Depression: ডিপ্রেশনের কয়েকটি মারাত্মক লক্ষণ

Published By: Khabar India Online | Published On:

 জীবনে ভালো বা খারাপ সময় সবারই আসে। সাধারণত সব অনুভূতিগুলোই সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ম্লান হয়ে যায় এবং আমরা নিজ নিজ কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ি।

 কারও কারও ক্ষেত্রে জীবনের কিছু ঘটনা সব স্বপ্নগুলো মেরে ফেলে। এর ফলে ওই ব্যক্তি আর নিজেকে নিয়ে ইতিবাচক চিন্তা করতে পারেন না। তলিয়ে যান বিষণ্নতায়। মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন।

যা হতাশার লক্ষণ হতে পারে। অনেকেই নিজের অজান্তে হতাশা নামক ব্যাধি নিয়ে প্রতিদিন লড়াই করছেন। যা প্রাথমিক অবস্থায় না সারালে একসময় হতাশা আরও মারাত্মক হতে পারে। জেনে নিন ডিপ্রেশনের কয়েকটি ধরন।

 কীভাবে মানুষকে প্রভাবিত করে?

হতাশা প্রত্যেককে ভিন্নভাবে প্রভাবিত করে। এটি বিভিন্ন কারণে হতে পারে, বিভিন্ন উপসর্গ দেখাতে পারে এবং এককটির নিরাময় প্রক্রিয়াও ভিন্নরকম হতে পারে।

দু’জনের সম্পূর্ণ ভিন্ন কারণ এবং বিষণ্নতার লক্ষণ থাকতে পারে। বিষণ্নতারও ধরন আছে এবং এককটির ভিন্ন উপসর্গ থাকতে পারে। জেনে নিন ৬ ধরনের বিষণ্নতা এবং তাদের লক্ষণসমূহ।

মেজর ডিপ্রেসিভ ডিসঅর্ডার

মেজর ডিপ্রেসিভ ডিসঅর্ডার (এমডিডি) যা ক্লিনিক্যাল ডিপ্রেশন নামেও পরিচিত। এটি সবচেয়ে সাধারণ ডিপ্রেশনের ধরন। ধরুন কোনো ব্যক্তি ভালো চাকরি করেন, সাজানো গোছানো একটি পরিবার, সন্তান সবই আছে তারপরও তিনি এমডিডি’তে ভুগতে পারেন।

আরও পড়ুন -  WB Weather Update: গভীর নিম্নচাপ বাংলার আকাশে, আজ সোমবার থেকে এই সব জেলায় বৃষ্টিতে ভাসবে

কখনও কখনও মানুষের হতাশ বোধ করার সুস্পষ্ট কারণও থাকে না। তবে এর অর্থ এই নয় যে, তারা হতাশায় ভুগছেন না।

 কোনো কিছুই উপভোগ করেন না
ওজনের পরিবর্তন
ঘুমের ধরনে পরিবর্তন
ক্লান্তি
মূল্যহীনতা এবং অপরাধবোধের অনুভূতি
কাজে মনোনিবেশে অসুবিধা
মৃত্যু এবং আত্মহত্যার চিন্তা

পার্সিসটেন্ট ডিপ্রেসিভ ডিসঅর্ডার (পিডিডি)

দুই বছর ধরে যদি কেউ কোনো বিষণ্নতার ঘটনায় ভুগে থাকেন তাকে বলা হয় ডাইসথিমিয়া বা পার্সিসেন্টেন্ট ডিপ্রেসিভ ডিসঅর্ডার। এটি হতাশার আরও দীর্ঘস্থায়ী রূপ।

এই রোগের কারণে ব্যক্তির পক্ষে দৈনন্দিন কাজকর্ম করা বা অন্যদের সঙ্গে সম্পর্ক টেনে নেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। এটি একটি দীর্ঘমেয়াদী বিষণ্নতা। এর লক্ষণগুলো গুরুতর হতে পারে।

 গভীর দুঃখ বা হতাশা
কম আত্মসম্মান বা অপ্রতুলতার অনুভূতি
সবকিছুতেই আগ্রহের অভাব
ক্ষুধা পরিবর্তন
ঘুমের ধরনে পরিবর্তন
অ্যানার্জি কমে যাওয়া
মনোযোগ এবং স্মৃতি সমস্যা
সামাজিক প্রত্যাহার

