খবরইন্ডিয়াঅনলাইন, নয়াদিল্লিঃ আসামে নলবাড়ি জেলার ৪৪ বছর বয়সী এক খাদি শিল্পী শ্রী নিরু কলিতা। শ্রীমতী কলিতা ও তাঁর পরিবার বহুদিন গৃহহীন অবস্থায় জীবন কাটিয়েছেন। এর কারণ, ব্রহ্মপুত্র নদে বন্যার ফলে বারবার ভূমিধ্বস হওয়ায় শ্রী কলিতার মতো বহু বাড়ি নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। এসব সত্ত্বেও খাদি ও গ্রামোদ্যোগ কমিশন (কেভিআইসি) ওয়ার্কশেড কর্মসূচির আওতায় খাদি শিল্পীদের জন্য পাকাবাড়ির সংস্থান করছে। শ্রীমতী কলিতাও এই কর্মসূচির এক সুফলভোগী। পাকাবাড়ি হাতে পাওয়ায় এখন তাঁর পরিবারে আনন্দ ফিরেছে।
কমিশনের তথ্যানুযায়ী, শ্রীমতী কলিতা গত ১৫ বছর ধরে খাদি মেশিন পরিচালনা করেন। ৩ জন ছেলেমেয়েকে নিয়ে গত ১৫ বছরে তাঁকে ১৪ বার বাড়ি পাল্টাতে হয়েছে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে প্রত্যেকবারই তাঁর অস্থায়ী আস্থানাগুলি ব্রহ্মপুত্র নদের জলে ভেসে গেছে। এরপর, শ্রীমতী কলিতা নলবাড়ি জেলায় তাপাবরি গ্রামে তাঁর স্থায়ী ঠিকানা খুঁজে পেয়েছেন। এখানেই কমিশন তাঁকে পাকাবাড়ির বন্দোবস্ত করে দিয়েছে।
কমিশনের চেয়ারম্যান শ্রী বিনয় কুমার সাক্সেনা বলেছেন, খাদি শিল্পীদের জীবন-জীবিকার সংস্থানে কমিশন সর্তবদাই সচেষ্ট রয়েছে। এই লক্ষ্যে কমিশন প্রধানমন্ত্রীর ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ’ পরিকল্পনাকে অনুসরণ করে খাদি শিল্পীদের জীবন যাপনে মানোন্নয়নের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
উল্লেখ করা যেতে পারে, শ্রীমতী কলিতা এমন এক দরিদ্র পরিবারের সদস্য, যেখানে আরও ৫ জন সদস্য রয়েছেন। খাদি মেশিন পরিচালনা করে এবং সামান্য একটু চাষের জমিতে কৃষি কাজ করে তাঁর পরিবারের জীবন নির্বাহ হয়। কিন্তু, সাম্প্রতিক বছরগুলিতে ব্রহ্মপুত্র নদের প্রবল বন্যার ফলে অবিরাম ভূমিধ্বসের দরুণ তাঁর জমি ও বাড়ি দুইই নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। এখন খাদি মেশিন চালনাই তাঁর পরিবারের একমাত্র জীবন-জীবিকার উৎস। কমিশনের কাছ থেকে পাকা বাড়ি হাতে পাওয়ায় শ্রীমতী কলিতা সন্তোষ প্রকাশ করে বলেছেন, ‘জীবনে এই প্রথম আমি পাকাবাড়িতে থাকার সুযোগ পাচ্ছি। ব্রহ্মপুত্রের বন্যার দরুণ প্রতি বছরই আমাদের এক জায়গা থেকে অন্যত্র চলতে যেতে বাধ্য হতে হয়েছে। এমনকি, সরকারি কর্তৃপক্ষের কাছ থেকেও দুর্দিনে কোনও সাহায্য পাইনি। তাই, আমার পরিবারকে পাকাবাড়ি দেওয়ার জন্য আমি কমিশনের কাছে কৃতজ্ঞতা জানাই’।
কমিশন উত্তর-পূর্বে গত তিন বছরে শ্রীমতী কলিতার মতো ৪১১টি পরিবারকে পাকাবাড়ি প্রদান করেছে। ওয়ার্কশেড কর্মসূচির আওতায় স্বল্প খরচে কংক্রিটের পাকাবাড়ি বানিয়ে দেওয়া হয়ে থাকে। এ ধরনের প্রতিটি বাড়ি নির্মাণে খরচ পড়ে ৬৬ হাজার টাকা। আইআইটি গুয়াহাটি স্বল্প খরচের এই বাড়িগুলির নক্শা প্রণয়ন করেছে। প্রতিটি বাড়ি নির্মাণে কমিশন ৬০ হাজার টাকা এবং বাকি ৬ হাজার টাকা সংশ্লিষ্ট খাদি শিল্পী যে প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন, সেই খাদি প্রতিষ্ঠান থেকে মেটানো হয়। সূত্র – পিআইবি।