে অভ্যস্ত ছিল না। কিন্তু হঠাৎই যেন অনেক বড় হয়ে গেছে। মনে মনে সে তা উপলব্ধি করে। মা-বাবা সবাইকে কি ছেড়ে যেতেই হত তাকে?এতটা জীবন সে কাটাবে কি করে? একা একা। বন্ধুদের সাথে থাকার সময়টা একটু ভালো থাকে। কিন্তু সেই বন্ধুদের সাথে কাটানো সময় গুলো বাড়ি এসে আর মা-কে বলা হয় না।

আরও পড়ুন -  ছাত্র মশগুল শিক্ষিকার প্রেমে, লজ্জার সমস্ত বাঁধ অতিক্রম করল ‘টিউশন টিচার’ ওয়েব সিরিজ, Trailer Watch

মনে মনে মায়ের সাথে কথা বলে। সবটাই বলে, তার উত্তরে মা যে কি বলত সেটাও সে ভেবে নেয়। এভাবেই চলছে।

টিউশনির টাকায় সে বোনকে ক্যাডবেরি কিনে দিয়েছে। আর সে নিজেও খেয়েছে।

রোহিত বুঝে নিয়েছে যুদ্ধ করে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। মনকে শক্ত করে, মায়ের ইচ্ছেপূরণ সে করবেই। যতই ঝড় আসুক।

মা-বাবা নেই ঠিকই কিন্তু অনুভূতিতে তার মনেই যত্ন করে রেখে দেবে সারাজীবন।