আরও পড়ুন -  রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা বিপন্ন ও আনিস খানের খুনের প্রকৃত অপরাধীদের খুঁজে বের করে গ্রেফতার করতে হবে

 বিষণ্নতা বা পোস্টপার্টাম ডিপ্রেশন (পিপিডি)

গর্ভাবস্থা সব নারীর জীবনেই আনন্দ বয়ে আনে। তবে এ সময় নারীর শরীরে হরমোনের পরিবর্তন ঘটে। এ কারণে মেজাজ পরিবর্তন হতে থাকে।

একজন নারী গর্ভাবস্থার শুরুতে বা সন্তান জন্মের পরে হতাশায় ভুগতে পারেন। একে প্রসবোত্তর বিষণ্নতা বলা হয়। প্রসবোত্তর বিষণ্নতা গুরুতর এবং দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে।

 মেজাজ খিটখিটে থাকা
দুঃখবোধ করা
মেজাজ দ্রুত পরিবর্তন
সামাজিক প্রত্যাহার
সন্তানের যত্ন নিতে অনীহা
ক্ষুধা পরিবর্তন হওয়া
অসহায় এবং নিরাশ বোধ করা
উদ্বেগ এবং আতঙ্ক বোধ করা
নিজেকে বা সন্তানকে আঘাত করার প্রবণতা
আত্মহত্যার চিন্তা

ম্যানিক ডিপ্রেশন বা বাইপোলার ডিসঅর্ডার

বাইপোলার ডিপ্রেশন একটি মেজাজ পরিবর্তন সংক্রান্ত ব্যাধি। এতে আক্রান্ত রোগীর মেজাজে অস্বাভাবিক পরিবর্তন দেখা দেয়।

বাইপোলার ডিজঅর্ডারে আক্রান্তরা দুঃখবোধ করলেই মেজাজে পরিবর্তন আসে। এমনকি দিনের পর দিন হতাশায় কাটে রোগীর জীবন।

 দুঃখ ও শূন্যতার অনুভূতি
শক্তির অভাব
ক্লান্তি
ঘুমের সমস্যা
মাঝে শক্তি বেড়ে যাওয়া
খিটখিটে ভাব
আত্মবিশ্বাস হঠাৎ বেড়ে বা কমে যায়

অ্যাটিপিক্যাল ডিপ্রেশন (এডি)

আরও পড়ুন -  Weather Update: উত্তরবঙ্গে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস, কলকাতায় ভ্যাপসা গরম

এই ধরনের হতাশা বেশ সাধারণ। এটি অনেকটা নীরব ঘাতকের মতো। রোগী নিজেও অনেক সময় টের পান না তিনি গতাশায় ভুগছেন।

আবার অনেকে টের পেলেও অন্যরা যাতে বুঝতে না পারেন এজন্য রোগী চিন্তিত থাকেন। এই রোগীরা দুঃখিত নাও হতে পারেন এবং বিভিন্ন সময়ে তারা প্রফুল্ল থাকতে পারেন।

অতিরিক্ত খাওয়া বা ওজন বৃদ্ধি
অতিরিক্ত ঘুম
ক্লান্তি বা দুর্বলতা
প্রত্যাখ্যাত হলে সহ্য করতে না পারা
উগ্র মেজাজ
দুর্বল শরীর
ব্যথা ও যন্ত্রণায় ভোগা

সিজনাল এফেকটিভ ডিসর্ডার (এসএডি)

ঋতুভেদেও বিষণ্নতা হতে পারে। একজন ব্যক্তি বছরের একটি নির্দিষ্ট ঋতুতে বিষণ্ন হতে পারেন। পরবর্তীতে আবার এ সমস্যা ঠিক হয়ে যায়।

মৌসুমী সংবেদনশীল ব্যাধি বেশিরভাগ ক্ষেত্রে শীতকালে ঘটে। আবার শীতকাল চলে গেলে তারা সুস্থ হয়ে ওঠেন।

 সামাজিক প্রত্যাহার
অতিরিক্ত ঘুম
ওজন বৃদ্ধি
দুঃখিত, আশাহীন বা মূল্যহীন বোধ করা

প্রাথমিক অবস্থায় যদি আপনি টের পান হতাশায় ভুগছেন, দ্রুত চিকিৎসকের শরনাপন্ন হতে হবে। না হলে এসব ব্যাধি একসময় মারাত্মক হয়ে উঠতে পারে।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া