শিক্ষা পর্বের উদ্বোধনী অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ

Published By: Khabar India Online | Published On:

খবরইন্ডিয়াঅনলাইন, নয়াদিল্লিঃ   প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে শিক্ষা পর্বের উদ্বোধনী অধিবেশনে ভাষণ দিয়েছেন। এই উপলক্ষে তিনি ভারতীয় সাংকেতিক ভাষা অভিধান (স্বল্প শ্রবণশক্তি সম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য অডিও ও টেক্সট সম্বলিত সাংকেতিক ভাষা-ভিত্তিক ভিডিও, যা ইউনিভার্সাল ডিজাইন অফ লার্নিং-এর সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ), টকিং বুক (স্বল্প দৃষ্টিশক্তি সম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য অডিও বুক), সিবিএসই-র স্কুল কোয়ালিটি অ্যাস্যুরেন্স অ্যান্ড অ্যাসেসমেন্ট ফ্রেমওয়ার্ক, নিপূণ ভারতের জন্য ‘নিষ্ঠা’ শিক্ষক শিক্ষণ কর্মসূচি এবং ‘বিদ্যাঞ্জলি পোর্টাল’ (শিক্ষার সঙ্গে যুক্ত স্বেচ্ছাসেবক / পৃষ্ঠপোষক / বিদ্যালয় উন্নয়নের জন্য সিএসআর সাহায্যদাতা)।

সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী জাতীয় পুরস্কার জয়ী শিক্ষক-শিক্ষিকাদের অভিনন্দন জানান। কঠিন সময়েও পড়ুয়াদের ভবিষ্যৎ তৈরি করার জন্য তিনি শিক্ষক-শিক্ষিকাদের অবদানের প্রশংসা করেন। শ্রী মোদী বলেন, আজ শিক্ষক পর্ব উপলক্ষে একাধিক নতুন কর্মসূচির সূচনা হয়েছে, যা আজাদি কা অমৃত মহোৎসব উদযাপনের দিক থেকেও অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। স্বাধীনতার শতবর্ষের পর ভারত কেমন হবে সে বিষয়ে নতুন সঙ্কল্প গ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রী। মহামারীর সময় যাবতীয় চ্যালেঞ্জ উপেক্ষা করে কর্তব্য পালনের জন্য শ্রী মোদী ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং সমগ্র শিক্ষা সমাজের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, কঠিন সময়ের মোকাবিলায় যে উদ্ভাবনমূলক সক্ষমতা গড়ে উঠেছে তা আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। শ্রী মোদী বলেন, “আমরা যদিও রূপান্তরের মধ্যবর্তী সময়ে অবস্থান করছি তাহলে সৌভাগ্যবশত আমাদের কাছে এক আধুনিক ও ভবিষ্যৎমুখী নতুন জাতীয় শিক্ষানীতিও রয়েছে।”

আরও পড়ুন -  বাংলাদেশের জাতীয় দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ

জাতীয় শিক্ষানীতি ও তার রূপায়ণে প্রতিটি স্তরে শিক্ষাবিদ, বিশেষজ্ঞ, শিক্ষক-শিক্ষিকাদের অবদানের প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি প্রত্যেককে সার্বিক অংশগ্রহণ আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান। এই প্রয়াসে সমাজকেও যুক্ত করার কথা বলেন তিনি। শ্রী মোদী বলেন, শিক্ষাক্ষেত্রে এই রূপান্তরণ কেবল নীতি-ভিত্তিক নয় বরং অংশগ্রহণ-ভিত্তিক বলেও তিনি অভিমত প্রকাশ করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সবকা সাথ, সবকা বিকাশ, সবকা বিশ্বাস-এর সঙ্গে সবকা প্রয়াস-এর লক্ষ্যে দৃঢ় সঙ্কল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে ‘বিদ্যাঞ্জলি ২.০’ একটি উপযুক্ত মঞ্চ হয়ে উঠতে চলেছে। এই সমাজে আমাদের বেসরকারি ক্ষেত্রকেও এগিয়ে আসতে হবে যাতে সরকারি বিদ্যালয়গুলিতে শিক্ষার গুণমান আরও বাড়ানো যায়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত কয়েক বছরে দেশে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ আরও একবার জাতীয় চরিত্র হয়ে উঠছে। সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণমূলক শক্তির ফলে গত ৬-৭ বছরে ভারতে অনেক কিছু করা হয়েছে, যা এক সময়ে কল্পনা করাও দুস্কর ছিল। সমাজ যখন একসঙ্গে কিছু করে তখন প্রত্যাশামাফিক ফল পাওয়া নিশ্চিত হয়। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রত্যেকেই জীবনের যে কোনও পর্যায় থেকে দেশের যুব সমাজকে ভবিষ্যৎ দিশা দেখাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেন। সদ্যসমাপ্ত অলিম্পিক ও প্যারালিম্পিকে আমাদের অ্যাথলিটদের অসাধারণ ক্রীড়া নৈপূণ্যের কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী আনন্দ প্রকাশ করেন যে আজাদি অমৃত মহোৎসবের সময় প্রত্যেক অ্যাথলিট অন্ততপক্ষে ৭৫টি বিদ্যালয়ে ভ্রমণের তাঁর অনুরোধ স্বীকার করেছেন। এর ফলে, ছাত্রছাত্রীরা অনুপ্রাণিত হবে এবং অনেক মেধাবী পড়ুয়া ক্রীড়াক্ষেত্রকে কর্মজীবন হিসেবে বেছে নিতে উৎসাহিত করবে।

