মালদা: আস্থা-অনাস্থার লড়াই। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে প্রধান অপসারণের কার্যত হিড়িক পড়ে গিয়েছে মালদা জেলাজুড়ে। এযাবত জেলায় অন্তত ১৪ জন প্রধান অপসারিত হয়েছেন বলে খবর। আরও প্রায় জেলার ৪২ টি গ্রাম পঞ্চায়েতে তৃণমূল প্রধানদের বিরুদ্ধে অনাস্থার প্রক্রিয়া চলছে। জেলাজুড়ে যখন তৃণমূল প্রধানদের অপসারিত হতে হচ্ছে, ঠিক তখনই ব্যতিক্রমী ছবি ধরা পড়ল মালদার কালিয়াচক-৩ নম্বর ব্লকের চরিঅনন্তপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে। তলবিসভায় এই গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান সাহানারা বিবিকে অপসারণ করতে পারলেন না বিজেপি-সহ বিরোধী সদস্যরা। এখানে কার্যত মুখ পুড়েছে বিজেপির। তৃণমূলের প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা ডেকে তলবিসভায় হাজির হননি বিজেপির সদস্যরা।
বিরোধীদের মধ্যে মাত্র দু’জন উপস্থিত ছিলেন। ফলে ১৪ আসন বিশিষ্ট চরিঅনন্তপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে এদিনের তলবিসভায় ৮-০ ভোটে জয়ী হন তৃণমূলের প্রধান সাহানারা বিবি। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে এখানে তৃণমূল ৭টি আসন পায়। এছাড়া বিজেপি ৩টি, কংগ্রেস ২টি এবং নির্দল ২টি আসন পেয়েছিল। বিজেপির সঙ্গে কংগ্রেসের দু’জন হাত মিলিয়ে তৃণমূল প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থার ডাক দিয়েছিলেন। প্রধান সাহানারা বিবি বলেন, “বিজেপি ষড়যন্ত্র করে আমার বিরুদ্ধে অনাস্থা ডেকেছিল। কিন্তু ওদের চক্রান্ত ভেস্তে গিয়েছে। আমি জিতেছি। প্রধান ছিলাম, প্রধান থাকব।
এলাকায় উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকবে।” তৃণমূলের চরিঅনন্তপুর অঞ্চল কমিটির সভাপতি মতিউর রহমান বলেন, “গোটা বৈষ্ণবনগর জুড়েই তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিজেপিকে উস্কে তৃণমূলেরই একাংশ ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে। চরিঅনন্তপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সাহানারা বিবির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে অনাস্থা ডাকা হয়েছিল। কিন্তু আজকে বিজিপি সদস্যরা বেশিরভাগই উপস্থিত হননি। তাই তৃণমূলের সাহানারা বিবি প্রধান পদে বহাল থাকলেন। বিরোধীরাও বুঝতে পারছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তৃণমূল প্রধানরা এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে যথাযথভাবে কাজ করছেন। এই প্রধানের নেতৃত্বে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে।” কালিয়াচক-৩ নম্বর ব্লকের বিডিও মামুন আকতার বলেন, “চরিঅনন্তপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলের প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনা হয়েছিল। এদিন বিরোধীদের আস্থা প্রমাণের দিন নির্ধারিত হয়েছিল। বিরোধীরা মাত্র দু’জন সদস্য উপস্থিত হয়েছিলেন। প্রধানকে অপসারণ করতে তাঁরা ব্যর্থ হয়েছেন।”