মানসিক ক্ষতির সম্পর্ক নেই ফেসবুক ছড়িয়ে পড়ার সাথেঃ অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়

Published By: Khabar India Online | Published On:

ফেসবুক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয়। বিশ্বের ৭২টি দেশের প্রায় ১০ লাখ ফেসবুক ব্যবহারকারীর ওপর গবেষণা করেছে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়।

গবেষণা বলছে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া ফেসবুকের কারণে মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি হচ্ছে এই ধারণার পক্ষে কোনো তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি। বিশ্বের ৭২টি দেশে ফেসবুক ব্যবহারকারীর ওপর ২০০৮ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত সমীক্ষা চালিয়েছে অক্সফোর্ড ইন্টারনেট ইন্সটিটিউট।

গবেষণার সাথে জড়িত অধ্যাপক এন্ড্রু সাবিলস্কি বলছেন, সাধারণভাবে একটা বিশ্বাস প্রচলিত আছে যে ফেসবুক ক্ষতিকর, তাদের গবেষণার ফলাফল এই ধারণাকে ভেঙে দিয়েছে। তিনি বলছেন বরং তারা দেখেছেন যে কোথাও কোথাও ফেসবুক হয়তো মানুষের মনের ওপর ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে।

এই গবেষণা প্রতিবেদনটি রয়্যাল সোসাইটি ওপেন সায়েন্স সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে। গবেষণাটি এমন এক সময়ে প্রকাশিত হলো যখন যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশ সোশ্যাল মিডিয়ার ক্ষতিকর দিক থেকে তাদের ব্যবহারকারীদের রক্ষা করার জন্য আইন প্রণয়নের কথা বিবেচনা করছেন।

আরও পড়ুন -  Esha Deol, মা হওয়ার পরও এখনও থামছে না, ফিটনেস এখনও অটুট!

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণাটি হয়েছে শুধু ফেসবুকের ওপর। গবেষণায় মেটার অন্যান্য প্ল্যাটফর্ম যেমন ইনস্টাগ্রামের দিকে নজর দেওয়া হয়নি। অধ্যাপক এন্ড্রু সাবিলস্কি গণমাধ্যমে বলেছেন, তাদের গবেষণায় যে প্রশ্নটির উত্তর খোঁজার চেষ্টা করেছে তা হচ্ছে, যেহেতু দেশে দেশে ফেসবুক ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ছে, তার ফলে সেসব দেশের জনগণের ভালো থাকার ওপর এর কেমন প্রভাব পড়ছে।

ফেসবুকের বিভিন্ন কনটেন্ট এর ব্যবহারকারীদের জন্য কী ধরনের ঝুঁকি তৈরি করছে এই গবেষণায় সেটা পরীক্ষা করে দেখা হয়নি। তিনি বলেন, সাধারণত মনে করা হয় যে মানসিকভাবে ভালো থাকার জন্য এটি খারাপ। কিন্তু আমরা যখন সব তথ্য একসাথে করলাম, সে তথ্য বিশ্লেষণ করা হলো, দেখা গেল বিষয়টা আসলে ঠিক এরকম নয়।

আরও পড়ুন -  বিয়ের তিন বছর পরেই সংসার ভাঙার মুখে, এই জনপ্রিয় টেলিভিশন অভিনেত্রীর জীবনে

আগেও তিনি কিশোর কিশোরীদের প্রযুক্তি ব্যবহার এবং তাদের মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার ওপর গবেষণা চালিয়ে এই দুটোর মধ্যে খুব সামান্যই সংযোগ খুঁজে পেয়েছিলেন।

গবেষকরা বলছেন, ফেসবুকের ওপর যে গবেষণাটি চালানো হলো তাতে জাতীয় পর্যায়ে এই মাধ্যমটি ব্যবহারের কী প্রভাব পড়ছে সেটা দেখা হয়েছে, তবে বিশেষ কোনো একটি গ্রুপের ওপর কী প্রভাব পড়ছে সেটা খতিয়ে দেখা হয়নি।

অধ্যাপক এন্ড্রু সাবিলস্কি বলছেন, কারো কারো ওপর ইতিবাচক প্রভাব রাখলেও, ফেসবুক হয়তো ছোট্ট কোনো গ্রুপের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে যার ওপর এই গবেষণায় আলোকপাত করা হয়নি। ফেসবুকের বিভিন্ন কনটেন্ট এর ব্যবহারকারীদের জন্য কী ধরনের ঝুঁকি তৈরি করছে সেটাও এই গবেষণায় পরীক্ষা করে দেখা হয়নি।

অধ্যাপক এন্ড্রু সাবিলস্কি বলেন, এসব দেখার জন্য আরো অনেক তথ্যের প্রয়োজন। কখনও কখনও অল্প কিছু লোক হয়তো সোশাল মিডিয়ার ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করছে, কিন্তু এবিষয়ে আমাদের কাছে কোনো তথ্য নেই।

আরও পড়ুন -  Shakib-Porimoni: পরীমণি কান্ডে ‌মুখ খুললেন বাংলাদেশের ‘নবাব’ শাকিব খান

গবেষণাটি করতে গিয়ে গবেষকরা ফেসবুক থেকে বিপুল পরিমাণ তথ্য সংগ্রহ করেছেন। তারা স্বাধীনভাবেই এই কাজটি পরিচালনা করেছেন, এজন্য ফেসবুকের মালিক মেটা থেকে তাদেরকে কোনো অর্থ দেওয়া হয়নি।

গবেষকদের ফেসবুক যেসব তথ্য দিয়েছে তার মধ্যে রয়েছে প্রতিটি দেশে ব্যবহারকারীর সংখ্যা ২০০৮ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত কিভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এই ব্যবহারকারীদের ১৩-৩৪ ও ৩৫ বছরের বেশি বয়সী এই দুটো গ্রুপে ভাগ করা হয়েছে।

সব তথ্য বিশ্লেষণ করে গবেষকরা দেখেছেন, সোশাল মিডিয়ার ক্রমবর্ধমান ব্যবহারের কারণে মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ার কোনো প্রমাণ তারা পাননি।

সূত্রঃ বিবিসি। ছবিঃ সংগৃহীত।