কবে আসবে ফিরে, এই সুন্দর সোনালী দিন !

Published By: Khabar India Online | Published On:

খবরইন্ডিয়াঅনলাইন, ওয়েবডেস্কঃ   একটি ছোট্ট জীবাণু এসে বদলে দিয়েছে আমাদের প্রতিদিনের পরিচিত পৃথিবীকে। সবকিছু থমকে গেছে। খুব স্বাভাবিকভাবেই বড় ধরনের পরিবর্তন এসেছে প্রায় সবার জীবনে।

এমন পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে চলতে হিমশিম খাচ্ছেন বড়রাই। সেখানে ছোটদের মনের অবস্থা তো আরও কষ্টের।

ভাইরাস কী, কেমন করে কতটা ক্ষতি করতে পারে সে সব সম্পর্কে ছোটদের খুব একটা ধারণা না থাকাই স্বাভাবিক। তাদের বয়সটা হল হেসে খেলে কাটানোর। কিন্তু দীর্ঘ সময় ঘরে বন্দি থেকে তারাও হচ্ছে মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত।

সারাদিন বাড়িতে কাটাতে হলেও সেখানে শিশুর খেলাধুলার সুযোগ নেই বললেই চলে। ফলে বদ্ধঘরেই স্মার্টফোন, টিভি ও কম্পিউটারের সঙ্গে কাটছে বেশিরভাগ শিশুর শৈশব।

তবে শুধু এ সময়েই নয়, বছরের বেশিরভাগ সময়েই বাবা – মায়ের ব্যস্ততায় স্মার্টফোন, টিভি আর কম্পিউটারের সঙ্গে সময় কাটাতেই বাচ্চারা বেশি অভ্যস্ত হয়ে পড়ে, যা তাদের ভবিষ্যতের জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক।

স্মার্টফোন, টিভি বা কম্পিউটারের প্রতি সন্তানের অতিরিক্ত আকর্ষণ যে তার শারীরিক বৃদ্ধি ও মানসিক বিকাশের ক্ষেত্রে অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়- তা এখন বেশিরভাগ মা-বাবাই বোঝেন।

স্কুলে শিশুরা নিজেদের মতো করে অনেকটা সময় কাটায়। বন্ধুদের সঙ্গে খেলাধুলা করে- সে সবও এখন বন্ধ। উল্টো সারাক্ষণ মা-বাবার খবরদারিতে থাকতে হচ্ছে বলে বিরক্তি বাড়ছে ক্রমেই। তারপর আছে অনলাইন দুনিয়া।

আরও পড়ুন -  Swastika Mukherjee: ব্লাউজ ছাড়াই শাড়িতে মোহময়ী স্বস্তিকা, মুগ্ধ নেটিজেনরা !

একথা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই, আমাদের জীবনে অপরিহার্য জিনিসের তালিকায় ক্রমেই ঢুকে পড়ছে ইন্টারনেট। সবচেয়ে বড় কথা, নিজেকে মুখোশের আড়ালে লুকিয়ে রাখা যায় বলে ভার্চুয়াল দুনিয়ায় বদলে যায় মানুষের ব্যবহার।

কোথায় থামতে হয়, সেই বোধ না থাকলে ঘটে যেতে পারে বড় বিপর্যয়। বড়রাই কত ফাঁদে পা দিয়ে ফেলেন, ছোটদের ভুল হওয়ার আশঙ্কা আরও বেশি।

টেলিভিশন ও কম্পিউটার এগুলো বিনোদন আর তথ্য দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে মানসিক চাপ বাড়ায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, একঘণ্টা কম্পিউটার বা টিভির সামনে বসে থাকার চেয়ে খোলা বাতাসে খেলাধুলা বা ব্যায়াম শিশুদের বেশি দরকার। আর তিন বছরের কম বয়সী শিশুদের দিনে আধাঘণ্টার বেশি টিভি দেখা উচিত নয়।

সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য ছোট বয়স থেকেই পড়াশোনার পাশাপাশি শিশুদের অনেক কিছু শিখতে হয় বা অনেক কিছু করতে হয়। তাই শিশুরা যাই করুক না কেন ওদের খেলার সময় প্রয়োজন। বন্ধুদের সঙ্গে খেলার মধ্য দিয়েই যে ওরা সব স্ট্রেস এবং মানসিক চাপ থেকে বেরিয়ে আসতে পারে।

আরও পড়ুন -  Ishwari Deshpande: সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী !

