নিজস্ব সংবাদদাতা, কাকদ্বীপঃ বাতাবি লেবু দিয়ে দুর্গা প্রতিমা গড়ে নজির সৃষ্টি গৃহবধুর।
“জগতে মাতৃশক্তি একটা বিরাট শক্তি, কেউ তাকে লঙ্ঘন করতে পারেনা”। আর সেই শক্তির অন্যতম রূপ হচ্ছে দেবী দুর্গা। অপেক্ষা আর মাত্র কয়েকটা দিনের। কয়েকদিন পরে বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজো। ইতিমধ্যেই দুর্গাপুজোর প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। কথায় আছে “যে রাঁধে সে চুলও বাঁধে” প্রমাণ করলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকার একগৃহবধু। নিজে হাতে বাতাবী লেবু দিয়ে গড়ে তুললেন দুর্গা প্রতিমা।
গৃহবধূর নাম ব্রততি কামার বাগ। পেশায় বিউটিশিয়ান। গ্র্যাজুয়েশান করার পর স্বাবলম্বী হওয়ার জন্য বিউটিশিয়ান কোর্স করেন। তারপরেই সাত পাকে বাঁধা পড়েন। শ্বশুরবাড়ি আর্থিক অবস্থা খুব ভালো না হওয়ায় নিজেই সিদ্ধান্ত নেন পরিবারের পাশে দাঁড়াবেন বাড়িতে খুলে বসেন “ব্রততী বিউটি কর্নার” বাড়ির কাজ রান্নাবান্না সমস্ত সেরে সময় পেলে এলাকার বিয়ে বাড়ি থেকে শুরু করে মহিলাদের বিভিন্ন প্রসাধন দিয়ে সাজিয়ে তোলেন।
এমনকি বিউটি পার্লারের ট্রেনিং করিয়ে সার্টিফিকেট প্রদানের কাজা শুরু করেন। প্রতিদিন কত মানুষ সেজে ওঠেন তার হাতে। বাড়িতে কয়েকটি বাতাবি লেবুর গাছ আর লেবু দেখেই চিন্তাভাবনা শুরু করেন আর তার চিন্তাভাবনায় এবারে তিনি দুর্গা প্রতিমার রুপ দান করলেন বাতাবি লেবু দিয়ে। তারই চিন্তা ভাবনায় খুশি পরিবারের লোকজন।
ফেলে দেওয়া বিভিন্ন জিনিসপত্র দিয়ে প্রতিমা বানানোর কথা আগে শোনা গিয়েছে। কাকদ্বীপ ব্লকের গোবিন্দরাম পুর শিরিশমোড় এলাকার এই গৃহবধূ বাড়িতে বাতাবি লেবুর গাছে লেবু ঝুলতে দেখে মনে মনে ভাবতেন কিভাবে কি করা যায়, শারদীয় উৎসবের কথা মাথায় রেখে দুর্গা প্রতিমা গড়ার সংকল্প করেন, আর যেমন ভাবনা তেমনি কাজ, যদিও তিনি কোন পেশাদার শিল্পী নয় তবে চেষ্টা থাকলে উপায় হয় আস্তে আস্তে দুর্গা প্রতিমা তৈরি করে ফেললেন। তবে এই দুর্গা ঠাকুর আগামী পূজাতে পূজা করা হবে করবেন বলে মনস্থির করে ফেলেছেন। প্রতিমা দেখে এলাকার মানুষ বাড়িতে যেমন ভিড় করছেন তেমনি প্রশংসাও করছেন।
তবে ব্রততীর কোথায় জানা গিয়েছে সংসারের হাল ধরার জন্য বাড়িতে ব্রততী বিউটি কর্নার নামে কি বিউটি পার্লার তৈরি করেছেন যেখানে বিউটি পার্লারের হাতি কলমে প্রশিক্ষণ সহ সার্টিফিকেট ও প্রদান করা হয়,এবার প্রতিমা শিল্পী হিসাবে এলাকায় পরিচিত হতে চলেছেন। তার পাশে তার পরিবারের লোকজন এলাকার মানুষের আশীর্বাদ আছে। প্রতিদিনই এই গৃহবধূর বাড়িতে ভিড় জমাচ্ছে এলাকার মানুষেরা।