খবরইন্ডিয়াঅনলাইন, নয়াদিল্লিঃ কেন্দ্রীয় পর্যটন মন্ত্রক স্বাধীনতা দিবস উদযাপন উপলক্ষে দেখো আপনা দেশ সিরিজের আওতায় ‘জালিয়ানওয়ালা বাগ : স্বাধীনতা সংগ্রামের এক মোড়’ শীর্ষক চতুর্থ ওয়েবিনারের আয়োজন করে। পর্যটন মন্ত্রকের এটি ৪৮তম ওয়েবিনার সিরিজ। এই সিরিজটি উপস্থাপন করেন দ্য পার্টিশান মিউজিয়াম তথা ‘জালিয়ানওয়ালা বাগ, ১৯১৯’ বইয়ের লেখক এবং দ্য আর্টস অ্যান্ড কালচারাল হেরিটেজ ট্রাস্টের চেয়ারপার্সন শ্রীমতী কেশরী দেশাই। অনুষ্ঠানে শ্রীমতী দেশাই জালিয়ানওয়ালা বাগে শত শত নিরীহদের হত্যার কাহিনী তুলে ধরেন। ব্রিটিশ রাজত্বের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সামিল মানুষদের কিভাবে গণহত্যা করা হয়েছিল এবং সেই ঘটনা সারা দেশকে নাড়িয়ে দিয়েছিল, তারই বর্ণনা তুলে ধরেন তিনি। ‘এক ভারত শ্রেষ্ঠ ভারত’ কর্মসূচির আওতায় ভারতের সমৃদ্ধশালী বৈচিত্র্যকে তুলে ধরতেই পর্যটন মন্ত্রক এই ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
শ্রীমতী দেশাই অনুষ্ঠানে প্রথম বিশ্ব যুদ্ধের সময় ভারতীয় সেনারা কিভাবে ব্রিটিশদের হয়ে লড়াই করেছিলেন এবং এ দেশে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিকতার কাহিনী তুলে ধরেন। একইসঙ্গে, ১৯১৮ থেকে ১৯২০ সালের মধ্যে ভারতে ইনফ্লুয়েঞ্জা মহামারীর কারণে লক্ষ লক্ষ মানুষের প্রাণহানির ঘটনা ব্যাখ্যা করেন।
জালিয়ানওয়ালা বাগ হত্যাকাণ্ডের আগে অমৃতসর এবং ভারতের অন্যান্য অংশে রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতি সম্পর্কেও ব্যাখ্যা দেন শ্রীমতী দেশাই। তিনি রাওলাত আইন বা কালা আইন সম্পর্কেও নানা ঘটনা তুলে ধরেন। তৎকালীন সময়ে ব্রিটিশ পুলিশ বাহিনী কিভাবে সাধারণ মানুষের ওপর অত্যাচার চালিয়েছিল, তার নানান ঘটনাও ওয়েবিনারে জানান তিনি। গান্ধীজি এই ধরনের নিপীড়ক আইনের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষকে নিয়ে যে সত্যাগ্রহ আন্দোলনের ডাক দিয়েছিলেন তার কথাও উল্লেখ করেন শ্রীমতী দেশাই। অনুষ্ঠানে তিনি জানান, জালিয়ানওয়ালা বাগে সেই সময় বহু মানুষ শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের উদ্দেশ্যে জড়ো হয়েছিলেন। কিন্তু ব্রিটিশ শাসকরা উদ্বিগ্ন হয়ে সাধারণের মানুষের ওপর নির্বিচারে গুলি চালায়। এই ঘটনার পর সারা দেশে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এই ঘটনার প্রতিবাদে ‘নাইটহুড’ উপাধি ত্যাগ করেছিলেন।
ওয়েবিনারে কেন্দ্রীয় পর্যটন মন্ত্রকের অতিরিক্ত মহানির্দেশক শ্রীমতী রুপিন্দর ব্রার অমৃতসরের দর্শনীয় স্থান ভ্রমণ সম্পর্কে ব্যাখ্যা করেন। এই স্থানগুলি ভ্রমণের জন্য বিমান, রেল ও সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার যথেষ্ট উন্নতি করা হয়েছে বলেও তিনি জানান। শ্রীমতী ব্রার বলেন, সূর্যাস্তের আগে প্রতিদিন ওয়াঘা সীমান্তে ‘বিটিং রিট্রিট’ অনুষ্ঠান সাধারণের মানুষের কাছে বিশেষ আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু।
কেন্দ্রীয় পর্যটন মন্ত্রক দেশের পর্যটনের বিকাশে একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। দর্শকদের সুবিধার্থে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধারও ব্যবস্থা করেছে। তার ব্যতিক্রম নয় জালিয়ানওয়ালা বাগও। বর্তমানে জালিয়ানওয়ালা বাগে সংস্কারের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। সেখানে যাদুঘর, গ্যালারি সাজিয়ে তোলা হয়েছে। জালিয়ানওয়ালা বাগের স্মৃতিসৌধে সাউন্ড অ্যান্ড লাইট শো-র ব্যবস্থা করা হয়েছে।
দেখো আপনা দেশ ওয়েবিনারের সিরিজের আওতায় অনুষ্ঠানগুলি এখন থেকে পর্যটন মন্ত্রকের বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখা যায়। পর্যটন মন্ত্রকের ইউটিউব চ্যানেলটি হল – https://www.youtube.com/channel/UCbzIbBmMvtvH7d6Zo_ZEHDA/featured
সূত্র – পিআইবি।