এক তরুণীর পুলিশ হেফাজতে মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ইরানে শুরু হওয়া বিক্ষোভ কঠোর দমন-পীড়নেও থামানো যায়নি। প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে চলা বিক্ষোভে অন্তত ৮৩ জনের প্রাণ গেছে বলে জানিয়েছে একটি মানবাধিকার সংস্থা।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে এই তথ্য পাওয়া গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বৃহস্পতিবার বেশ কয়েকটি শহরে বিক্ষোভ হয়েছে। কুর্দি নারী মাশা আমিনি (২২) ইরানের উত্তরপশ্চিমাঞ্চলীয় শহর সাকেজ থেকে তেহরানে গিয়েছিলেন। সেখানে হিজাব দিয়ে মাথা পুরোপুরি না ঢাকায় আইন ভাঙার অভিযোগে নীতি পুলিশ তাকে আটক করে।
পুলিশ বলছে, ডিটেনশন সেন্টারে হঠাৎ হার্ট ফেইলিওর হয়ে আমিনি পড়ে যান। তার পরিবার পুলিশের এই দাবি প্রত্যাখ্যান করে বলেছে, নীতি পুলিশের কর্মকর্তারা তাকে পিটিয়েছিল। হাসপাতালে তিন দিন কোমায় থাকার পর আমিনির মৃত্যু হয়।
মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ইরানজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ দেখা দেয়। মানুষ রাস্তায় নেমে হিজাব আইনের বিরোধিতা, নারী অধিকারের দাবিতে শ্লোগান দেয়।
নরওয়েভিত্তিক মানবাধিকার গোষ্ঠী ইরান হিউম্যান রাইটস টুইটারে বলেছে, ইরানের প্রতিবাদে শিশুসহ অন্তত ৮৩ জন নিহত হয়েছে।
কর্তৃপক্ষের কঠোর দমনপীড়নের মধ্যে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়তে থাকা সত্ত্বেও প্রতিবাদ অব্যাহত আছে। টুইটারে পোস্ট করা ভিডিওগুলোতে দেখা গেছে, রাজধানী তেহরান, কওম, রাশত, সানানদাজ, মাসজিদ-ই-সুলেইমান ও অন্যান্য শহরে বিক্ষোভকারীরা মোল্লাতন্ত্রের পতনের ডাক দিচ্ছে।
রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশনের খবরে বিরাট সংখ্যা ‘দাঙ্গাকারীকে’ গ্রেপ্তারের কথা বলা হয়েছে, বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।
অধিকার আন্দোলনকারী গোষ্ঠীগুলো জানিয়েছে, বহু আন্দোলনকারী, শিক্ষার্থী ও শিল্পীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ‘কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্ট’ টুইটারে জানিয়েছে, ২৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিরাপত্তা বাহিনীগুলো অন্তত ২৮ জন সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করেছে বলে তারা জানতে পেরেছে।
বৃহস্পতিবার জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, তিনি চান মাশা আমিনির মৃত্যুর ঘটনায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করুক।
ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি বলেছেন, ১৯৭৯ সালে ইসলামি বিপ্লব হওয়ার পর থেকে শত্রুভাবাপন্ন পশ্চিমা শক্তিগুলো ইরানের বিরুদ্ধে কাজ করে চলছে, অস্থিরতার পেছনেও কলকাঠি নাড়ছে। ছবিঃ সংগৃহীত।