পৌষালী পালুই, জার্মানি, বার্লিনঃ (খবরইন্ডিয়াঅনলাইন )
প্রতিনিধি।
ভারতীয় রাষ্ট্রদূত পারভাথানেনি হরিশের মহাশয় দুর্গাপুজো উদ্বোধন করেছেন। বার্লিন সর্বজনীন দুর্গোৎসব কর্মসূত্রে বিদেশে থাকা বাঙালি আর কিছু মিস করুক না করুক, দেশের দুর্গাপূজো-কে খুব মিস করছি। মনে পড়ছে প্যান্ডেলে বসে বন্ধু বান্ধবদের সাথে অবিরল আড্ডা। বাঙালির এই আমেজ বজায় রাখতেই Ignite E.V.- এর উদ্যোগে আমরা সুদূর জার্মানির রাজধানী বার্লিনেও আয়োজন করেছি দুর্গাপূজো। ষষ্ঠীর দিনে বধন, অষ্টমীর সন্ধি পুজো থেকে দশমীর সিঁদুর খেলা, কিছুই বাদ যাবে না।
কিন্তু, বিদেশে এত কিছু হবে কি করে? বার্লিনে এই এত আয়োজন কি সম্ভব? ভাবছেন প্রতিমা কিভাবে আনা হবে? দশকর্মা কোথায় পাওয়া যাবে? পুরোহিতমশাই? জার্মানির নিয়ম কানুন? এসব এর কি হবে? চিন্তা নেই…. When there is a will, there is a way. দেবী প্রতিমা আনা হয়েছে কুমোরটুলি থেকেই। ইউরোপের কাস্টমস আর নিয়মের গণ্ডি পেরিয়ে, দশকর্মা সামগ্রীও আসছে ভারতবর্ষ থেকে। আর পুরুতমশাই Dusseldorf-এর।
পুজো হবে সব নিয়ম মেনেই। মোট কথা ষোলোআনা বাঙালিয়ানা বজায় থাকছে বার্লিনেও।
16ই জুলাই, বার্লিন এর শ্রী গণেশ হিন্দু মন্দিরে খুঁটি পূজো দিয়ে সূচনা হয়ে এই বছরের পূজো। তারপর Ignite টিম এর এই প্রচেষ্টায় যোগ দেন বার্লিনের বাঙালি তথা অবাঙ্গলিরাও। এক এক করে পূজো পরিচালনার কমিটি তৈরি হয়। কেউ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনে আবার কেউ সাংস্কৃতিক বিভাগে, কেউ বা আবার ভোগ এবং অতিথিদের পেট পুজোর ব্যাপারটায় রেখেছেন সতর্ক নজর। প্যান্ডেল গড়ে, থিমের পুজো না হোক, তবে জাকজমোক এর যাতে খামতি না থাকে তাই সাথে আছে ডিজাইনিং টিমও। একশো জনেরও বেশি বাঙালি, অবাঙালি মিলে আমাদের এই দল। আমাদের কেউ কলেজ পড়ুয়া, কেউ আবার চাকরিরত। যে যার কাজের ফাঁকেই সময়ে বার করে হাথ মেলাচ্ছে এই উদ্যোগ কে সফল করে তুলতে।
পুজোর পাঁচ দিনই থাকবে বিভিন্ন অনুষ্ঠান, যার মধ্যে অন্যতম হলো রবীন্দ্রনৃত্যনাট্য “চিত্রাঙ্গদা”. অষ্টমীর সন্ধি পূজোর পর মঞ্চস্থ হবে এই অনুষ্ঠান। থাকবেন জার্মানির গণ্যমান্য অতিথিরা।
এবার একটা অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপারে আলোকপাত করি। পেট পূজোরও ভরপুর ব্যবস্থা আছে। সকল অতিথির জন্যই থাকছে খিচুড়ি আর লাবড়া। পেট পূজো বাদে তো আবার বাঙালির কোনো অনুষ্ঠানই সম্পূর্ণ হয়না। সেই দিকে খেয়াল তো রাখতেই হবে। এই কার্যসিদ্ধি করতে আমাদের পাশে এসেছেন বার্লিনের পাঞ্জাবি ভাই বোনেরা। তাঁদের রেস্টুরেন্টের হেশেলেই তৈরি হবে পুজোর ভুরিভোজ।
এখন থেকেই বেশ পুজো পুজো ভাব বার্লিনে। অনেকেই দেশ থেকে অনিয়েছেন ধুতি-পাঞ্জাবি ও শাড়ি। চলছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মহড়াও। পূজোর প্রস্তুতি তুঙ্গে।
মোট কথা হলো, you can take a বাঙালি out of Bengal, but you can’t take Bengal out of a বাঙালি। তাই নাচে, গানে, আড্ডায়, আলাপে, সম্পূর্ণ দেশী ভাবেই উদযাপন করবো আমরা আমাদের গর্বের এই পূজো। আর শুধু বাঙালি নয়, Ignite- এর তরফ থেকে বার্লিন সর্বজনীন দুর্গোৎসবে, সাদর আমন্ত্রণ রইলো সকলের জন্য।