শ্রীলঙ্কার সিংহল এবং তামিল জনগোষ্ঠী সাধারণত নিজ নিজ বাড়িতেই প্রাচীন রীতি মেনে নববর্ষ উদযাপন করে আসছে। কিন্তু এবারের আয়োজন ছিল ব্যতিক্রম। এ বছর সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের মধ্য দিয়েই নববর্ষ উদযাপন করেছে শ্রীলঙ্কার জনসাধারণ।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) ভোরে বহু মানুষের প্রতিবাদ সমাবেশে নতুন বছরের শুভ সূচনা করেন দিলানি জয়ারত্নে।
অর্থনৈতিক ধস নামায় বহু মানুষ সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন। এ বছর দিলানি ও তার পরিবারের সদস্যরা শ্রীলঙ্কার বাণিজ্যিক রাজধানী কলম্বোয় হাজির হয়েছেন। নববর্ষের দিন তারা সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে শামিল হয়েছেন।
দীর্ঘস্থায়ী বিদ্যুৎ বিভ্রাট, জ্বালানির তীব্র সংকট, খাদ্যপণ্যের দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যাওয়া ও হাসপাতালে ওষুধ সংকটসহ নানা কারণে শ্রীলঙ্কাজুড়ে কয়েক সপ্তাহ ধরে বিক্ষোভ কর্মসূচি চলছে।
আন্দোলনকারীদের একটাই দাবি, প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসেকে পদত্যাগ করতে হবে।
৩৮ বছর বয়সী জয়ারত্নে বৃহস্পতিবার সূর্যোদয়ের আগে স্বামী ও তার দুই সন্তানকে নিয়ে রওনা হন আন্দোলনে যোগ দিতে। এক ঘণ্টার বেশি সময় ভ্রমণ শেষে কলম্বোয় রাজাপাকসের কার্যালয়ের কাছে যেটি গোতাবায়ার গ্রাম নামে পরিচিত সেখানে বিক্ষোভ সমাবেশে পৌঁছান তারা।
তিনি বলেন, আমরা বাড়িতে বসে থাকতে পারি না। এই আন্দোলন রাজাপাকসেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করবে।
তার মতো আরও অনেকেই লাইন ধরে দাঁড়িয়ে আছেন সমাবেশস্থলে। সেখানে স্বেচ্ছাসেবীরা কাগজের প্লেটে চারকোণা আকারের ক্ষিরিভাত (নারকেলের দুধ ও চাল দিয়ে তৈরি করা), কলা, আচার ও বাটার কেক বিক্ষোভকারীদের হাতে তুলে দেন। নববর্ষের ঐতিহ্যবাহী এই খাবারটি বিক্ষোভের সমর্থনকারীরা সরবরাহ করেন।
আন্দোলনে সমর্থনকারী একজন বলেন, আমরা সাধারণত নতুন বছরের জন্য শুভ কামনা জানাই। এবার আমরা আন্দোলনের জন্য শুভ কামনা জানাচ্ছি।
প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে নববর্ষের শুভেচ্ছা বার্তায় বলেছেন, সম্প্রতি কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় যে সংকট সৃষ্টি হয়েছে সেটি ঠেকানো দেশের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।
ছবি: সংগৃহীত