এই পরিস্থিতিতে বন্ধুদের সঙ্গে মিশে খেলাধুলার সুযোগ পাচ্ছে না শিশুরা। তাই বাড়িতে দিনের মধ্যে কিছুটা সময় আপনিই তার বন্ধু হয়ে যান। তার খেলায় অংশ নিতে পারেন। অনলাইনে নয় বরং যেসব খেলায় শরীরের নড়াচড়া বাড়ে সেসব খেলার প্রতি শিশুকে উৎসাহী করুন।

তাতে করে শিশুর প্রয়োজনীয় শরীরচর্চার কাজটাও হয়ে যাবে অনেকটা। শহরের ছোট ছোট ফ্ল্যাটে শিশুর দৌড়াদৌড়ি করে খেলার সুযোগ তেমন নেই বললেই চলে।

এদিকে বাইরে বের হওয়ার সুযোগও কম। তবু যদি সুযোগ থাকে তাহলে শিশুকে ছাদে বা বাড়ির সামনের লনে খেলতে নিয়ে যান। তবে আসা-যাওয়ার সবটা সময় স্বাস্থ্যবিধি মেনেই কিন্তু চলতে হবে।

ঘরে বসে শিশুকে সৃজনশীল হতে সাহায্য করে এমন খেলা খেলতে সাহায্য করুন। দাবা বা লুডু এসব নিয়ে বসতে পারেন। শিশুর বুদ্ধির চর্চাও হবে তাতে খানিকটা। এ সময়ে শিশুর মনের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ার কারণে সে সহজেই খিটিমিটি করতে পারে। তাকে সুন্দর করে বুঝিয়ে বলার দায়িত্বও আপনার।

তার মনের ওপর কতটা চাপ পড়ছে- তা বোঝার চেষ্টা করুন। আবার বায়না করলেই তার হাতে ল্যাপটপ, কম্পিউটার বা নতুন নতুন খেলনা ধরিয়ে দেবেন না। বাস্তবতাটিও তাকে বুঝিয়ে বলতে হবে।

আরও পড়ুন -  ২০২০-র খরিফ শস্যের জন্য পিএমএফবিওয়াই প্রকল্পে কৃষকদের নাম নথিভুক্তিকরণের কাজ চলছে

খেলার ছলে শিশুকে হাতের নানা কাজ শেখাতে পারেন। রান্না বা ঘরের কাজে তার সাহায্য চাইতে পারেন। চুলার কাছে যেতে দেবেন না কারণ সেখানে তারা নিরাপদ নয়। দূরে রাখুন ধারালো জিনিস থেকেও। কিন্তু কোনো খাবার তৈরি বা ঘর পরিষ্কারে তার সাহায্য চাইতে পারেন।

অনেকটা খেলার ছলেই সে প্রয়োজনীয় কাজগুলো শিখে নিতে পারবে। শিশুর বুদ্ধি বিকাশে খেলাধুলা যেমন প্রয়োজন তেমনই প্রয়োজন পড়াশোনারও। স্কুল বন্ধ থাকায় তার পড়াশোনা যেন শিকেয় তুলে না রাখে। প্রতিদিন নিয়ম করে পড়তে বসান। সেই পড়ার সময়টুকুও যেন আনন্দময় হয় সেদিকে খেয়াল রাখুন।

বড়রা বয়সে বড় বলেই এ পরিস্থিতির চাপ কতটা তা বুঝতে পারছি কিন্তু শিশুদের এ মানসিক চাপ থেকে দূরে রাখা প্রয়োজন। কারণ শিশু বয়সেই তৈরি হয় ব্যক্তিত্ব ও তাদের আত্মবিশ্বাস, যা বড় হতে ও সুস্থ মানুষ হতে অনেক বেশি প্রয়োজন। তাই শিশুকে নানা সৃজনশীল খেলার সুযোগ করে দিন।

সূত্রঃ যুগান্তর