মণিপুরের রাজধানী ইমফল শহরে নতুন করে আবার সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে। গত ৩মে জাতিগত দাঙ্গায় মণিপুরে প্রায় একশ জন নিহত হয়েছিল।
সোমবার (২২ মে) বিকালে ইমফলের নিউ চেকন এলাকায় মেইতেই এবং কুকি সম্প্রদায়ের কয়েকজনের মধ্যে বাজারের জায়গা নিয়ে সংঘর্ষ বাধলে নতুন করে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণে আনে। সেনা তলব করে প্রশাসন। ইমফল শহরে কারফিউ জারি করা হয়। চেনতাই অঞ্চলে যে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়েছিল রাতে তা ছড়িয়ে পড়েছে শহরের অন্যত্রও।
দীর্ঘদিন ধরে মণিপুরের সমতলের বাসিন্দা মেইতেই সম্প্রদায়ের সঙ্গে কুকি ও নাগা জনগোষ্ঠীর নেতৃত্বাধীন গোষ্ঠীর বিরোধ চলছে।
মেইতেই সম্প্রদায় অনেক দিন ধরে তফসিলি উপজাতিদের তালিকাভুক্ত হওয়ায় দাবি জানিয়ে আসছে। উপজাতিদের জন্য মণিপুরে আইনগত বেশ কিছু সুযোগসুবিধা এবং কোটা রয়েছে।
এক সপ্তাহ ধরে চলা ওই সহিংসতায় প্রায় একশত জনপ্রাণ হারিয়েছেন। লাখো মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে আশ্রয় কেন্দ্রে যেতে বাধ্য হয়েছে। সম্পত্তির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
সংরক্ষিত বনভূমি থেকে কুকি গ্রামবাসীদের উচ্ছেদ নিয়ে উত্তেজনার কারণে আগে থেকেই সেখানে বিচ্ছিন্নভাবে সংঘর্ষ হচ্ছিল। এর আগে বেশ কয়েক দফা সংঘাত ছড়িয়েও পড়ে।
মণিপুরে মেইতেই সম্প্রদায় সংখ্যাগরিষ্ঠ। রাজ্যের মোট জনসংখ্যার ৬৪ শতাংশ তারা। রাজ্যের মোট ভূমির মাত্র ১০ শতাংশ তাদের দখলে আছে। কারণ, সেখানে আইন অনুযায়ী উপজাতি ছাড়া অন্যদের পাহাড়ে জমি কেনার অনুমতি নেই।
যদি সমতলের বাসিন্দা মেইতিদের তফসিলি উপজাতিভুক্তদের তালিকায় সংযুক্ত করা হয় তবে তারাও পাহাড়ে জমি কেনার সুযোগ পাবে। যেটিকে অন্যান্য উপজাতিগোষ্ঠি নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য হুমকি মনে করছে।
কুকিদের অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংয়ের নেতৃত্বে রাজ্যের ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার পরিকল্পিতভাবে তাদের পাহাড়ি বন এবং বাড়িঘর থেকে উচ্ছেদ করার লক্ষ্যে এসব করছে। বিজেপি সরকার মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধের কথা বলে ও আফিম চাষ বন্ধ করতে পাহাড়ে যে অভিযান চালাচ্ছে সেটাও তাদের ‘নিজভূমি থেকে উচ্ছেদের লক্ষ্যে চালাকি’ বলে অভিযোগ কুকিদের।
সূত্রঃ এনডিটিভি