বাউন্ডারী লাইনের বাইরে দাড়িয়ে পুরো চেন্নাই ডাগআউট। ডোয়াইন ব্রাভো ইনিংসের শেষ বলটা করতেই মাঠে দৌড়ে এল সবাই। জাদেজা হাতটা উঠিয়ে জানিয়ে দিলেন তারা পেরেছে। সবাই উদযাপনে মত্ত, ধোনি তখনও শান্ত। অধিনায়ক হিসেবে নিজের ৩০০ তম ম্যাচটাকে স্মরণীয় করে রাখলেন চেন্নাই অধিনায়ক। চেন্নাই সুপার কিংসকে এনে দিলেন চতুর্থ আইপিএল শিরোপা। ড্রেসিং রুমে ঢোকার পূর্বে গ্লাভস জোড়া উঁচিয়ে হাতটা তুলে বিদায় জানালেন পুরো স্টেডিয়ামকে। তৃতীয়বারের মতো শিরোপা জেতার লক্ষ্যে মাঠে নেমে ভুলে যাওয়ার মতো দিন অতিবাহিত করেছেন কলকাতার বোলাররা। প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত বিশ ওভারে ধোনির চেন্নাই স্কোরবোর্ডে তুলেছে ১৯২ রান; এক সুনীল নারিন ছাড়া চেন্নাইয়ের ব্যাটসম্যানদের বিপক্ষে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারেনি কেউই। চেন্নাইয়ের হয়ে ৮৬ রানের ঝলমলে ইনিংস খেলেছেন ফাফ ডু প্লেসি, ৩২, ৩৬ এবং ৩৭ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলে চেন্নাইকে বড় সংগ্রহ গড়তে সহযোগীতা করেছেন রুতুরাজ গায়কোয়াড়, রবিন উথাপ্পা এবং মঈন আলি।
২৬ রানে দুইটি উইকেট নিয়েছেন নারিন; তিন ওভার বল করে ৩৩ রান দিয়ে কোনো উইকেট পাননি সাকিব আল হাসান। ১৯৩ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা যেমন দুর্দান্ত হওয়া উচিত ছিল, তেমনই এনে দিয়েছেন দুই ওপেনার শুভমন গিল-ভেঙ্কটেশ আইয়ার। দশম ওভারে ব্যক্তিগত ২৭ রান করে দলের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে রবীন্দ্র জাদেজার বলে ক্যাচ হয়ে গিল যখন প্যাভিলিয়নের পথে ফিরে যাচ্ছেন, তখন কলকাতার সংগ্রহ ৭৯ রান! কিন্তু, গিলকে থামিয়ে দিলেন আম্পায়ার। টিভি ক্যামেরায় দেখা গেল বল অনেক উপরে ওঠার কারণে তারের মতো দেখতে কিছু একটাতে লেগেছিল। ধোনির সাথে কথা বলে বলটাকে ডেড বল ঘোষণা করে আম্পায়ার; আবারও ব্যাটিংয়ে গিল। গিলকে ফেরানো না গেলেও পরের ওভারেই শার্দুল ঠাকুরের বলে জাদেজার হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে অর্ধশতক করেই ড্রেসিং রুমে ফিরেছেন আইয়ার। দুজনের প্রথম উইকেট জুঁটিতে এসেছে ৯১ রান।
শার্দুলের একই ওভারে কোনো রান না করেই প্যাভিলিয়নে ফিরেছেন নীতিশ রানাও। ব্যাটিংয়ে নারিন! জস হ্যাজলউডের বলে পুল করলেন সজোরে। বাউন্ডারী লাইনে দাড়ানো জাদেজার দুর্দান্ত ক্যাচ। মাত্র ২ রান করেই আউট ক্যারিবিয়ান তারকা। ব্যাটিং বিপর্যয়ে কলকাতা; ৯০/০ থেকে ৯৭/৩! স্কোরবোর্ডে ১১ রান যোগ করতেই ৫১ রানে দীপক চাহারকে স্কুপ করতে গিয়ে এলবিডব্লিউ হয়ে প্যাভিলিয়নের পথে গিল; কেকেআরের সংগ্রহ ৪ উইকেটে ১০৮। টানা উইকেট পড়তে দেখে বোধহয় কিছুটা বিরক্তই হয়ে গিয়েছিলেন দীনেশ কার্তিক। পিচে এসে নিজের খেলা প্রথম বলেই হাঁকালেন ছক্কা!
উইকেট গেলেও আক্রমণাত্মক ক্রিকেটটাই খেলতে চায় কেকেআর। কিন্তু ব্যক্তিগত ৯ রানে জাদেজাকে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে বাউন্ডারী লাইনে দাড়ানো রায়াডুর হাতে বন্দী হয়ে প্যাভিলিয়নের পথে কার্তিকও। জয়ের জন্য কলকাতার প্রয়োজন ৩১ বলে ৭৪; ব্যাটিংয়ে সাকিব। প্রথম বলেই জাদেজার বলটাকে লেগে ঘুরিয়ে সিঙ্গেল নিতে গিয়েই বিপদে বাংলাদেশের তারকা। কোনো রান না করেই প্রথম বলেই এলবিডব্লিউ হয়ে ড্রেসিং রুমে সাকিব। এরপর একে একে ফিরে গেছেন রাহুল ত্রিপাঠি, ইয়ন মরগানরাও। শিভম মাভি-লোকি ফার্গুসনের শেষমুহুর্তের থ্রিলারের পরেও কলকাতার ইনিংস থেমেছে ১৬৫ রানেই। দুজনে মিলে ২০ বলে স্কোরবোর্ডে তুলেছেন ৪০ রান। ৩৮ রানে ৩টি উইকেট নিয়েছেন শার্দুল। জাদেজা, হ্যাজলউডের সংগ্রহ ২টি করে।