খবরইন্ডিয়াঅনলাইন, ওয়েবডেস্কঃ পুরুষতান্ত্রিক সমাজে মেয়েদের লড়াই নিয়ে বিউ আর সিনেমাতে অনেক গল্প হয়। তবে সেই কল্পনা যখন বাস্তবে যখন সত্যি হয় তখন কেমন লাগে৷ একজনকে দেখেই বাকিরা অনুপ্রাণিত হন। যেমন মহিলা পুরোহিত নন্দিনী ভৌমিককে দেখে অনেক মেয়ে আজ পুজো করার জন্য এগিয়ে এসেছেন। দুর্গা পুজো কি শুধুই পুরুষেরা করতে পারে? না পারেনা। এবার মায়ের হাতেই মায়ের আহ্বান হওয়ার পালা। হ্যাঁ কলকাতা শহরে আশ্বিন প্রভাতে উমার আরাধনা করবেন মহিলা পুরোহিত। সেই নন্দিনীই আরও একবার প্রথা ভাঙতে চলেছেন।আসন্ন দুর্গাপুজোয় দক্ষিণ কলকাতার একটি জনপ্রিয় ক্লাব ‘৬৬ পল্লীতে তে পৌরোহিত্য করবেন নন্দিনী ও তাঁর তিন সঙ্গী। কলকাতার দুর্গাপুজোর ইতিহাসে এই প্রথমবার কোনো বারোয়ারি পুজোর দায়িত্ব পেলেন চার মহিলা পুরোহিত। চার শ্রীমতী নন্দিনী, রুমা, সেমন্তী এবং পৌলমীর মন্ত্রোচ্চারণেই মুখরিত হবে আশ্বিনের শারদপ্রাত। এই চারজন মহিলা ভারতীয় শাস্ত্রের উপর দারুণ দক্ষতা আছে, শাস্ত্রের জ্ঞান ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপিকা। দক্ষিণ কলকাতার জনপ্রিয় এই বারোয়ারি পুজো প্রতিবারই নতুন নতুন থিম উপহার দেয়। তবে এবারের থিমের থেকে পুজো কমিটির এই উদ্যোগ সকলের নজরকাড়া লেগেছে৷ উমা পুজোর গোড়া থেকেই থাকবে মহিলা পুরোহিতের উপস্থিতি। ২২ শে আগস্ট ৬৬ পল্লির খুঁটিপুজো। পুজোর অন্যতম উদ্যোক্তা প্রদ্যুম্ন মুখোপাধ্যায় সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, মহামারীর কারণে এবারে পুজোর বাজেটে প্রচুর কাটছাঁট করা হয়েছে। এবার পাঁচ লক্ষ টাকার মধ্যেই পুজোর আয়োজনের চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। তবে আগের মতো থিম না হলেও দেবীপক্ষে নারীদের এই অনন্য সম্মানই অন্যান পুজোর থেকে মূল আকর্ষণ হতে চলেছে ৬৬ পল্লির। এর আগে কখনো কোনো মহিলা পুরোহিতকে পুজোর দায়িত্ব পেতে দেখা যায়নি।
তবে যে দুর্গাপুজোয় এক্কেবারে মহিলা পুরোহিত থাকেননি, তা কিন্তু নয়। তবে তাঁরা ছিলেন আংশিক দায়িত্বে। কখনো পুহোর জোগাড়ে তো কখনো চণ্ডীপাঠ করেছেন। তবে ৬৬ পল্লির অকাল বোধনে এ বার কোনও পুরুষ পুরোহিতই থাকবেই না। এমনটা সম্ভবত এই প্রথম। আর পুজো মন্ডপে মহিলা পুরোহিতের উত্থানের ইতিহাস রচিত হতে চলেছে। উল্লেখ্য,২০২০ সালে পরিচালক অরিত্র মুখোপাধ্যায় মহিলা পুরোহিত নন্দিনী ভৌমিকের জীবন থেকেই অনুপ্রাণিত হয়ে অরিত্র ‘ব্রহ্মা জানেন গোপন কম্মটি’ সিনেমাটি পরিচালনা করেছিলেন। এই ছবিতে পরিচালক মশাই যেভাবে পুরুষতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে কার্যত চ্যালেঞ্জ জানিয়ে পুরোহিত হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন মহিলা পুরোহিতের কন্যাদান ছাড়া বিবাহ অনুষ্ঠান সম্পন্ন করা। এবার বাস্তবে তা সত্যি হতে চলেছে। অনেকে ৬৬ পল্লী পুজো কমিটির উদ্যোগকে বাহবা দিয়েছেন।