বর্তমান প্রযুক্তির যুগে বেশিরভাগ মানুষেরই ল্যাপটপ ব্যবহার করে। বিভিন্ন কাজের জন্য এটি দরকারে হয়। এখন আপনি যখন এটি কিনবেন, শুরুতেই চিন্তা করে নিতে হবে ঠিক কোন কাজে ব্যবহার করবেন।
যদি ফটোসপের কাজ, অটোক্যাড, ভিডিও এডিটিং, ম্যাটল্যাব, কমসোল এসকল সফটওয়্যার ব্যবহার করতে হয় তাহলে অবশ্যই ভালো মানের প্রসেসর (ন্যুনতম কোর আই ফাইভ) এবং আট জিবি র্যাম আর সাথে গ্রাফিক্সকার্ড যুক্ত থাকতে হবে।
আর গেম খেলা অথবা খুব ভারী কাজ যেমন ইমেজ প্রসেসিং বা পরিসংখ্যানের বড় বড় গবেষণা জাতীয় কাজ করতে হয় তাহলে অবশ্যই ন্যুনতম কোর আই সেভেন প্রসেসর আর সাথে ১৬ জিবি র্যাম, এবং গ্রাফিক্স কার্ড সম্বলিত ল্যাপটপ কিনতে হবে।
এখন ল্যাপটপ নির্বাচন হয়ে গেলে দেখতে হবে প্রসেসরের ব্যাপার, বাজারে এএমডি, এবং ইন্টেলের দুই ধরণের প্রসেসর বেশ জনপ্রিয়।
লিনাক্স নির্ভর অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করলে অবশ্যই লক্ষ্য রাখতে হবে হার্ডওয়্যার যেন বিশেষভাবে উইন্ডোজের জন্য না হয়।
ল্যাপটপ কেনার সময় ল্যাপটপের স্ক্রিন মাপ ঠিকঠাক নিতে হবে, বাজারে ১১.৩, ১৩.৩, ১৫.৩ ইঞ্চি মাপের ল্যাপটপ পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে স্ক্রিন টাইপের দিকেও নজর রাখতে হবে। ফুল এইচডি ডিসপ্লে খুব পরিষ্কার ছবি দেখায়। পিক্সেল যত বেশি হবে ততো ভাল ছবি বা কনটেন্ট দেখা যাবে। তবে বেশি পিক্সেল ল্যাপটপের অসুবিধা হচ্ছে এগুলো ব্যাটারি খরচ বেশি। আরো একটা বিষয় দেখতে পারেন, সেটা হল মনিটর টাচ স্ক্রিন কিনা। অধিকাংশ ল্যাপটপ অবশ্য এখন এই সুবিধা যুক্ত করছে।
কি বোর্ড আর টাচ প্যাড দেখে নিতে হবে। অনেক কমদামি ল্যাপটপে কি বোর্ড ব্যাক লাইট থাকে না। ফলে অন্ধকারে কি বোর্ড দেখতে পাওয়া যায় না। একবার টাইপ করে দেখতে হবে, কি বোর্ড আরামদায়ক কি না। টাচ প্যাড বড় হলে ভালো, বড় মসৃন টাচ প্যাডে কাজ করতে আরাম।
আরও মাথায় রাখতে হবে ব্র্যান্ডের বিষয়টি। বাজারে এখন বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ল্যাপটপ রয়েছে। যেমন আসুস, ডেল, এইচপি, এসার, লেনোভো ইত্যাদি। আপনি যদি কোনও ভালো ব্র্যান্ডের ল্যাপটপ কিনতে চান তবে আপনি আসুস বা ডেল কিনতে পারবেন। এই দুটি ব্র্যান্ড ল্যাপটপের জগতে অত্যন্ত ভাল। ল্যাপটপের দাম আপনার কনফিগারেশনের উপর নির্ভর করবে।
ল্যাপটপের ওজন ল্যাপটপের স্ক্রিন আকারের উপর নির্ভর করে। ১১ থেকে ১২ ইঞ্চি ল্যাপটপগুলো সবচেয়ে হালকা বা সংকীর্ণ। এটির ওজন ১.১-১.৫ কেজি। ১৩ থেকে ১৪ ইঞ্চি ল্যাপটপটি বহনযোগ্যতা এবং ব্যবহারযোগ্যতার জন্য আদর্শ পছন্দ। এটির ওজন ১.৮ কেজিরও কম।
খেয়াল রাখতে হবে সিপিইউ বা প্রসেসরের বিষয়টিও। এটি হলো কম্পিউটারের মস্তিষ্ক। তাই ল্যাপটপ কেনার সময় আপনাকে কোন প্রসেসরটি গ্রহণ করা উচিত তা মনে রাখতে হবে। আপনার ল্যাপটপের পারফরম্যান্স এর উপর নির্ভর করবে। আজকালকার বাজারে দুই ধরনের প্রসেসর পাওয়া যায়। ইন্টেল এবং এএমডি। প্রযুক্তির ক্ষেত্রে এএমডি বর্তমানে ইন্টেলের চেয়ে অনেক এগিয়ে।
ল্যাপটপগুলোতে সাধারণত একটি অন্তর্নির্মিত গ্রাফিক্স কার্ড সংযুক্ত থাকে। তবে আপনি যদি গ্রাফিক্স বা ভিডিও সম্পাদনায় কাজ করেন বা হাই-এন্ড গেম খেলতে চান তবে আপনার গ্রাফিক্স চিপ লাগবে।.এটি বলা ভালো যে ল্যাপটপের কিছু অংশ পরিবর্তন করা যেতে পারে তবে গ্রাফিক্স কার্ডটি পরিবর্তন করা যায় না। সুতরাং আপনার যদি ডেডিকেটেড গ্রাফিক্স কার্ড / বাহ্যিক গ্রাফিক্সের প্রয়োজন হয় তবে আপনাকে কেনার সময় তা নিতে হবে।
এছাড়াও র্যাম, হার্ড ড্রাইভ, ব্যাটারি, পোর্ট, ওয়্যারলেস সংযোগ সুবিধা দেখে ল্যাপটপ কিনতে হবে।
বর্তমানে বাজারে ল্যাপটপ রয়েছে ২০,০০০ থেকে শুরু করে ৬ লাখ টাকা পর্যন্ত। আপনি কোন ধরণের বাজেট ল্যাপটপ চান তা আপনার উপর নির্ভর করে।