ওড়িশার রাজ্যের বালেশ্বরে ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা ২৮৮ ছাড়িয়েছে। এ ঘটনায় শনিবার সকাল ১০টা পর্যন্ত ৯০০ জনের অধিক আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
ওড়িশার ফায়ার সার্ভিস বিভাগের মহাপরিচালক সুধাংশু সারেঙ্গি এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
রাজ্য প্রশাসনের মুখ্য সচিব প্রদীপ জেনা এএফপিকে জানিয়ে বলেছেন, হতাহতদের হাসপাতালে নিয়ে আসতে ঘটনাস্থলে সক্রিয় আছে ২ শ’রও বেশি অ্যাম্বুলেন্স।
এই দুর্ঘটনাকে দুই শতাব্দীর সবচেয়ে খারাপ ও ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা বলা হচ্ছে। বেঁচে যাওয়া একজন বলেছেন, দুর্ঘটনাটি ঘটলে ১০ থেকে ১৫ জন আমার ওপর এসে পড়ে, সবকিছু এলোমেলো হয়ে যায়। আমি স্তূপের নীচে ছিলাম, আমার হাত ও ঘাড়ের পিছনে আঘাত পাই।
তিনি বলেন, যখন আমি ট্রেনের বগি থেকে বের হয়েছিলাম দেখলাম কেউ তাদের হাত হারিয়েছে, কেউ তার পা হারিয়েছে আবার কারও মুখ বিকৃত হয়েছে। কিছু জীবিত যাত্রীকে ধ্বংসস্তূপে আটকে পড়াদের উদ্ধার করতে ছুটে আসতে দেখা গেছে।
এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, ভারতের রেল মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অমিতাভ শর্মা জানিয়েছেন, শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে পশ্চিমবঙ্গের হাওড়া থেকে চেন্নাইগামী যাত্রীবাহী করমণ্ডল এক্সপ্রেসের কয়েকটি বগি লাইনচ্যুত হয়ে পাশের ট্র্যাকে পড়েছিল। হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস ওপাশ থেকে আসা লাইনচ্যুত করমণ্ডল এক্সপ্রেসের কোচগুলোকে ধাক্কা দেয়। এসময় আরও একটি মালবাহী ট্রেন সেখানে ছিল। ওই ট্রেনের সঙ্গেও করমণ্ডলের বগির ধাক্কা লাগে। এতে বেশ কয়েকটি যাত্রীবাহী বগি দুমড়ে-মুচড়ে গেছে।
এ ঘটনায় হতাহতের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। প্রত্যক্ষদর্শীদের তথ্য অনুযায়ী, স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গভীর রাতে ট্রেনের দরজা ভেঙে ধ্বংসাবশেষে আটকে পড়া যাত্রীদের উদ্ধার করছেন বিভিন্ন সংস্থা এবং দমকলবাহিনীর উদ্ধারকর্মীরা। উদ্ধারকাজে সেনাবাহিনীকেও নামানো হয়েছে। ঘটনাস্থলে দুই শতাধিক অ্যাম্বুলেন্স দেখা গেছে। ওড়িশার প্রতিবেশি রাজ্য থেকেও উদ্ধারকর্মীরা উদ্ধারকাজে যোগ দিয়েছেন।কেন্দ্রীয় সরকার দুর্ঘটনায় নিহত প্রত্যেকের পরিবারবর্গকে ১০ লাখ টাকা, গুরুতর আহতদের ২ লাখ ও অল্প আহতদের ৫০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়ার ঘোষণা করেছে।
সূত্রঃ বিবিসি, পিটিআই, এনডিটিভি। ছবিঃ সংগৃহীত