খবরইন্ডিয়াঅনলাইন, নয়াদিল্লিঃ
১৯৫১’র জনপ্রতিনিধিত্ব আইনের ৬০সি ধারার বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে জমা পড়া একটি পিটিশন (W.P. No. 20027 of 2020) মাদ্রাজ হাইকোর্ট খারিজ করে দিয়েছে। আইনের ঐ ধারায় ৮০ বছরের বেশি বয়সী প্রবীণ নাগরিক, ভিন্নভাবে সক্ষম ব্যক্তি, কোভিড-১৯ আক্রান্ত অথবা সন্দেহজনক ব্যক্তি এবং অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তি সহ অনুপস্থিত ভোটারদের জন্য পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোটাধিকার প্রয়োগের সংস্থান রয়েছে।
মাদ্রাজ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ তাদের রায়ে জানিয়েছে, এটা সকলকেই স্বীকার করতে হবে যে, নির্বাচন কমিশন সামগ্রিক পরিস্থিতির কথা ভেবে কাজ করে। এমনকি, গণতন্ত্রের উৎসবে সকলকে সামিল করতে কমিশন তাঁদেরই পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোটাধিকার প্রয়োগের সুবিধা দেয়, যাঁরা ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে এসে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন না। বিচক্ষণ ব্যক্তিরা ব্যালট পেপারের মাধ্যমে ভোটাধিকার প্রয়োগের গোপনীয়তা আগেও বহুবার দেখেছেন এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করা কমিশনের কর্তব্য। একজন ব্যক্তি শিষ্টাচার বজায় রেখে একথা বলতেই পারেন যে, ব্যালট পেপারের গোপনীয়তার সঙ্গে কোনও রকম আপোষ না করেই যদি সমগ্র নির্বাচন প্রক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে আয়োজন করা যায়, তা হলে তা হয়ে ওঠে নির্বাচন আয়োজনের সঙ্গে যুক্ত সংস্থার পক্ষে এক গৌরবের মুহূর্ত।
পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোটাধিকার প্রয়োগের ক্ষেত্রে ১৯৬১’র আইন অনুযায়ী ব্যক্তি-বিশেষের শ্রেণী বিভাজনের ক্ষেত্রে আদালত কোনও রকম স্বেচ্ছাচারিতা খুঁজে পায়নি। এই সুবিধা তাঁদেরই দেওয়া হয়, যাঁরা সশরীরে ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে উপস্থিত হতে পারেন না। তাই, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সকলকে সামিল করার মধ্যে কোনও দ্বিচারিতা নেই, বরং বিশেষ ক্ষেত্রে ব্যক্তি-বিশেষের শ্রেণী বিভাজনের মাধ্যমে ব্যালট পেপারে ভোটাধিকারের সুবিধা গণতন্ত্রের উৎসবে সকলকে সামিল করারই অঙ্গ।
মহামান্য আদালত এটা উপলব্ধি করেছে যে, নির্বাচনে সুযোগ-সুবিধা প্রদানের ক্ষেত্রে নীতি-নির্দেশিকা জারি করাও কমিশনের এক্তিয়ারভুক্ত। এমনকি, মহামান্য সুপ্রিম কোর্টও নির্বাচন কমিশনকে সেই সমস্ত জায়গায় বা ক্ষেত্রে নির্বাচন আয়োজনের ব্যাপারে নির্দেশনামা জারি করার অধিকার দিয়েছে, যেখানে সংসদীয় আইন বা বিধি কার্যকর নয়। এই প্রেক্ষিতে মহামান্য মাদ্রাজ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে গঠিত বেঞ্চ তাদের রায়ে বলেছে, নির্বাচন আয়োজনের ক্ষেত্রে যে কোনও ধরনের নির্দেশিকা জারি করার অধিকার কমিশনের রয়েছে।
উল্লেখ করা যেতে পারে, ২০১৯ সালে ঝাড়খন্ড নির্বাচনের সময় থেকে বিশেষ শ্রেণীর মানুষের জন্য ভোটাধিকার প্রয়োগের ক্ষেত্রে বিকল্প ব্যবস্থা হিসাবে কমিশন পোস্টাল ব্যালটের সুবিধা চালু করে। বিহার বিধানসভা নির্বাচনেও গত বছর বিশেষ সুবিধাপ্রাপ্ত ৫২ হাজারেরও বেশি ভোটদাতা পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। কমিশন ‘কোনও ভোটদাতাই যেন বাদ না যান’ – এই মন্ত্রকে সামনে রেখে চলতি নির্বাচন ও উপ-নির্বাচনগুলির ক্ষেত্রেও ভোটাধিকার প্রয়োগের বিকল্প ব্যবস্থা হিসাবে পোস্টাল ব্যালটের সুবিধা কার্যকর করার ক্ষেত্রে ইতিমধ্যেই নীতি-নির্দেশিকা জারি করেছে। কমিশনের পক্ষ থেকে সুস্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে, পোস্টাল ব্যালটে ভোটাধিকার প্রয়োগের সুবিধা তাঁরাই পাবেন, যাঁদের বয়স ৮০ বছরের বেশি অথবা ভিন্নভাবে সক্ষম ব্যক্তি অথবা ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে পৌঁছনোর ক্ষেত্রে বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা রয়েছে। সূত্র – পিআইবি।