সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টার থেকে গুলিবর্ষণে কমপক্ষে ৭ শিশুসহ ১৩ জন নিহত, ১৭ জন আহত হয়েছে মিয়ানমারের একটি স্কুলে।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ও বাসিন্দাদের কথায়, সোমবার এই তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স ও আল-জাজিরা।
মিয়ানমারের মিজিমা এবং ইরাওয়াদ্দি নিউজ পোর্টালের প্রতিবেদন অনুসারে, সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারগুলি কেন্দ্রীয় সাগাইং অঞ্চলের লেট ইয়েট কোন গ্রামের একটি বৌদ্ধ বিহারে অবস্থিত স্কুলটিতে গুলি চালায়।
সংবাদ পত্রগুলোর খবরে বলা হয়েছে, কিছু শিশু গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই নিহত হয়, অন্যরা চিকিৎসার অভাবে মারা যায়।
স্কুলের প্রশাসক মার মার অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস নিউজ এজেন্সিকে বলেছেন, সেনাবাহিনীর এক ঘণ্টা ধরে কম্পাউন্ডে গুলি চালিয়েছিল। এক মিনিটের জন্যও থামেনি। আমরা যা করতে পারতাম তা হল বৌদ্ধ মন্ত্র উচ্চারণ করা।
নিরাপত্তার উদ্বেগের কারণে পরিচয় প্রকাশে অস্বীকৃতি জানিয়ে দুই বাসিন্দা টেলিফোনে রয়টার্সকে বলেছেন, সামরিক বাহিনী লাশগুলোকে ১১ কিলোমিটার দূরে নিয়ে যায় এবং কবর দেয়।
সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করা ছবিগুলি দেখা যায়, একটি স্কুল ভবনে বুলেটের গর্ত এবং রক্তের দাগসহ গোটা স্কুলটি ধংসস্তুপে পরিণত হয়ে রয়েছে।
সামরিক বাহিনী বলেছে, কাচিন ইন্ডিপেন্ডেন্স আর্মি, একটি বিদ্রোহী গোষ্ঠী এবং পিপলস ডিফেন্স ফোর্স (পিডিএফ), সশস্ত্র গেরিলাদের একটি সংগঠন যাকে জান্তা “সন্ত্রাসী” বলে ডাকে, মঠে লুকিয়ে ছিল এবং গ্রামটিকে ব্যবহার করে এলাকায় অস্ত্র পরিবহন করছিলো। হেলিকপ্টারে প্রেরিত নিরাপত্তা বাহিনী, পিডিএফ এবং কেআইএ লক্ষ্য করে বাড়ি এবং মঠের ভিতরে আক্রমণ করেছিল।
নিরাপত্তা বাহিনী জানিয়েছে, সংঘর্ষে কিছু গ্রামবাসী নিহত হয়েছে এবং আহতদের চিকিৎসার জন্য সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সশস্ত্র দলগুলি গ্রামবাসীদের মানব ঢাল হিসাবে ব্যবহার করার অভিযোগ এনেছে সেনাবাহিনী, বলেছে ১৬টি হাতে বানানো বোমা সহ অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
মায়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী ছায়া সরকার, যা জাতীয় ঐক্য সরকার (এনইউজি) নামে পরিচিত, স্কুলগুলিতে ইচ্ছাকৃত হামলার জন্য জান্তাকে অভিযুক্ত করেছে। এনইউজি ২০ জন ছাত্র ও শিক্ষকের মুক্তিরও আহ্বান জানিয়েছে যাদের বিমান হামলার পরে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।
সেভ দ্য চিলড্রেন-এর মতে, মিয়ানমারে ২০২১ সাল থেকে স্কুলে নথিভুক্ত সহিংস হামলার সংখ্যা বেড়ে ১৯০-এ দাড়িয়েছে। সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, সামরিক ও সশস্ত্র গোষ্ঠী উভয়ের ঘাঁটি হিসাবে স্কুলগুলির ব্যবহারও সারা দেশে বেড়েছে। ছবিঃ রয়টার্স।