প্রধানমন্ত্রী আগ্রায় আগ্রা মেট্রো প্রকল্পের নির্মাণ কাজের সূচনা করেছেন

Published By: Khabar India Online | Published On:

খবরইন্ডিয়াঅনলাইন, নয়াদিল্লিঃ দেশের পরিকাঠামো উন্নয়নে সারা বিশ্ব থেকে বিনিয়োগ আনার চেষ্টা চলছে : প্রধানমন্ত্রী

স্বদেশ দর্শন ও প্রসাদ কর্মসূচির মাধ্যমে পর্যটকদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে : প্রধানমন্ত্রী

আবাসন নির্মাণকারী এবং আবাস ক্রেতাদের মধ্যে অনাস্থা দূর করতে রেরা আইন কার্যকর করা হয়েছিল : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার আওতায় ১২ লক্ষেরও বেশি শহরাঞ্চলীয় মধ্যবিত্ত পরিবারকে প্রায় ২৮ হাজার কোটি টাকা বাড়ী কেনার জন্য সাহায্য দেওয়া হয়েছে : প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উত্তর প্রদেশের আগ্রায় আগ্রা মেট্রো প্রকল্পের নির্মাণ কাজের সূচনা করেছেন। এই উপলক্ষে কেন্দ্রীয় আবাসন ও শহরাঞ্চল বিষয়ক মন্ত্রী শ্রী হরদীপ সিং পুরী উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ সহ বিশিষ্ট ব্যক্তিরা অনুষ্ঠানে অংশ নেন।

আগ্রা মেট্রো প্রকল্পের নির্মাণ কাজের সূচনা উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী দেশের পরিকাঠামো ক্ষেত্রে বড় সমস্যাগুলির কথা উল্লেখ করে বলেন, অতীতে নতুন প্রকল্পের কথা ঘোষণা করা হলেও প্রকল্পের নির্মাণ কাজের জন্য অর্থের উৎস কি হবে – সে ব্যাপারে গুরুত্বই দেওয়া হয়নি। তিনি আরও বলেন, তাঁর সরকার নতুন প্রকল্প শুরুর আগেই প্রয়োজনীয় তহবিল সংস্থান সুনিশ্চিত করেছে। শ্রী মোদী আরও বলেন, জাতীয় পরিকাঠামো পাইপলাইন প্রকল্প খাতে ১০০ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি ব্যয় করা হবে। মাল্টি-মোডাল যোগাযোগ পরিকাঠামো পরিকল্পনার কাজ দ্রুততার সঙ্গে এগিয়ে চলেছে। তিনি আরও বলেন, দেশের পরিকাঠামোর উন্নয়নে সারা বিশ্ব থেকে বিনিয়োগ আনার চেষ্টা চলছে।

আরও পড়ুন -  Swastika Dutta: ধুনুচি নিয়ে অসাধারণ নাচ নাচলেন অভিনেত্রী স্বস্তিকা ! সেই ভিডিও দেখুন

পর্যটন ক্ষেত্র প্রত্যেকের আয়ের উৎস হয়ে উঠতে পারে বলে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী জানান, ই-ভিসা কর্মসূচির আওতায় বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের সুবিধা প্রদানের সংখ্যাই কেবল বাড়ানো হয়নি, একইসঙ্গে হোটেলগুলিতে থাকা ও খাওয়ার মাশুলও উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করা হয়েছে। স্বদেশ দর্শন ও প্রসাদ কর্মসূচির মতো একাধিক উদ্যোগের মাধ্যমে পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে সবরকম চেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে শ্রী মোদী জানান। সরকারের চেষ্টার ফলে ভ্রমণ ও পর্যটন সংক্রান্ত বিশ্ব প্রতিযোগিতাসূচকে ভারত ৩৪তম স্থানে উঠে এসেছে। ২০১৩ সালে এই সূচকে ভারতের স্থান ছিল ৬৫। তিনি আশা প্রকাশ করেন, করোনা পরিস্থিতির যেহেতু ধীরে ধীরে উন্নতি ঘটছে, তাই শীঘ্রই পর্যটন ক্ষেত্রের সুদিন ফিরে আসবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন সার্বিকভাবে সংস্কারমূলক উদ্যোগ চালানো হচ্ছে, আলাদাভাবে নয়। তিনি আরও বলেন, শহরগুলির সার্বিক উন্নয়নে ৪টি পর্যায়ে কর্মসূচি রূপায়িত হচ্ছে। এগুলি হ’ল – দীর্ঘ বকেয়া সমস্যাগুলির স্থায়ী সমাধান, সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন, সর্বাধিক বিনিয়োগ এবং আধুনিক প্রযুক্তির আরও বেশি প্রয়োগ।

