ভ্যাজাইনাল ইচিনেস এর লক্ষণগুলি কী? কী?

Published By: Khabar India Online | Published On:

সব বয়সের মহিলাদের মধ্যে একটি সাধারণ সমস্যা ভ্যাজাইনা/যোনিপথের ইচিনেস। অস্বস্তিকর এবং কষ্টদায়ক উভয়ই হতে পারে। একজন মহিলার সামগ্রিক সুস্থতা এবং জীবনের মানকে প্রভাবিত করে। জরায়ু মুখ বা ভ্যাজাইনাল ইচিনেস সাধারণত নানা রকম ইনফেকশনের জন্য হয়।

একে সামগ্রিক ভাবে ভ্যাজাইনাইটিসও বলে। এর জন্য সাদা স্রাব, ইচিনেস এবং ব্যথা হয়।

মেনোপজের পরে ইস্ট্রোজেনের মাত্রা কমে যাওয়া।

সাধারণ ইচিনেসঃ

সাধারণত ভ্যাজাইনা এবং তার আশেপাশে ইচিনেস হয়।
নির্দিষ্ট স্থানের ইচিনেসঃ

ইচিনেস ভ্যাজাইনা এর নির্দিষ্ট স্থানেও হতে পারে-ভালভা, ল্যাবিয়া বা পেরিনিয়ামে।

ভ্যাজাইনাইটিসঃ
জরায়ু মুখ বা ভ্যাজাইনাল ইচিনেস এর লক্ষণ এবং উপসর্গ

ইচিনেসঃ

সাধারণ ও সুস্পষ্ট লক্ষণ হল ভ্যাজাইনাল ইচিনেস।

লালচে ফোলা ফোলাঃ
আক্রান্ত স্থান লাল সাথে ফোলা হতে পারে।
জ্বালাঃ

ইচিনেসের সাথে সবসময় বা প্রস্রাবের সময় জ্বালা হয়।
অতিরিক্ত স্রাবঃ

মহিলাদের স্বাভাবিকভাবেই মাসের বিভিন্ন সময় কিছুটা স্রাব নির্গত হয়। যদি ভ্যাজাইনায় কোনো ইনফেকশন হয় তখন ইচিনেসের পাশাপাশি স্রাবের পরিমান, রঙ এবং গন্ধ সব পরিবর্তন হতে পারে।
অস্বস্তিঃ

আরও পড়ুন -  আগে থেকেই শরীর জানান দেয়, হার্ট অ্যাটাক

ইন্টিমেটের সময় বা প্রস্রাবের সময় ইচিনেসের কারণে অস্বস্তি হতে পারে।
ভ্যাজাইনাল ইনফেকশন কারণঃ

ব্যাকটেরিয়াল ভ্যাজাইনাইটিস

কোনো কারণে ভ্যাজাইনাতে প্রাকৃতিকভাবে জন্মানো ব্যাকটেরিয়াগুলোর অতিরিক্ত বৃদ্ধি হলে ব্যাক্টেরিয়ার ভারসাম্য নষ্ট হয় গিয়ে ইচিনেস হয়।

ভ্যাজাইনাল ইনফেকশনের ঝুঁকিঃ

ইষ্ট ইনফেকশন
ক্যান্ডিডা অ্যালবিকানস নামক ছত্রাকের সংক্রমনের ফলে ইনফেকশন হতে পারে। ইষ্ট ইনফেকশন নামেও পরিচিত।

ট্রাইকোমোনিয়াসিস
ট্রাইকোমোনাস ভ্যাজাইনালিস নামক পরজীবীর সংক্রমনের ফলেও ভ্যাজাইনাতে ইচিনেস হয়। পরজীবী সাধারণত যৌন বাহিত। ইন্টার কোর্সের ফলে এই পরজীবী সংক্রামিত হয়।

এসটিডি
ক্ল্যামাইডিয়া এবং গনোরিয়ার মত যৌন বাহিত রোগের কারণেও ভ্যাজাইনায় ইচিনেস হয়।

অ্যালার্জি
সাবান, ডিটারজেন্ট, ল্যাটেক্স বা ব্যক্তিগত যত্নের পণ্য ব্যবহারে পার্শপ্রতিক্রিয়া কারণে ইচিনেস হতে পারে।
স্কিনে জ্বালাপোড়াঃ

আঁটসাঁট পোশাকের ঘর্ষনের ফলে ভ্যাজাইনার পাশে জ্বালা যন্ত্রনা হতে পারে। অতিরিক্ত আর্দ্রতার ফলে বা অন্তর্বাস বেশিক্ষণ ভেজা থাকলে অথবা ঘর্ষণের জন্য ইচিনেস হতে পারে।
হরমোনের পরিবর্তনঃ

