সুমিত ঘোষ, মালদাঃ মুখ্যমন্ত্রীর মালদা সফরের মধ্যেই বিস্ফোরক রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা বর্ষিয়ান তৃণমূল নেতা কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরী। তৃণমূল করার অপরাধে জোর করে এক ব্যবসায়ীর দীর্ঘদিনের দোকান উচ্ছেদ করার প্রতিবাদে সরব প্রাক্তন মন্ত্রী। পুরনো দিনের তৃণমূল কর্মী হয়ে এই অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে থাকার অঙ্গীকার তার। এদিকে উচ্ছেদ হওয়া ব্যবসায়ীর পাশে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী দাঁড়ানোই অস্বস্তিতে মালদা মার্চেন্ট চেম্বার অব কমার্সের তিন পদস্থ কর্মকর্তা।
অভিযোগকারী ওই ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সৌমেন সরকার জানিয়েছেন, মালদা শহরের নেতাজি পুরো মার্কেট সংলগ্ন বোম্বে রোড এলাকায় তার একটি স্টেশনারি দোকান ছিল। সেই দোকান করার জন্য জেলার ব্যবসায়ী সংগঠন মালদা মার্চেন্ট চেম্বার অব কমার্সের তিন কর্তার বিরুদ্ধে পাঁচ লক্ষ টাকা জোর করে আদায় করার অভিযোগ তুলেছেন। এমনকি তৃণমূল দল করার জন্য ওই ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীকে রীতিমত হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। দাবিমতো টাকা না দিতে পারায় সেই দোকান বলপূর্বক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। প্রায় দু’মাস আগে ঘটে যাওয়া এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সেই সময় ইংরেজবাজার থানার অভিযোগ জানাতে গেলে সেটি গ্রহণ করা হয় নি বলে অভিযোগ সৌমেনবাবুর । এরপরই তিনি মালদা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন।
ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সৌমেন সরকারের অভিযোগ, প্রায় পঞ্চাশ বছর ধরে তিনি শহরের বোম্বে রোড এলাকায় পান সহ বিভিন্ন ধরনের ক্ষুদ্র সামগ্রীর দোকান করে আসছিলেন। গত অক্টোবর মাসে তার কাছে ব্যবসা করার জন্য পাঁচ লক্ষ দাবি করে জেলা ব্যবসায়ী সংগঠন মার্চেন্ট অব কমার্সের তিন কর্তা। সেই টাকা দিতে না পারায় তাকে রাজনৈতিক তকমা দিয়ে উচ্ছেদ করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। তৃণমূল করেন বলেও তাকে হুমকি দেওয়া হয় এই ঘটনার পরই সুবিচারের আশায় আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন জনৈক ব্যবসায়ী সৌমেন সরকার।
ওই ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর আইনজীবী মহম্মদ নওয়াজ সরিফ জানিয়েছেন, অন্যায় ভাবে তার মক্কেলকে দোকান থেকে উচ্ছেদ করে দেওয়া হয়েছে। এবং দোকানের কিছু সামগ্রী ও টাকা লুট করার ব্যাপারে মালদা আদালতে অভিযোগ দায়ের করেছেন সৌমেন সরকার । পুরো বিষয়টি এখন আদালতের মাধ্যমে পুলিশকে তদন্তের কথা জানানো হয়েছে।
এদিকে যার বিরুদ্ধে অভিযোগ সেই ব্যবসায়ী সমিতি সংগঠনের মধ্যে একজন মালদা মার্চেন্ট চেম্বার অব কমার্সের সম্পাদক জয়ন্ত কুন্ডু বলেন, পুরো বিষয়টি পরিকল্পনামফিক ভাবে করা হয়েছে। এই ঘটনার পিছনে যে ক’জনের নাম করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন । আসলে ওই ব্যক্তিকে কেউ বা কারা ষড়যন্ত্রমূলক ইন্ধন জোগাচ্ছে। মিথ্যা ভাবে মার্চেন্টের তিন কর্তার নাম দেওয়ার ক্ষেত্রে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করার কথা জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট সংগঠনের সম্পাদক জয়ন্ত বাবু। অন্যদিকে অসহায় ওই ব্যবসায়ীর পাশে দাঁড়িয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরী।