খবরইন্ডিয়াঅনলাইন, নয়াদিল্লিঃ উপ-রাষ্ট্রপতি শ্রী এম ভেঙ্কাইয়া নাইডু আগামী দিনে ভারতকে আত্মনির্ভর করে তুলতে দেশের যুবসমাজের মধ্যে শিল্পোদ্যোগের মনোভাব গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, আমাদের অবশ্যই দেশের প্রতিটি নাগরিকের মধ্যে যে শিল্পসংক্রান্ত মেধা ও কারিগরি দক্ষতা রয়েছে, তা যথাসম্ভব কাজে লাগাতে হবে এবং আত্মনির্ভর হয়ে ওঠার ক্ষেত্রে স্থানীয় সম্পদের সদ্ব্যবহারের পাশাপাশি, বৃহত্ততর অর্থে মানবজাতির সেবায় ব্রতী হতে হবে। সামাজিক অবস্থার উন্নতি-সাধন এবং ভূমিদান আন্দোলনের ক্ষেত্রে গান্ধীজীর আদর্শ প্রচারে আচার্য বিনোবা ভাবের অবদান নিয়ে এক ওয়েবিনারে শ্রী নাইডু ভাষণ দিচ্ছিলেন।
এক সক্ষম ভারত, এক স্বভিমানী ভারত এবং এক আত্মনির্ভর ভারত গঠনের যে স্বপ্ন বিনোবা ভাবে এবং গান্ধীজী রেখেছিলেন, তার পূর্ণ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে উপ-রাষ্ট্রপতি বলেন, আত্মনির্ভর হয়ে ওঠার ক্ষেত্রে ভারতের মূল ভাবনার সঙ্গে অতিশয় জাতীয়তাবাদী ও সংরক্ষণবাদিতার কোনও সম্পর্ক নেই। বরং, এর সঙ্গে যুক্ত রয়েছে বিশ্ব কল্যাণে আরও গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হয়ে ওঠার।
মহাত্মা গান্ধীর চিরন্তন বাণীর কথা উল্লেখ করে শ্রী নাইডু বলেন, গান্ধীজী আজও আমাদের দূত হিসাবে রয়েছেন। কারণ, তিনি ছিলেন একজন চিন্তাশীল ব্যক্তিত্ব, যিনি নিরন্তর তাঁর কর্মকান্ডের গভীরতা যাচাই করেছেন।
শ্রী নাইডু বলেন, আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রাম কেবল একটি রাজনৈতিক আন্দোলনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না বরং সেই সংগ্রাম ছিল জাতীয় স্তরে পুনর্বিপ্লব এবং সমাজ-সংস্কৃতির পুনর্জাগরণ। তিনি আরও বলেন, আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম উদ্দেশ্যই ছিল সর্বসাধারণের ক্ষমতায়ন। এ ব্যাপারে গান্ধীজী সাম্রাজ্যবাদী শাসনের বিরুদ্ধে ভারতকে একজোট হওয়ার, নিজেদের সংস্কৃতি, ভাষা ও সহজাত শক্তিগুলির প্রতি গর্ববোধ করার আহ্বান জানিয়েছিলেন।
আচার্য বিনোবা ভাবেকে গান্ধীজীর এক আদর্শ অনুরাগী হিসাবে বর্ণনা করে শ্রী নাইডু বলেন, আচার্য ভাবে বিশ্বাস করতেন ভারতীয়ত্বের মর্ম হ’ল যত্নবান তথা ত্যাগ ও সেবার অনুরূপ। আচার্য ভাবের ভূমিদান আন্দোলন প্রসঙ্গে উপ-রাষ্ট্রপতি বলেন, গান্ধীজীর মতো তিনিও কোনও রকম হিংসা ও বিক্ষোভ প্রদর্শন ছাড়াই পরিবর্তনের পক্ষে জোরালো সওয়াল করেছিলেন। বিনোবা ভাবেকে ভারতীয় জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের এক প্রেরণাদায়ক ব্যক্তিত্ব হিসাবে বর্ণনা করে শ্রী নাইডু বলেন, তিনি দেশের মানুষের স্বার্থে আর্থ-সামাজিক অগ্রগতির এক নতুন দিশা দেখিয়েছিলেন।
বর্তমান কোভিড-১৯ সংক্রান্ত স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে জরুরি অবস্থার কথা উল্লেখ করে উপ-রাষ্ট্রপতি বলেন, কঠিন এই সময়ে আমাদের একযোগে এগিয়ে আসতে হবে, আমাদের প্রয়াসগুলির মধ্যে সেতুবন্ধন করতে হবে, যাতে কেবল ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধই নয়, বরং গান্ধীবাদী উপায়ে সেই সমস্ত মানুষের প্রতি সান্ত্বনা ও সহ-মর্মিতা দেখাতে হবে, যাঁরা লকডাউনের সময় সর্বাপেক্ষা বেশি প্রভাবিত হয়েছেন। মানব চেতনা এ জাতীয় প্রতিক্রিয়ার সময় তাঁর মহৎ অভিব্যক্তি খুঁজে পায় বলেও উপ-রাষ্ট্রপতি অভিমত প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, বর্তমান সময়ে যে সমস্ত সরকারি ও অ-সরকারি প্রতিষ্ঠান মানুষের সেবায় নিরন্তর কাজ করে চলেছে, তাদের প্রচেষ্টাগুলিকে অভিনন্দন জানানোর এটাই শ্রেষ্ঠ সময়।
এই উপলক্ষে হরিজন সেবক সংঘের সভাপতি ডঃ শঙ্কর কুমার সান্যাল, সঙ্ঘের সম্পাদক ডঃ রজনীশ কুমার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সূত্র – পিআইবি।