দেশ ছাড়ছেন ইহুদিরা ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের রকেট হামলার ভয়ে। রোজ এক হাজারেরও বেশি ইহুদি ইসরায়েল ছেড়ে সাইপ্রাসসহ বিভিন্ন দেশে পাড়ি দিচ্ছেন। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্যা গার্ডিয়ান।
সাইপ্রাস হচ্ছে ব্রিটিশদের বন্দিশিবির, যেখানে ১৯৪৬ থেকে ১৯৪৯ সালের দিকে ৫৩ হাজার ইহুদিকে আশ্রয় দেয়া হয়েছিল। তারা নাৎসিদের হলোকাস্ট থেকে প্রাণে বাঁচতে দলে দলে এখানে জড়ো হয়েছিল। সেখান থেকেই পরে নবগঠিত ইসরায়েল রাষ্ট্রে তাদের শেষ ১০ হাজার জনকে স্থানান্তর করা হয়। ফলে তারা এ দেশকেই সবচেয়ে নিরাপদ মনে করেছে।
লারনাকা শহরে ইহুদিদের প্রধান ধর্মীয় নেতা অ্যারি রাসকিন জানান, রোজ প্রায় এক হাজারের বেশি ইহুদি এই শহরে আসছেন। হামাসের হামলার পর শান্তির খোঁজে সাইপ্রাসে এসেছেন ১৬ হাজারের বেশি ইসরায়েলি।
তিনি জানান, রোজ মাথার ওপর দিয়ে ধেয়ে চলা রকেটের শব্দ যারা সহ্য করতে পারছেন না, এমন সব মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন কমিউনিটি সেন্টারটিতে। তাদের বিছানা, খাবার, অস্থায়ী থাকার জায়গা, সামর্থ্য অনুযায়ী সবকিছু দিয়ে সহায়তা করা হচ্ছে।
ইসরায়েল পেরেজ নামের একজন ইসরায়েলি নাগরিক বলেন, সব ঝঞ্ঝাট, রকেট হামলা এবং সংঘাত থেকে তারা দূরে থাকতে চেয়েছিলেন। তাই দেশ ছেড়ে কয়েক বন্ধুকে নিয়ে সাইপ্রাসে চলে এসেছেন। জানান, এখানে এসে নিজেদের নিরাপদ মনে করছেন।
দ্য গার্ডিয়ান জানায়, প্রায় দেড় মাস ধরে গাজায় হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। এর জবাবে বড় ধরনের হামলা হতে পারে, এমন আশঙ্কায়ও অনেক ইহুদি সাইপ্রাসে চলে যাচ্ছেন।
দ্বীপরাষ্ট্র সাইপ্রাসকে নিরাপদ ‘স্বর্গরাজ্যে’ বলছেন ইউনিভার্সিটি অব নিকোশিয়ার ইতিহাস এবং রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক হুবার্ট ফাউস্টম্যান। কিন্তু সিরিয়া এবং লেবানন থেকে যদি শরণার্থীরা এখানে আসেন তাহলে পরিস্থিতি বদলে যেতে পারে বলে মনে করেন তিনি। এখানে সংকট তৈরি হতে পারে।
গত কয়েক সপ্তাহে শুধু ইসরায়েলিরাই সাইপ্রাসে যাননি, গিয়েছেন অন্যান্য দেশের নাগরিকরাও। সাইপ্রাসের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কনস্তান্তিনোস কম্বোসের ধারণা, সংঘাতের কারণে লেবাননসহ এ অঞ্চলের এক লাখের বেশি মানুষ সাইপ্রাসে প্রবেশ করেছে।