দিনভর নাটকীয়তা, মধ্যরাতে সংসদের স্পিকার, ডেপুটি স্পিকারের পদত্যাগের পর অনাস্থা ভোটে হেরে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর পদ হারালেন ইমরান খান। পাকিস্তানের সাত দশকের কোন প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার মেয়াদ পূর্ণ করতে না পারার ইতিহাসের অংশ হলেন ইমরান খানও।
ক্রিকেট অধিনায়ক থেকে প্রধানমন্ত্রী হলেন যে ভাবে। যাত্রাটা নিতান্তই সহজ ছিল না। ইমরান খান সেটি করে দেখিয়েছেন। চলুন জেনে নেয়া যাক তার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার কথা। ১৯৫২ সালে লাহোরে এক পশতুন পরিবারে জন্ম ইমরান খানের। স্কুলের গন্ডি পেরিয়ে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে পাড়ি জমান যুক্তরাজ্যে। ইংল্যান্ড ও পাকিস্তানের হয়ে ম্যাচ খেলা শুরু ১৯৭১ সাল থেকে।
পাকাপাকিভাবে ক্রিকেট দলে নাম লেখান ১৯৭৬ সালে স্নাতক পাশের পর। তিনি ছিলেন পাকিস্তানের অন্যতম স্টাইলিশ ক্রিকেটার। অলরাউন্ড পারফরমেন্সে ১৯৯২ সালে দেশকে এনে দিয়েছেন বিশ্বকাপ।
ফ্যাশনেবল লাইফস্টাইল ও প্লে-বয় ইমেজের কারণে আন্তর্জাতিক মহলে বেশ জনপ্রিয় ছিলেন ইমরান খান। বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন একাধিকবার। ক্রিস্টিয়ান ব্যাকার, জেমিমা গোল্ডস্মিথ, রেহাম খানের সাথে বিচ্ছেদের পর সবশেষ ২০১৮ সাল থেকে সংসার করছেন বুশরা মনিকার সঙ্গে।
ক্রিকেট থেকে অবসরের পর সরকারের সমালোচনায় সরব হন ইমরান খান। ১৯৯৬ সালে গড়ে তুলেন নিজের দল তেহরিক ই ইনসাফ। ২০০২ সালে প্রথম ক্ষমতার স্বাদ পায় তার দল। একটি আসনে জয়ী হয়ে জায়গা করে নেন জাতীয় পরিষদে।
পারভেজ মোশাররফের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের অংশ হিসেবে ২০০৮ সালের নির্বাচন বয়কট করেন। এরপর ২০১৩ সালের নির্বাচনে বিপুল ভোট পেলেও, অধরা থেকে যায় প্রধানমন্ত্রীর গদি। তবে গণমাধ্যমের সমীক্ষায় জানা যায় দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনীতিক তিনি।
২০১৭ সালে ক্ষমতাসীন সরকারের দুর্নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামেন। সুপ্রিমকোর্টের আদেশে পতন হয় নওয়াজ শরিফের। ২০১৮ সালে নতুন করে নির্বাচন হলে, সবাইকে তাক লাগিয়ে ক্ষমতার মসনদে বসেন ইমরান খান। তবে মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগেই আজ (১০ এপ্রিল) হলো তার পতন।