শ্রী মোদী বলেন, আবাসন নির্মাণকারী এবং ক্রেতাদের মধ্যে একটা সময় পরস্পরের প্রতি অনাস্থার বাতাবরণ ছিল। কিছু অসাধু মানুষ সমগ্র আবাসন ক্ষেত্রকে কালিমালিপ্ত করার অপচেষ্টা করে গেছেন। এর ফলে, মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষ হতাশাগ্রস্ত হয়েছেন এবং বিশ্বাসে ঘাটতি দেখা দিয়েছে। এর প্রেক্ষিতে রেরা আইন কার্যকর করা হবে বলে তিনি জানান। সাম্প্রতিক কয়েকটি প্রতিবেদনের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রেরা আইন কার্যকর হওয়ার ফলে মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষ সহজেই এবং দ্রুত আবাসনের মালিকানা হাতে পাচ্ছেন। তিনি আরও বলেন, আধুনিক গণপরিবহণ ব্যবস্থা থেকে আবাসন – প্রায় সবক্ষেত্রেই শহরগুলিতে জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে সার্বিক উন্নয়নের কাজ এগিয়ে চলেছে।

আরও পড়ুন -  Deepika Padukone: পোশাকের জন্য ট্রলের শিকার দীপিকা

প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার কথা উল্লেখ করে শ্রী মোদী বলেন, এই আগ্রা শহর থেকেই কর্মসূচির সূচনা হয়েছিল। ইতিমধ্যেই শহরাঞ্চলের দরিদ্র মানুষের জন্য ১ কোটিরও বেশি বাড়ী অনুমোদন করা হয়েছে। শহরের মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষের জন্য প্রথমবার বাড়ি কেনার জন্য সাহায্য করা হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত ১২ লক্ষেরও বেশি শহরাঞ্চলীয় মধ্যবিত্ত শ্রেণীর পরিবারকে নতুন বাড়ি কেনার জন্য প্রায় ২৮ হাজার কোটি টাকা সাহায্য দেওয়া হয়েছে। অম্রুত কর্মসূচির আওতায় একাধিক শহরে জল, নিকাশী প্রভৃতি পরিকাঠামোর উন্নতি করা হচ্ছে। এমনকি, স্থানীয় স্বশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলিকে শহরের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে থাকা গণশৌচালয়গুলির মানোন্নয়নে সাহায্য করা হচ্ছে। এছাড়াও, শহরগুলিতে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার আধুনিক পদ্ধতি কার্যকর করা হচ্ছে বলেও প্রধানমন্ত্রী জানান।

আরও পড়ুন -  শরৎ আর শীতের মাঝে ক্ষণিকের অতিথি হেমন্ত

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৪’র পর ৪৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ মেট্রো লাইন চালু হয়েছে। ২০১৪’র পূর্ববর্তী সময়ে চালু মেট্রো লাইনের পরিমাণ ছিল কেবল ২২৫ কিলোমিটার। তিনি আরও জানান, দেশের ২৭টি শহরে আরও ১ হাজার কিলোমিটার দীর্ঘ মেট্রো লাইন নির্মাণের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে।

আগ্রা মেট্রো প্রকল্পটির ২টি করিডর রয়েছে, যার মোট দৈর্ঘ্য ২৯.৪ কিলোমিটার এই মেট্রো পরিষেবা চালু হলে তাজমহল, আগ্রা কেল্লা, সিকান্দর প্রভৃতি আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্রগুলির সঙ্গে মেট্রো পরিষেবা যুক্ত হবে। এমনকি, এই মেট্রো পরিষেবার ফলে আগ্রা শহরের প্রায় ২৬ লক্ষ মানুষ লাভবান হবেন এবং প্রতি বছর আগ্রায় ঘুরতে আসা ৬০ লক্ষেরও বেশি পর্যটকের যাতায়াতে সুবিধা হবে। ঐতিহাসিক আগ্রা শহরে পরিবেশ-বান্ধব দ্রুতগতিসম্পন্ন এই পরিবহণ ব্যবস্থার নির্মাণ কাজে খরচ ধরা হয়েছে ৮ হাজার ৩৭৯ কোটি ৬২ লক্ষ টাকা। ৫ বছরের সময়সীমায় প্রকল্পের কাজ শেষ হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

এর আগে ২০১৯ – এর ৮ই মার্চ প্রধানমন্ত্রী আগ্রা মেট্রো প্রকল্পের সূচনার পাশাপাশি, সিসিএস বিমানবন্দর থেকে মুন্সিপুলিয়া পর্যন্ত ২৩ কিলোমিটার দীর্ঘ লক্ষ্ণৌ মেট্রোর উত্তর-দক্ষিণ করিডরেরও উদ্বোধন করেছিলেন। সূত্র – পিআইবি।