ইউক্রেনের বিদ্যুৎকেন্দ্র লক্ষ্য করে বড় ধরনের হামলা শুরু করেছে রাশিয়া। রবিবার দাবি করা হয়েছে কিয়েভের পক্ষে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদামির জেলেনস্কি জানিয়েছেন, সে দেশের বিদ্যুতের স্থাপনাগুলো লক্ষ্য করে বড় ধরনের হামলা শুরু করেছে রাশিয়া। তিনি বলেন, এবার সারা দেশজুড়ে বিশাল আকারে হামলা শুরু করা হয়েছে। ইউক্রেনের কেন্দ্রীয় এলাকা, পশ্চিম, দক্ষিণ ও পূর্বের অঞ্চলগুলোতে রাশিয়া হামলা চালাচ্ছে। ফলে দেশের প্রায় ১৫ লাখ মানুষ বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়েছে বলে কিয়েভ জানিয়েছে।
জেলেনস্কি জানিয়েছেন, শনিবার ৩৬টির বেশি ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন ছুড়েছে। রাশিয়ার এরকম ব্যাপক হামলা সত্ত্বেও ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর অগ্রযাত্রা ব্যাহত হবে না তিনি দাবি করেছেন।
শনিবার একটি ভিডিও বার্তায় জেলেনস্কি বলেছেন, এখনো আমাদের কাছে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন শতভাগ ঠেকানোর মতো প্রযুক্তিগত সক্ষমতা নেই। আমি নিশ্চিত, মিত্রদের সহযোগিতায় আস্তে আস্তে সেই ক্ষমতা আমাদের হবে।
ইউক্রেনের জাতীয় বিদ্যুৎ সরবরাহ কর্তৃপক্ষ ইউক্রেনারগো জানিয়েছে, গত মাসে রাশিয়ার বোমা হামলায় বিদ্যুৎ অবকাঠামোর যতটা ক্ষতি হয়েছিল, এবার তার চেয়ে অনেক বেশি ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে।
ডেপুটি মেয়র সের্হাই কিরাল বিবিসিকে বলেছেন, রাশিয়ার উদ্দেশ্য হচ্ছে শীতকালের আগেই ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো ধ্বংস করে দেয়া ও যুদ্ধক্ষেত্রের বাইরে যুদ্ধ ছড়িয়ে দেয়া।
নিউজআওয়ার রেডিওকে তিনি বলেছেন, ইউক্রেনের সৈন্যরা যুদ্ধক্ষেত্রে যত বেশি সাফল্য পাচ্ছে, ঘরবাড়িতে থাকা সাধারণ মানুষজনের জন্য পরিস্থিতি কঠিন হয়ে উঠছে, কারণ বেসামরিক মানুষজনকে লক্ষ্যবস্তু করার জন্য রাশিয়া সবকিছুই করছে। সেই সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোগুলো লক্ষ্য করে হামলা করছে।
শুক্রবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদামির জেলেনস্কি দাবি করেছিলেন, খেরসন অঞ্চলের হাইড্রোইলেকট্রিক একটি বাঁধে মাইন স্থাপনের পরিকল্পনা করছে রাশিয়া। ওই বাঁধ এখন রুশ সৈন্যদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। জেলেনস্কি বলেন, কাখোভকা নামের ওই বাঁধটি ধ্বংস করা হলে লাখ লাখ মানুষ বন্যার ঝুঁকিতে পড়বে । তবে বাঁধ ধ্বংসের পরিকল্পনা নাকচ করে রাশিয়া বলছে, বরং ইউক্রেন সেটি লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করছে।
উল্লেখ্য, খেরসন অঞ্চলে যেসব এলাকা এখন আংশিকভাবে রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, সেসব এলাকায় চলাচলের জন্য এই বাঁধটি রাশিয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। দানিপার নদীর ওপর এই বাঁধটি রয়েছে।
গত সেপ্টেম্বর মাসে জাতিসংঘ বলেছে, তারা এর মধ্যেই গ্রহণযোগ্য যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ পেয়েছে যে, রাশিয়ার নিয়ন্ত্রিত এলাকা থেকে ইউক্রেনের শিশুদের চলে যেতে বাধ্য করা হয়েছে। জাতিসংঘে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত ভাসিলি নেবেনযিয়া বলেছেন, এই ধরণের অভিযোগের কোন সত্যতা নেই।
ইউক্রেনের সৈন্যবাহিনী জানিয়েছে, শনিবার খেরসন এলাকার আরও দুটি গ্রামের দখল ছেড়ে চলে গিয়েছে রাশিয়ার সৈন্যরা। এই দাবি নিরপেক্ষভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি।
সীমান্তবর্তী বেলগোরোদ অঞ্চলের স্থানীয় গভর্নর জানিয়েছেন, ইউক্রেনের বোমায় দুজন নিহত হয়েছে।
সূত্রঃ বিবিসি। ছবিঃ সংগৃহীত।