ভারতের জাতীয় কৃমিনাশক দিবসে প্রমাণ-ভিত্তিক প্রভাব

Published By: Khabar India Online | Published On:

খবরইন্ডিয়াঅনলাইন, নয়াদিল্লিঃ মাটি থেকে সংক্রমিত হেলমিনথিয়াসিস (এসটিএইচ), যা অন্ত্রের পরজীবী কৃমি সংক্রমণ হিসেবে পরিচিত। এটি জনস্বাস্থ্যের পক্ষে খুবই গুরুত্বপূর্ণ উদ্বেগের কারণ। এগুলি শিশুদের শারীরিক বৃদ্ধি এবং সুস্বাস্থ্যের ওপর ক্ষতিকারক প্রভাব বিস্তার করে। এমনকি রক্তাল্পতা এবং অপুষ্টি জনিত সমস্যার কারণ হতে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা হু বস্তি অঞ্চলে এবং কিশোর বয়সীদের শরীর থেকে কৃমি সংক্রমণ দূর করতে ও তাদের আরও ভালো পুষ্টি, স্বাস্থ্যকর জীবন প্রদানের জন্য নিরলস কৃমি নাশকের পরামর্শ প্রদান করে চলেছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রক জাতীয় কৃমি নাশক দিবসটি ২০১৫ সাল থেকে উদযাপন করে আসছে। বিদ্যালয় এবং অঙ্গনওয়াড়ী কর্মীদের মাধ্যমে এই দিনটি বিশেষভাবে উদযাপিত হয়। এ উপলক্ষে একাধিক কর্মসূচিও গ্রহণ করা হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দ্বারা অনুমোদিত অ্যালবেনডাজল ট্যাবলেটগুলি শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের কৃমি নাশকের জন্য প্রদান করা হয়। মাস ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এমডিএ)এর অঙ্গ হিসেবে বিশ্বব্যাপি এই কর্মসূচি পালিত হয়। এই বছরের শুরুর দিকে কৃমি নাশক কার্যক্রমের আওতায় ২৫টি রাজ্য/কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ১১ কোটি শিশু এবং কিশোর-কিশোরীদের অ্যালবেনডাজল ট্যাবলেট দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কোভিড মহামারীর কারণে এখন এই কর্মসূচি বন্ধ রয়েছে।

আরও পড়ুন -  আসছে পৌষকালী পুজো

২০১২ সালে মাটি সংক্রমণ হেলমিনথিয়াসিস সম্পর্কে প্রকাশিত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদন অনুসারে ভারতে ১-১৪ বছর বয়সী ৬৪ শতাংশ শিশুরই এসটিএইচ সংক্রমণের প্রবণতা ছিল। সঠিকভাবে শৌচকর্ম এবং স্বাস্থ্যকর ব্যবস্থাপনার সীমাবদ্ধতার জন্য এসটিএইচ-এর ঝুঁকি অনুমান করা যায়। ভারতে এসটিএইচ-এর কারণ সঠিকভাবে নির্ধারণের জন্য স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রক দেশব্যাপি একটি এসটিএইচ ম্যাপিং-এর কাজ শুরু করে। এই কাজ পরিচালনার জন্য নোডাল এজেন্সি হিসেবে জাতীয় রোগ নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র (এনসিডিসি)কে দায়িত্ব দেওয়া হয়। ২০১৬ সালে এনসিডিসি এই এসটিএইচ ম্যাপিং-এর কাজ সম্পন্ন করে। তাদের তথ্য থেকে দেখা গেছে মধ্যপ্রদেশে ১২.৫ শতাংশ শুরু করে তামিলনাডুতে ৮৫ শতাংশ পর্যন্ত এই এসটিএইচ-এর প্রভাব বিস্তৃত রয়েছে।

আরও পড়ুন -  Spain-Morocco: কোয়ার্টার ফাইনালে মরক্কো, ইতিহাস রচনা করে, স্পেনকে হারিয়ে

এই সমস্যা মোকাবিলায় স্বাস্থ্য মন্ত্রক ধারাবাহিক প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে। সম্প্রতি এনসিডিসি এবং এই কর্মসূচির সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন সংস্থার সাহায্যে একটি পরবর্তী সমীক্ষা শুরু হয়েছে। এখনও পর্যন্ত ১৪টি রাজ্যে এই সমীক্ষার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। মন্ত্রকের নিযুক্ত উচ্চপর্যায়ের বৈজ্ঞানিক কমিটি এই কাজ পরিচালনা করতে সাহায্য করছে। এই সমীক্ষা থেকে দেখা গেছে ছত্তিশগড়, হিমাচলপ্রদেশ, মেঘালয়, সিকিম, তেলেঙ্কানা, ত্রিপুরা, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ এবং বিহারে এসটিএইচ কৃমির প্রকোপ যথেষ্ট পরিমাণে হ্রাস পেয়েছে। যদিও এক্ষেত্রে আরও গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজন আছে বলে জানিয়েছে এনসিডিসি।

আরও পড়ুন -  নদীতে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা, মহানন্দা নদীতে !

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রক জাতীয় কৃমি দিবসের মূল উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্য নারী শিশু কল্যাণ মন্ত্রক, শিক্ষা মন্ত্রক এবং হু-র সাহায্য নিয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রক কোভিড-১৯ মহামারীর মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাপনা গ্রহণে এবং স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদানে প্রতিশ্রুতি বদ্ধ। বিদ্যালয় ও অঙ্গনওয়াড়ী কেন্দ্র বন্ধ থাকায় সামনের সারির স্বাস্থ্যকর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের অ্যালবেনডাজল ট্যাবলেট পৌঁছে দেওয়ার বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। একইসঙ্গে কোভিড-১৯ সুরক্ষা বিধি মেনে গ্রামীণ স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা এবং পুষ্টি দিবস সম্পর্কে আগস্ট থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত প্রচারও চালানো হয়েছে। মহামারী সম্পর্কিত সংক্রমণ প্রবণতা কমাতে এবং দেশে কৃমি নাশক কর্মসূচি সম্পর্কে ধারাবাহিক প্রচার চালাতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সূত্র – পিআইবি।