সেই মাহেন্দ্রক্ষণ প্রায় ছয় মাস পরে। পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও অর্পিতা মুখোপাধ্যায় একে অপরকে গুগল মিটে একসঙ্গে দেখলেন। এই প্রথমবার আদালতের ভিতরে ভার্চুয়ালি কানেক্ট করা হলো দুজনকে। একদিকে রয়েছে আদালতের ছবি ও অন্যদিকে দেখা গেল দুজনকে। বাঁদিকে উপরের কোনায় হলুদ কুর্তি পরে বসে রয়েছেন অর্পিতা মুখোপাধ্যায়। নিচের দিকে হাফ হাতা জামা পরে পার্থ চট্টোপাধ্যায়। শুনানি চলছে ভরপুর কোর্টে, অপা তখন মজে রয়েছেন নিজেদের মধ্যেই।
তখন দুপুর ২:৫০। স্ক্রিনে একসাথে ভেসে উঠলো পার্থ এবং অর্পিতার মুখ। একে অপরকে দেখার পরে কিছুটা শান্তি পেলেন দুজনেই। লাজুক হাসি হেসে জিজ্ঞাসা করলেন, ভালো আছো? ইশারায় দুজনেই বললেন, ভালো আছি। তখন ঘড়ির কাটায় ২:৫৪। পার্থ, অর্পিতাকে ইশারা করে জানতে চান, খেয়েছ কিনা! অর্পিতা জানালেন, খেয়েছেন তিনি। অর্পিতা পার্থকে জিজ্ঞাসা করেন, শুনতে পাচ্ছ? পার্থ ইশারাতেই রিপ্লাই দেন, না। একই প্রশ্ন পার্থ করেন অর্পিতাকেও। অর্পিতা যে শুনতে পাচ্ছেন না, সেটাও ইশারা করে বুঝিয়ে দিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায় কে। পার্থ অর্পিতার দিকে তাকিয়ে জিভ বার করে অঙ্গভঙ্গিমা করতে হেসে ফেললেন অর্পিতা।
কোর্ট যখন হচ্ছে।
৩:০৮ মিনিট নাগাদ পার্থ চট্টোপাধ্যায় নিজের নীল রঙের হাফ হাতা খাটো ঝুলের পাঞ্জাবি অর্পিতার উদ্দেশ্যে দেখিয়ে বলেন ভালো লাগছে কিনা। অর্পিতা সেখানে মাথা নেড়ে ভালোলাগার ইঙ্গিত দেন। তিনটে দশ মিনিট নাগাদ অর্পিতা পার্থ চট্টোপাধ্যায় কে ইশারায় প্রশ্ন করেন, তিনি চা খেয়েছেন কিনা। পার্থ বুকের বাঁদিকে হাত রেখে কিছু একটা লেখার চেষ্টা করেন। তাতেও দুজনের হাসির বিনিময় হয়। ৩০ সেকেন্ডের জন্য হঠাৎ পার্থ স্ক্রিন থেকে উধাও হয়ে যান। তখন হঠাৎই অর্পিতার মুখে চঞ্চল ভাব। পার্থ ফিরতে তিনি আবার জিজ্ঞেস করেন, উধাও কেন হয়ে গিয়েছিলেন। তার জবাবে পার্থ বলেন, চা খাচ্ছিলেন।
তিনটে সতেরো মিনিট নাগাদ, অর্পিতা নিজের চুলের গোছা সামনে আনেন। পার্থর মুখে তখন একটা আলগা হাসি। পার্থর গোঁফ দেখে ভালো লাগছে সেটাও জানান অর্পিতা। মশা কামড়াচ্ছে, সেটাও দেখেন। এরপর ৩: ৩০ মিনিট নাগাদ দুজনের মধ্যে একটু ইশারা বিনিময় হয়। এরপর ঠোঁট দেখিয়ে পার্থকে কিছু একটা বলার চেষ্টা করেন অর্পিতা। পার্থ ইশারায় বলেন, মাথা কি খারাপ হয়ে গিয়েছে? বেলা সাড়ে তিনটা নাগাদ যখন মানিক বলতে শুরু করেন, তখন আবার দুজনে কোর্টের দিকে নজর দেন। কোর্ট যখন মুলতবি হচ্ছে, তখন পার্থ কিছু একটা বলতে চাইছিলেন অর্পিতাকে। অর্পিতাকে উদ্দেশ্য করে তিনি হাত দেখান। অর্পিতাও কিছু একটা লেখার চেষ্টা করছিলেন।
ফাইল ছবি