রাজধানী দিল্লি বর্ষবরণের রাতে এক ভয়াবহ ঘটনার সাক্ষী রইল। দিল্লির সুলতানপুরি এলাকায় রবিবার ভোরে একটি স্কুটার নিয়ে যাচ্ছিলেন অঞ্জলি নামে এক তরুণী। সেই সময় পিছন থেকে একটি গাড়ি ধাক্কা মারে তাকে।
তরুণী গাড়ির নিচে আটকে থাকা অবস্থাতেই গাড়িটি কয়েক কিলোমিটার দূরে পাড়ি দেয়। পথেই মৃত্যু হয়। কাঞ্চাওয়ালা এলাকায় তরুণীর দেহটি গাড়িটি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে যায়।
সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, মঙ্গলবার অঞ্জলির দেহের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। রিপোর্টে তার গোপনাঙ্গে কোনও আঘাতের চিহ্ন মেলেনি। এখনও তদন্ত সম্পূর্ণ হয়নি বলে জানিয়েছে দিল্লি পুলিশ।
দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, ময়নাতদন্তের রিপোর্টে অঞ্জলির দেহে গভীর আঘাতের চিহ্ন মিলেছে। হাতে, পায়ে ও পিঠে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। দীর্ঘ ১২ কিলোমিটার গাড়িতে নিচে হেঁচড়াতে হেঁচড়াতে যাওয়ার ফলে হয়েছিল। তরুণীর মা যে যৌন হেনস্থার অভিযোগ এনেছিলেন, এখনও কোনও প্রমাণ মেলেনি।
ময়নাতদন্তের রিপোর্টে অঞ্জলির গোপানঙ্গে আঘাতের চিহ্ন মেলেনি। সোয়াব নমুনা এবং তার প্যান্টের টুকরো সংরক্ষণ করা হয়েছে এবং ফরেন্সিক তদন্তের পরই এই বিষয়ে স্পষ্ট তথ্য পাওয়া যাবে বলে দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে।
তরুণীর মৃত্যুর ঘটনায় অভিযুক্ত ৫ জনই গ্রেপ্তার। গাড়ির চাকায় কিছু একটা আটকে রয়েছে বলে বুঝতে পেরেছিল ওই গাড়ির চালক দীপক কুমার। সেকথা পুলিশের কাছে সে স্বীকারও করেছে। ঘটনার সময় দীপকের সঙ্গে গাড়িতে ছিল অমিত খান্না, মনোজ মিত্তলস কৃশান ও মিঠুন। তারা মদ্যপ ছিল বলেও পুলিশি জেরায় স্বীকার করেছে।
কাঞ্চাওয়ালার জোন্তি মোড়ে গাড়িটি মোড় ঘোরার সময় স্থানীয় কয়েকজন ওই তরুণীকে দেখতে পান। তার যখন দেহ উদ্ধার করা হয়, তখন তরুণীর দেহে পোশাক ছিল না। ফলে তাকে যৌন হেনস্থা করা হয়েছে অভিযোগ তুলে দেহ নিতে অস্বীকার করেন তরুণীর মা।
পুলিশি তদন্তে উঠে এসেছে ওই তরুণী ও তার বান্ধবী দুর্ঘটনার রাতে এক বন্ধুর জন্মদিনের পার্টিতে হোটেলে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে রাত ২ টার সময় বাড়ি ফিরছিলেন। স্কুটারে একা ছিলেন না অঞ্জলি। সঙ্গে ছিলেন তার সেই বান্ধবীও। মারুতি সুজুকি স্কুটারে ধাক্কা মারার মুহূর্তে স্কুটার থেকে পড়ে যান অঞ্জলি। সেই সময় গাড়ির নীচে আটকে যায় তার দেহ। সঙ্গে আহত হন অঞ্জলির বান্ধবীও। ভয় পেয়ে তিনি সেই দুর্ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান।
ছবিঃ সংগৃহীত