খবরইন্ডিয়াঅনলাইন, নয়াদিল্লিঃ এই প্রথমবার ভার্চ্যুয়াল পদ্ধতিতে রাষ্ট্রপতি শ্রী রাম নাথ কোবিন্দ ২০২০’র জাতীয় ক্রীড়া ও দুঃসাহসিক ক্রীড়া পুরস্কার প্রদান করেছেন। আজ রাষ্ট্রপতি ভবনে এই উপলক্ষে শ্রী কোবিন্দ বলেন, পুরস্কার জয়ীদের সাফল্য ক্রীড়া ক্ষেত্রে ভারতের বিপুল সম্ভাবনার কথাই স্মরণ করিয়ে দেয়।
ক্রীড়া ক্ষেত্রের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, ভারত শীঘ্রই ক্রীড়া ক্ষেত্রে মহাশক্তিধর দেশ হয়ে উঠবে এবং ২০২৮ সালের অলিম্পিক প্রতিযোগিতায় পদকজয়ী প্রথম ১০টি দেশের মধ্যে জায়গা করে নেবে বলে প্রত্যাশা রয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘আমি নিশ্চিত, আমরা এই লক্ষ্য পূরণে সক্ষম হবো’। জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে আধিকারিক, ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব ও বিভিন্ন ক্রীড়া ক্ষেত্রের প্রশিক্ষকদের এক সমাবেশে রাষ্ট্রপতি বলেন, সারা বিশ্বে ক্রীড়া ক্ষেত্রেও কোভিড-১৯ এর প্রভাব পড়েছে। এ বছরের অলিম্পিক প্রতিযোগিতা পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। এমনকি, দেশেও খেলাধূলায় প্রভাব পড়বে। খেলোয়াড় ও প্রশিক্ষকরা অনুশীলন করতে না পারার জন্য এবং প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে না পারায় স্বাভাবিকভাবেই কিছুটা হতাশ হয়েছেন। অবশ্য, মানসিক এই অবসাদ থাকাতে খেলোয়াড় থেকে প্রশিক্ষকরা একাধিক অনলাইন কোচিং ও ওয়েবিনারে নিজেদের যুক্ত রেখেছেন। ক্রীড়া সম্পর্কিত বিভিন্ন কর্মকান্ডকে মহামারী সত্ত্বেও অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে আজকের এই অনুষ্ঠান তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠেছে বলে রাষ্ট্রপতি অভিমত প্রকাশ করেন।
দেশে বিভিন্ন ধরনের খেলাধূলার প্রসার ঘটায় খুশি প্রকাশ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, আজ যাঁরা পুরস্কার পেয়েছেন, তাঁরা ২০টিরও বেশি খেলাধূলায় প্রতিনিধিত্ব করেন। দেশের পরম্পরাগত খেলাধূলা, যেমন – কাবাডি, খোখো প্রভৃতির ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তার কথা উল্লেখ করে শ্রী কোবিন্দ বলেন, এই খেলাধূলা সাধারণ মানুষকে ক্রীড়া ক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত করতে সাহায্য করে। বর্তমানে দেশে ক্রিকেট ও ফুটবল ছাড়াও ভলিবল ও কাবাডির বিভিন্ন লিগ-ভিত্তিক প্রতিযোগিতা ক্রমশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে এবং তার প্রসার ঘটছে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, সংশ্লিষ্ট সবপক্ষকে সামিল করে ক্রীড়া সংস্কৃতির প্রসার ঘটানো সম্ভব।খেলাধূলার প্রসার ঘটানোর দায়িত্ব কেবল সরকারের একার নয়। দেশ গঠনের লক্ষ্যে ক্রীড়া ক্ষেত্রে বিনিয়োগ এক সমবেত প্রয়াস, যা পক্ষান্তরে সমাজ ব্যবস্থাকেই সুদৃঢ় করে। ক্রীড়া ক্ষেত্রের সার্বিক উন্নয়ন ও প্রসারে একাধিক কর্পোরেট সংস্থা, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে বলেও তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন। ভারত খুব শীঘ্রই সমবেত প্রচেষ্টার মাধ্যমে ক্রীড়া ক্ষেত্রে অগ্রণী দেশ হয়ে উঠবে বলেও শ্রী নাইডু আশা প্রকাশ করেন।
ক্রীড়া ক্ষেত্রে অসামান্য সাফল্য ও অবদানের স্বীকৃতি-স্বরূপ প্রতি বছর জাতীয় পুরস্কার দেওয়া হয়। চার বছর ধরে ক্রীড়া ক্ষেত্রে অসামান্য সাফল্যের নজির রাখার জন্য একজন ক্রীড়া ব্যক্তিত্বকে রাজীব গান্ধী খেলরত্ন পুরস্কার দেওয়া হয়। অর্জুন পুরস্কার দেওয়া হয় চার বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে খেলাধূলায় বিশেষ কৃতিত্ব অর্জনের জন্য। মর্যাদাপূর্ণ আন্তর্জাতিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতাগুলিতে পদকজয়ীদের উপযুক্ত করে তোলার স্বীকৃতি-স্বরূপ প্রশিক্ষক হিসাবে দ্রোণাচার্য পুরস্কার দেওয়া হয়। সারা জীবনব্যাপী খেলাধূলায় অসামান্য অবদান রাখার স্বীকৃতি-স্বরূপ ধ্যানচাঁদ পুরস্কার দেওয়া হয়। বেসরকারি ও রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা সহ ক্রীড়া ক্ষেত্রের প্রসার ও সার্বিক উন্নয়নে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি-স্বরূপ এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে ব্যক্তি-বিশেষকেও রাষ্ট্রীয় খেল প্রত্যুৎসাহ পুরস্কার দেওয়া হয়। আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় প্রতিযোগিতায় সার্বিকভাবে সেরা সাফল্যের অধিকারি বিশ্ববিদ্যালয়কে মৌলানা আবুল কালাম আজাদ ট্রফি দিয়ে পুরস্কৃত করা হয়। এছাড়াও, দেশে সাধারণ মানুষের মধ্যেও দুঃসাহসী ক্রীড়ার মানসিকতা গড়ে তোলার জন্য তেনজিন নোরগে জাতীয় দুঃসাহসিক ক্রীড়া পুরস্কার দেওয়া হয়ে থাকে।
আজকের এই অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী শ্রী কিরেণ রিজিজু সহ দেশের ১১টি ক্রীড়া কেন্দ্রের আধিকারিকরাও উপস্থিত ছিলেন। সূত্র – পিআইবি।