মেনোপজ, গর্ভাবস্থা বা হরমোন থেরাপির কারণে ভ্যাজাইনা শুষ্ক হয়ে যায়, এর কারনেও ইচিনেস হতে পারে।
স্কিন ডিজিজঃ

স্ক্লেরোসিস বা একজিমার মতো চর্ম রোগের কারণে ভ্যাজাইনার ইচিং হতে পারে।
ওষুধঃ

আরও পড়ুন -  দুটি ল্যাপটপ, ৩ টি বাইক, ৩ টি টোটো, ৩ টি গ্যাস সিলিন্ডার, মোবাইল ৪ টি ও ১৬ টি সাইকেল উদ্ধার করল পুলিশ

ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হিসেবে ইচিং হতে পারে। যেমন, জন্ম নিয়ন্ত্রন পিল, হরমোন থেরাপির ওষুধ ও কেমোথেরাপির ওষুধ ইত্যাদি।

ভ্যাজাইনাল ইনফেকশন ঝুঁকির কারণঃ

ভ্যাজাইনার চারপাশ ঠিকমত পরিষ্কার না করলে বা অতিরিক্ত পরিষ্কার করার কারণে যেমন-সাবান বা বিউটি প্রোডাক্ট ব্যবহার করলে ভ্যাজাইনার স্বাভাবিক উপকারি জীবাণুর ভারসাম্য নষ্ট করে দেয়। এই জন্য ইনফ্লামেশন বা প্রদাহ হয়ে চুলকানি হয়।

আনপ্রটেক্টেড ইন্টারকোর্সের কারণে এসটিডি ছড়ায়। এর জন্য ভ্যাজাইনাল ইচিনেস অথবা ঘা হতে পারে। গর্ভাবস্থায় শরীরে হরমোনের পরিবর্তনের ফলে অনেক সময় মহিলাদের ভ্যাজাইনাল ইচিনেস বৃদ্ধি পেতে থাকে। অ্যান্টিবায়োটিকের অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার ভ্যাজাইনাল ব্যাকটেরিয়ার ভারসাম্যকে নষ্ট করে, যার কারনে ইষ্ট ইনফেকশন বৃদ্ধি পেতে পারে। ডায়াবেটিস অনিয়ন্ত্রিত থাকলে যে কোনো ধরনের ইনফেকশনের সারতে সময় লাগে।

ভ্যাজাইনাল ইচিনেসের চিকিৎসাঃ

ইচিনেসের কারণের উপর নির্ভর করে চিকিৎসা শুরু করতে হয়। রোগ নির্ণয় এবং চিকিৎসার জন্য অবশ্যই একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। ব্যাক্টেরিয়াল সংক্রমনের জন্য এন্টিবায়োটিক এবং ইষ্ট ইনফেকশনের জন্য অ্যান্টি ফাঙ্গাল জাতীয় ঔষধ ব্যবহার করা হয়। আবার কিছু ক্ষেত্রে স্টেরয়েড জাতীয় ঔষধও ব্যবহার করা যেতে পারে। মুখে খাবার ঔষধের পাশাপাশি আক্রান্ত স্থানে বা ইচিনেসের জায়গায় মলম বা ক্রিম দেয়া যায়। অব্যশই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

আরও পড়ুন -  Satyajit Ray Film Festival: ১২ই জানুয়ারি থেকে শুরু, সত্যজিৎ রায় চলচ্চিত্র উৎসব

প্রতিরোধে করণীয়ঃ

ভ্যাজাইনাল ইচিনেস প্রতিরোধ এবং ভ্যাজাইনাল হেলথ বজায় রাখতে হাইজিন বজায় রাখা। বাতাস চলাচল করে এমন অন্তর্বাস পরিধান করা উচিত। আর্দ্রতা এবং ঘর্ষণ কমাতে সুতির অন্তর্বাস ও ঢিলেঢালা পোশাক ব্যবহার করা দরকার।

প্রটেক্টেড ইন্টারকোর্স ভ্যাজাইনাল ইচিনেস প্রতিরোধে সহায়তা করতে পারে। ভ্যাজাইনা পরিষ্কার করতে হালকা, গন্ধহীন সাবান এবং জল ব্যবহার করতে হবে। ভ্যাজাইনাতে কোনো প্রসাধনী ব্যবহার করা যাবে না।

ডায়াবেটিস থাকলে তা নিয়ন্ত্রন রাখতে হবে।

জরায়ু মুখ বা ভ্যাজাইনাল ইচিনেস এর বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে। সঠিক যত্ন, স্বাস্থ্যবিধি ও ঝুঁকির কারণ সম্পর্কে সচেতন থাকলে ভ্যাজাইনাল ইচিনেস অনেক ক্ষেত্রে প্রতিরোধ করা যায়। সঠিক চিকিৎসার জন্য একজন চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করা দারকার।

ছবিঃ সংগৃহীত।