রবিবার সকালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। প্রায় ১ মাস আগে করোনা আক্রান্ত হয়ে মুম্বাইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সেখান থেকে আর বাড়ি ফেরা হল না কিংবদন্তির। হাসপাতালের চিকিৎসকদের টিম জানিয়েছেন, “ধীরে ধীরে লতা মঙ্গেশকরের অবস্থা খারাপের দিকে যাচ্ছিল। শেষ চেষ্টা করার জন্য লতাজিকে ভেন্টিলেশনে পাঠানো হলেও, কোনো লাভ হল না।” ৯২ বছর বয়সে কোভিড পরবর্তী অসুস্থতায় হারিয়ে গেলেন ‘সুরের সরস্বতী’ লতাজি।
১৯২৯ সালের ২৪ শে সেপ্টেম্বর একটি অত্যন্ত মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন লতা মঙ্গেশকর। মাত্র ৫ বছর বয়সে বাবার সাথে থিয়েটারে অভিনয় করতেন সুর সম্রাজ্ঞী। তবে তিনি বিভিন্ন জায়গাতে অভিনয় করলেও, তাঁর স্বপ্ন ছিল বড় গায়িকা হওয়ার। কিন্তু হঠাৎ করে গায়িকার ১২ বছর বয়সে বাবা মারা যান। সংসারের সমস্ত দায়িত্ব কাঁধে এসে পড়ে ছোট্ট লতাজির।
তখন থেকেই তিনি অর্থ উপার্জনের জন্য একাধিক হিন্দি এবং মারাঠি ছবিতে কাজ করতে শুরু করেন।
আপনারা জানলে অবাক হবেন যে, লতা মঙ্গেশকর প্রথমবার মঞ্চে গান গেয়ে ২৫ টাকা পারিশ্রমিক পেয়েছিলেন। ১৯৪২ সালে প্রথম তিনি মারাঠি ছবি ‘কিতি হাসল’ এ গান গেয়ে নিজের ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন। তারপর থেকে কোনোদিন পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি আর তাঁকে। গোটা জীবনে ৩০ টির বেশি ভাষাতে প্রায় ৩০ হাজার গান গেয়েছেন লতা মঙ্গেশকর। এই জন্য তিনি ভারতরত্ন পুরস্কারও পেয়েছেন।
লতা মঙ্গেশকরের ভক্ত যে শুধুমাত্র এই ভারত ভূখণ্ডে সীমাবদ্ধ এমনটি নয়। তাঁর জনপ্রিয়তার ব্যাপ্তি গোটা বিশ্বজুড়ে। ছোট্ট বয়স থেকে নিজের পরিবারের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়ে অক্লান্ত পরিশ্রম করে গোটা দেশবাসীর জন্য অসামান্য বিভিন্ন গানের উপহার দিয়েছেন তিনি। কিন্তু দায়িত্বের ফাঁকে নিজের সংসার জীবন করা সম্ভব হয়নি তাঁর। তিনি গানের মাধ্যেমে ভারতের অস্তিত্ব গোটা বিশ্বের মাঝে ছড়িয়ে দিয়েছেন।