বলিউডের বিখ্যাত কৌতুকশিল্পী রাজু শ্রীবাস্তব প্রয়াত হলেন।
বুধবার হাসপাতালেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন। গত আগস্ট মাস থেকে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন কৌতুকশিল্পী। দীর্ঘদিন ভেন্টিলেশনে মৃত্যুর সাথে লড়াই করেছেন শিল্পী। শেষপর্যন্ত শেষ রক্ষা হল না।
কানপুরের ছেলে রাজু শ্রীবাস্তব। ১৯৬৩’র ২৫’শে ডিসেম্বর জন্ম হয় তার। কানপুরের অন্যতম জনপ্রিয় কবি রমেশচন্দ্র শ্রীবাস্তবের ছেলে তিনি। বাবা নাম রেখেছিলেন সত্যপ্রকাশ শ্রীবাস্তব। ছোট থেকেই কানপুরবাসীর মাঝে ও নিজের ঘনিষ্ঠমহলে রাজু নামেই পরিচিত ছিলেন। কৌতুকশিল্পী হওয়ার ইচ্ছা ছিল মনে।
যে কোন মানুষকে নকল করার ক্ষমতা ছিল প্রবল। যখন তখন হাসিয়ে দিতে পারতেন। সেই সূত্র ধরেই অনেকেই তাকে সময় অসময়ে ডেকে নিতেন। তবে তার লক্ষ্য ছিল বলিউড। ইচ্ছা শক্তির জোরে নিজের সেই স্বপ্নও পূরণ করেছিলেন।
কৌতুকশিল্পী হওয়ার ইচ্ছাই তাকে কানপুর থেকে মুম্বাই শহরে টেনে নিয়ে এসেছিল। মুম্বাইতে এসেই সুযোগ পাননি তিনি। বেশ দীর্ঘসময় কষ্ট করতে হয়েছে রাজু শ্রীবাস্তবকে। ১৯৮৮’তে অনিল কাপুর ও মাধুরী অভিনীত ‘তেজাব’এ একটি ছোট্ট চরিত্রে অভিনয় করার সুযোগ পান রাজু। ‘ম্যানে পেয়ার কিয়া’তেও অভিনয় করতে দেখা গিয়েছে তাকে। একাধিক ছবিতে পার্শ্ব চরিত্রে দেখা গিয়েছিল।
রাজু শ্রীবাস্তব এর আসল জায়গা ছিল মঞ্চ। দর্শকদের সামনে ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড়িয়ে তাদের হাসানোর ক্ষমতা রাখতেন তিনি। বলিউডে স্ট্যান্ড আপ কমেডির ব্যাপারটা তাদের মত শিল্পীরাই আরো বেশি করে তুলে ধরেছিল সকলের সামনে। তাদের মধ্যে তিনি অন্যতম একজন ছিলেন।
জনপ্রিয় কমেডি শো ‘দ্যা গ্রেট ইন্ডিয়ান লাফটার চ্যালেঞ্জ’এর রানার্স আপ হয়েছিলেন রাজু শ্রীবাস্তব। এরপর থেকেই দর্শকদের মাঝে কৌতুকশিল্পী হিসেবে তার জনপ্রিয়তা আকাশ ছোঁয়া হয়। উল্লেখ্য, তিনি ‘দ্যা গ্রেট ইন্ডিয়ান লাফটার চ্যালেঞ্জ-চ্যাম্পিয়নস’এর ‘দ্যা কিং অফ কমেডি’র খেতাবও জিতেছিলেন রাজু। তার আবিষ্কৃত ‘গজধর ভাইয়া’ চরিত্রটি শুরু থেকেই পরিচিত সকলের কাছে।
১৯৯৩’তে শিখা শ্রীবাস্তবের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন তিনি। তাদের দুটি সন্তান অন্তরা ও আয়ুষ্মান। মাত্র ৫৮ বছর বয়সেই সকলকে কাঁদিয়ে হাসির যাত্রা শেষ হল তার।
‘বিজেপি’তে সক্রিয় কর্মী হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন। ‘স্বচ্ছ ভারত অভিযান’এরও গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ ছিলেন রাজু শ্রীবাস্তব।
হোটেলেরই জিমে শরীরচর্চা চালিয়ে যেতেন এই কৌতুকশিল্পী। শরীরচর্চা করার সময়ই বুকে ব্যথা নিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েছিলেন রাজু। তৎক্ষণাৎ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল তাকে। সেই থেকেই বেঁচে থাকার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছিলেন শিল্পী।