৮ চিকিৎসাকর্মীকে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে বলে জানিয়েছেন আর্জেন্টিনার আদালত, ফুটবল মহাতারকা দিয়েগো ম্যারাডোনার মৃত্যুর জন্য।
অভিযোগ রয়েছে যাদের বিরুদ্ধে,তাদের মধ্যে রয়েছেন ম্যারাডোনার নিউরোসার্জন ও ব্যক্তিগত ডাক্তার লিওপোল্ডো লুক। মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ও মনোবিজ্ঞানী, দুজন ডাক্তার, দুজন নার্স ও তাদের বস। তারা সবাই তার মৃত্যুর দায় অস্বীকার করেছেন।
বার্তা সংস্থা এএফপি মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) আপিল আদালতের তথ্য অনুযায়ী এ তথ্য জানিয়েছেন।
মাদকে আসক্ত থাকা মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচারের পর ২০২০ সালের নভেম্বরে ৬০ বছর বয়সে মারা যান ম্যারাডোনা। অস্ত্রোপচারের ২ সপ্তাহ পর তাকে রাজধানী বুয়েনস আইরেসে এক ভাড়া বাড়িতে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। মৃত্যুর সময় ধারণা করা হয়েছিল, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তিনি।
২০২১ সালে আর্জেন্টিনার সরকারি কৌঁসুলি ২০ মেডিকেল বিশেষজ্ঞের সমন্বয়ে ১টি প্যানেল গঠন করেন। প্যানেলটি জানিয়েছিল, যথাযথ চিকিৎসা এবং ওষুধ পেলে ম্যারাডোনার ‘বেঁচে থাকার সম্ভাবনা ছিল’।
২০২২ সালে নিউরোসার্জন লিওপোলদো লুক এবং মনস্তত্ত্ববিদ আগুসতিনা কসাচোভসহ এই ৮ অভিযুক্ত ব্যক্তি বুয়েনস আইরেসের উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত সান ইসিদ্রোর আদালতে ‘হত্যা মামলার’ বিরুদ্ধে আবেদন করেন। অভিযুক্তদের আইনজীবীরা যুক্তি দেন, তাদের বিরুদ্ধে ‘অনিচ্ছাকৃত হত্যার’ অভিযোগ আনা উচিৎ।
প্রাথমিক অভিযোগে চিকিৎসকদের দায়িত্বে অবহেলার কথা বলা হয়েছে। প্রয়োজনীয় সুযোগ সুবিধা নেই, এটা জানা সত্ত্বেও এরকম গুরুতর একজন অসুস্থ ব্যক্তিকে বাড়িতে রেখে ‘বেপরোয়াভাবে’ চিকিৎসা দেয়ার অভিযোগের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে।
ম্যারাডোনার আইনজীবী মারিও বউড্রি বলেন, কারণটা দেখার সাথে সাথে আমি বললাম এটা হত্যাকাণ্ড। আমি দীর্ঘ সময় ধরে লড়াই করেছি, এ পর্যায়টি সম্পন্ন করে আমরা এখানে এসেছি।
অভিযোগ প্রমাণিত হয়, তবে আর্জেন্টিনার পেনাল কোড অনুযায়ী এ অপরাধে অপরাধীদের আট থেকে ২৫ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে। যদিও বিচারের তারিখ এখনও নির্ধারণ করা হয়নি।
ডিয়েগো ম্যারাডোনাকে সর্বকালের সেরা ফুটবলারদের একজন হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বিখ্যাত ‘হ্যান্ড অফ গড’ গোল করে আর্জেন্টিনাকে বিশ্বকাপ এনে দিয়েছিলেন।
আন্তর্জাতিক ক্যারিয়া শেষে ম্যারাডোনা মাদকে আসক্ত হয়ে যান। ১৯৯১ সালে ড্রাগ টেস্টে পজিটিভ আসার কারণে ১৫ মাসের জন্য ফুটবল থেকে নিষিদ্ধও করা হয়েছিলো।
ছবিঃ সংগৃহীত