খবরইন্ডিয়াঅনলাইন, নয়াদিল্লিঃ কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডাঃ হর্ষ বর্ধন আজ ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা হু-র কার্যকরী পর্ষদের ১৪৭ তম অধিবেশনে পৌরহিত্য করেছেন।
তাঁর বক্তব্যের উল্লেখযোগ্য দিকগুলি হল-
হু-র কার্যকরী পর্ষদের বিশিষ্ট সদস্য,
মাননীয় মন্ত্রী,মহামান্য ও অন্যান্য সদস্য দেশের প্রতিনিধিবৃন্দ,
হু-র মহানির্দেশক, হু-র দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক অধিকর্তা, অন্যান্য অঞ্চলের আঞ্চলিক অধিকর্তা,
রাষ্ট্রসংঘের একাধিক সংগঠনের প্রধান ও প্রতিনিধিবৃন্দ, সহকারী সংস্থা,
এবং বিশ্বের স্বাস্থ্য পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত কর্মীবৃন্দ !
আজ আমরা হু-র কার্যকরী পর্ষদের ১৪৭ তম অধিবেশনে মিলিত হয়েছি। এখন আমি যাদেরকে স্বাগত জানালাম আপনারা সকলেই জানেন যে আমরা কি অভূতপূর্ব সময়ের মধ্যে রয়েছি।
তবুও আমি বলব যে ২০২০ সাল হল সম্মিলিতভাবে কাজ করার বছর।
মানবজাতি ইতিমধ্যেই দারিদ্র, ক্ষুধা, বৈষম্য, জলবায়ু পরিবর্তন সহ একাধিক সমস্যার বিরুদ্ধে লড়াই করেছে।এমনকি দূষণ, হিংসা, যুদ্ধ, রোগ এবং এখন মহামারী যা আমাদের অন্তঃস্থলকে নাড়িয়ে দিয়েছে। কিন্তু আমরা বিশ্বের জাতি হিসেবে একসঙ্গে কাজ করছি। কারণ আমরা বিহ্বলগ্রস্ত নয়।
আমরা আশা এবং লক্ষ্য অর্জনের জন্য সংগ্রামকেই বেছে নিয়েছি। আমরা আরও ভালো ভবিষ্যৎ গঠনের পথ বেছে নিয়েছি।
সকলের জন্য সুস্বাস্থ্য ছাড়া কখনোই ভালো ভবিষ্যৎ গঠন করা সম্ভব নয়। এই শিক্ষায় আমরা এতদিন শিখেছি এবং এখন আবার নতুন করে এই শিক্ষায় নিচ্ছি।
ভারতে আমরা একে অপরকে আয়ুষ্মান ভব হিসেবে আর্শিবাদ করি, যার অর্থ দীর্ঘ এবং স্বাস্থ্যকর জীবন। এটির সারমর্ম হল জীবন এবং অস্তিত্বের বৃদ্ধি। এটিই আমাদের সংস্থা- বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার- সারমর্ম। এই সংস্থায় আমাদের সকলকে একসঙ্গে আবদ্ধ করে রাখে। যেকারণে আমরা আজ এখানে একসঙ্গে হতে পেরেছি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অর্ন্তভুক্ত দেশের প্রতিনিধিদের একই দর্শণ রয়েছে : সর্বোপরি স্বাস্থ্য ব্যবস্থা।
এখানে প্রতিটি সদস্য দেশের প্রতিনিধিরা আমার সঙ্গে একমত হবেন যে, এই পরিস্থিতিতে মানবজাতি প্রতিকূলতার মধ্যেও একে অপরের পরিপূরক হয়ে ওঠার প্রচেষ্টার মাধ্যমে সমস্যা জয়ের প্রয়াস চালিয়েছে।
আমরা হু-র এই নীতিতে বিশ্বাস করি যে জাতি, ধর্ম, রাজনৈতিক বিশ্বাস, অর্থনৈতিক বা সামাজিক অবস্থার পার্থক্য ছাড়াই সর্বোচ্চ স্বাস্থ্য পরিষেবার মানোন্নয়নের মাধ্যমে প্রতিটি মানুষের অন্যতম মৌলিক অধিকারকে সুনিশ্চিত করা। সুতরাং আমরা সদস্য দেশগুলির সঙ্গে কাজ করার ক্ষেত্রে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, জনস্বাস্থ্যে দায়বদ্ধতার সঙ্গে দক্ষ-কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণে দায়বদ্ধ।
এই মহামারী স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করা এবং তার প্রস্তুতিকে উপেক্ষা করার পরিণতি সম্পর্কে মানবজাতিকে সচেতন করে দিয়েছে। বিশ্বের এমন সংকটের সময় ঝুঁকিপূর্ণ ব্যবস্থাপনার জন্য বিশ্ব জনস্বাস্থ্যে বিনিয়োগের বিষয়টি পুনরায় গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এক্ষেত্রে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অংশীদারিত্ব প্রয়োজন দেখা দিয়েছে।
আমি নিশ্চিত যে প্রতিটি সদস্য দেশের সঙ্গে আমাদের অবিচ্ছিন্ন যোগাযোগ রয়েছে। একে অপরের সঙ্গে অংশীদারিত্বের মাধ্যমে স্বাস্থ্যক্ষেত্রকে শক্তিশালী করে তুলতে হবে। সুস্থায়ী উন্নয়নের লক্ষ্যে সর্বজনীন স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার দিকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন।
ভারতের স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবে আমি এখানে উল্লেখ করতে পারি যে দক্ষিণপূর্ব এশীয় অঞ্চলে এবং ভারতে স্বাস্থ্য পরিষেবা ক্ষেত্রে প্রত্যেকের সামর্থের মধ্যে উন্নতমানের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা পৌঁছে দেওয়ার জন্য নিরন্তর প্রয়াস চালানো হচ্ছে। এক্ষেত্রে জনকল্যাণমুখী কর্মসূচিকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। উচ্চমানের প্রয়োজনীয় ওষুধ এবং ডিজিটাল স্বাস্থ্য ব্যবস্থা, প্রযুক্তিগত সহযোগিতা, গবেষণা, উদ্ভাবন ক্ষেত্রে প্রতিনিয়ত একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে।
আজ এই অধিবেশনে একটি অ্যাজেন্ডা রয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সদ্য সমাপ্ত অধিবেশন ও কার্যনির্বাহী পর্ষদের বৈঠকে বাজেট এবং প্রশাসনিক কমিটির প্রতিবেদন, প্রশাসনিক বিষয় ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা চলেছে। অবশেষে আমি বলতে পারি গত ৭ দশকে এই সংস্থা একাধিক স্বাস্থ্য সমস্যার মোকাবিলা কাটিয়ে উঠতে সফল হয়েছে। আগামীদিনেও সকলের অংশগ্রহণের সাহায্যে বর্তমানের এই সমস্যা কাটিয়ে ওঠা সম্ভবপর হবে এবং বিশ্ব পরিবারের জয় সুনিশ্চিত হবে। সূত্র – পিআইবি।