আরও পড়ুন -  বাংলাদেশ সফরের প্রাক্কালে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য

প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটি দেশের অগ্রগতির ক্ষেত্রে শিক্ষা ব্যবস্থা কেবল সামুহিক হলেই হবে না, সেইসঙ্গে ন্যায়সঙ্গতও হতে হবে। তিনি যোগ করেন, ন্যাশনাল ডিজিটাল আর্কিটেকচার বা এন-ডিয়ার শিক্ষাক্ষেত্রে অসাম্য দূর করতে এবং শিক্ষা ব্যবস্থার আধুনিকীকরণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। শুধু তাই নয়, ব্যাঙ্কিং ক্ষেত্রে ইউপিআই ইন্টারফেস যেমন বিপ্লব নিয়ে এসেছে, ঠিক সেভাবেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির কাজকর্মে সমন্বয় স্থাপনে এন-ডিয়ার দ্রুত যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে কাজ করবে। তিনি বলেন, দেশ এখন শিক্ষা ব্যবস্থার অঙ্গ হিসেবে টকিং বুক, অডিও বুক-এর মতো প্রযুক্তি কাজে লাগাচ্ছে।

আরও পড়ুন -  মেয়েরা ছক ভাঙলে সমাজে হাজারও কথা শুরু হয়, পরিচিতি লাভ করেছি অনেক কষ্ট করেঃ উর্ফি জাভেদ

আজ থেকে শুরু হওয়া স্কুল কোয়ালিটি অ্যাসেসমেন্ট অ্যান্ড অ্যাস্যুরেন্স ফ্রেমওয়ার্ক শিক্ষাক্ষেত্রে পাঠ্যক্রম, শিক্ষাদান, শিক্ষা ব্যবস্থার মূল্যায়ন, পরিকাঠামো প্রভৃতি ক্ষেত্রে মৌলিক বিজ্ঞান-ভিত্তিক কাঠামোগত ঘাটতিগুলি দূর করতে সাহায্য করবে। একইসঙ্গে এই ব্যবস্থা অসমতা দূর করতেও সেতুবন্ধনের ভূমিকা পালন করবে।

শ্রী মোদী বলেন, ক্রমপরিবর্তনশীল এই সময়ে আমাদের শিক্ষকদেরকেও নতুন ব্যবস্থা ও কারিগরি দিকগুলি সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। তিনি জানান, দেশ ‘নিষ্ঠা’ প্রশিক্ষণ কর্মসূচির মাধ্যমে পরিবর্তনশীল সময়ের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে শিক্ষকদের প্রস্তুত করছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতের শিক্ষকরা কেবল আন্তর্জাতিক মানই পূরণ করছেন না, সেইসঙ্গে তাঁদের জ্ঞানের পুঁজির মূলধনও রয়েছে। জ্ঞানের বিশেষ এই মূলধন ভারতীয় সংস্কৃতির প্রতীক। তিনি বলেন, আমাদের শিক্ষক-শিক্ষিকারা কেবল নিজেদের পেশাকে কর্তব্য হিসেবেই মনে করেন না, বরং তাঁরা শিক্ষকতাকে মনুষ্য সহানুভূতির একটি নৈতিক দায়িত্ব হিসেবেও গণ্য করেন। আর এ কারণেই শিক্ষক-শিক্ষিকা ও ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে কেবল পেশাগত সম্পর্কই নয়, বরং পারিবারিক সম্পর্কও গড়ে ওঠে। এই সম্পর্ক সারা জীবনের বলেও প্রধানমন্ত্রী অভিমত প্রকাশ করেন। সূত্রঃ পিআইবি।