পুলিশের হেফাজতে মারা যাওয়া তরুণী মাহসা আমিনির মৃত্যুর প্রথম খবর দেয়া দুই সাংবাদিক নিলুফার হামেদি ও এলাহে মোহাম্মদীকে সিআইএ এজেন্ট হিসাবে চিহ্নিত করেছে ইরান।
দুই সাংবাদিকই বর্তমানে ইরানের কুখ্যাত এভিন কারাগারে বন্দি রয়েছেন।
শনিবার ইরানের গোয়েন্দা মন্ত্রণালয় এবং ইসলামিক বিপ্লবী গার্ডের গোয়েন্দা সংস্থার এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, উভয় নারীকে বিদেশী মিডিয়ার খবরের প্রাথমিক উৎস হিসেবে অভিযুক্ত করা হয়েছে, বিশেষ করে হামেদিকে। বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে, হামেদি একজন সাংবাদিক হওয়ার ভান করেছিলেন এবং আমিনির পরিবারকে তাদের মেয়ের মৃত্যুর তথ্য প্রকাশ করতে বাধ্য করেছিলেন।
হামেদি প্রথম সাংবাদিক যিনি সেই সময়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আমিনীর ছবি শেয়ার করেছিলেন। হামেদির ছবি তেহরানে বিক্ষোভের প্রথম তরঙ্গ শুরু করে।
মোহাম্মদী, যিনি ২২শে সেপ্টেম্বর গ্রেপ্তার হন, তার নিজের শহর সাক্কেজে আমিনির অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া থেকে রিপোর্ট করার জন্য বিদেশে একজন বিদেশী এজেন্ট হিসাবে প্রশিক্ষণ নেয়ার অভিযোগ রয়েছে।
এছাড়াও বিবৃতিতে, ইরানের সরকার সিআইএ, মোসাদ এবং অন্যান্য পশ্চিমা গোয়েন্দা সংস্থাকে গণবিক্ষোভের জন্য দায়ী করেছে। বিবৃতিতে দুই সাংবাদিকের বিদেশ ভ্রমণ এবং গুপ্তচর সংস্থার প্রশিক্ষণ নেয়ার বিষয়ে কোনো প্রমাণ দেয়া হয়নি।
দুটি গোয়েন্দা সংস্থা আরও অভিযোগ করেছে, যুক্তরাষ্ট্র প্রতি বছর বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ করে ইরানের ওপর নজরদারিতে এবং তাদের মানবাধিকার কার্যক্রম এবং গণতন্ত্রের প্রচারের আড়ালে পশ্চিমা নেটওয়ার্কগুলির সাথে সংযুক্ত করে।
বিবৃতিটি ইরানি মিডিয়া জুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়েছে, যারা আগামী দিনে আরও নিপীড়নের আশঙ্কা করছে। এক মাস আগে বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পর থেকে ৪০ জনেরও বেশি সাংবাদিককে আটক করা হয়েছে।
ইরানের একটি প্রকাশনার একজন প্রিন্ট সাংবাদিক বলেছেন, তারা আমাদের নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং আমাকে বিদেশী সংবাদদাতাদের সাথে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। আমি আমার সেলফোনে বিদেশ থেকে কল পেয়েছি এবং তারা যদি আমার ফোন রেকর্ড পর্যবেক্ষণ করে এবং দেখে যে পশ্চিম থেকে কেউ কল করছে, এমনকি যদি সে একজন বন্ধুও হয়, তবে এটি একটি বিশাল ঝুঁকি হবে।
সূত্রঃ এএফপি, ইয়ন। ফাইল ছবি।