ইরাকের নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে আবদুল লতিফ রশিদের নির্বাচনের মধ্য দিয়ে কয়েক মাস ধরে চলা রাজনৈতিক অচলাবস্থার অবসান ঘটেছে। বৃহস্পতিবার পার্লামেন্টে তার নির্বাচনের পর, রশিদ অবিলম্বে ইরাকের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মোহাম্মদ শিয়া আল-সুদানির নাম ঘোষণা করেন।
ইরাকের পার্লামেন্টে ইরান সমর্থিত শিয়াদের বৃহত্তম রাজনৈতিক জোটের নেতা হিসেবে প্রধানমন্ত্রী পদে আল–সুদানিকে মনোনীত করা হয়েছে। শক্তিশালী শিয়া নেতা মুকতাদা আল-সদর দ্বারা প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। যার নেতৃত্বাধীন জোট গত বছরের অক্টোবরের নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছিল কিন্তু পরে সরকার গঠনে অক্ষমতার কারণে সংসদ থেকে প্রত্যাহার করে নেয়।
উল্লেখ্য, পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে নতুন সরকার গঠন করতে হবে আল–সুদানিকে। একই সঙ্গে তাকে ইরাকের পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে হবে। এটি তার জন্য কঠিন হবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে।
গত ২৫ জুলাই শিয়াদের বৃহত্তম রাজনৈতিক জোটে আল-সুদানির মনোনয়ন গত বছরের নির্বাচনের পর রাজধানী বাগদাদে সবচেয়ে বড় বিক্ষোভের জন্ম দেয়। আল-সদর সমর্থকরা বাগদাদের ভারী সুরক্ষিত গ্রিন জোন লঙ্ঘন করে এবং দেশটির সংসদ প্রত্যাহারের দাবিতে ব্যপক বিক্ষোভ করে।
আল-সুদানী ১৯৭০ সালে দক্ষিণ ইরাকে জন্মগ্রহণ করেন। তার বয়স যখন ১০ বছর, তার বাবাকে ইরান-সমর্থিত ইসলামিক দাওয়া পার্টির সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে সাদ্দাম হোসেনের শাসনামলে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
পরে তিনি হোসেনকে পতনের আশায় ১৯৯১ সালে শিয়া বিদ্রোহে যোগ দেন। পুরো সময়কালে, যখন অনেকে ইরাক থেকে পালিয়ে অন্য দেশে আশ্রয় নেয়, তখন আল-সুদানী দেশেই থেকে যান।
২০০৩ সালে ইরাকে মার্কিন বাহিনী হামলা চালালে রাজনৈতিক উত্থান ঘটে আল–সুদানির। সাদ্দামের পতনের পর তিনি স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় সরকারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় ছিলেন।
২০০৪ সালে আল–সুদানি ইরাকের আমারাহ শহরের মেয়র ছিলেন। তিনি নিজ প্রদেশ মায়সানের গভর্নর হন। তিনি ২০১০ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত মানবাধিকার মন্ত্রী এবং ২০১৪ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত শ্রম ও সামাজিক বিষয়ক মন্ত্রীসহ নুরি আল-মালিকি এবং হায়দার আল-আবাদির সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে দায়িত্ব পালন করেন।
সূত্রঃ আল জাজিরা। ছবিঃ সংগৃহীত।