খবরইন্ডিয়াঅনলাইন, নয়াদিল্লিঃ কেন্দ্রীয় মৎস্যচাষ, পশুপালন ও দুগ্ধ উৎপাদন দপ্তরের মন্ত্রী শ্রী গিরিরাজ সিং আজ পশুপালন পরিকাঠামো উন্নয়ন তহবিল বাস্তবায়নের জন্য নির্দেশিকার সূচনা করেছেন। এই তহবিলের মূল্য হল ১৫ হাজার কোটি টাকা। ২৪শে জুন কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা আত্মনির্ভর ভারত অভিযানের আওতায় এই তহবিল অনুমোদন করেছিল। এদিনের এই সূচনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী শ্রী প্রতাপ চন্দ্র সারেঙ্গি।
অনুষ্ঠানে পশুপালন পরিকাঠামো উন্নয়ন তহবিলের ঘোষণার জন্য প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীকে ধন্যবাদ জানিয়ে শ্রী গিরিরাজ সিং বলেন, ভারতে দুগ্ধ উৎপাদনের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। দেশে বিভিন্ন জাতের গরুর সংখ্যা বাড়ানোর দিকে বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে বলেও তিনি জানান। এছাড়াও, দুগ্ধজাত গরুর বংশবৃদ্ধির কর্মসূচি চলছে।তিনি বলেন উৎপাদিত দুধের প্রক্রিয়াজাতকরণের উপরও জোর দেওয়া হয়েছে। সেই অনুযায়ী প্রক্রিয়াজাতকরণের ক্ষেত্রে বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে সরকার কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। ২০২৪ সালের মধ্যে ভারতে দুগ্ধ উৎপাদনের মাত্রা ১৮৮ মিলিয়ন টনে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। দেশে উৎপাদিত দুধের মাত্র ২০ থেকে ২৫ শতাংশই প্রক্রিয়াজাত করা হয়। তিনি বলেছিলেন সরকার এটিকে ৪০ শতাংশে উন্নীত করতে কাজ করছে। দুগ্ধ পরিকাঠামো উন্নয়ন তহবিল (ডিআইডিএফ) বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। বিশেষত সমবায়গুলির পরিকাঠামোগত উন্নয়নের এই অর্থ খরচ করা হবে। পশুপালন পরিকাঠামো উন্নয়ন তহবিল (এএইচআইডিএফ)টি বেসরকারী ক্ষেত্রের জন্য তৈরি করা হয়েছে। একবার পরিকাঠামো স্থাপন হয়ে গেলে আরও বেশি করে দুধ প্রক্রিয়াজাত করা সম্ভবপর হবে। ফলস্বরূপ, লক্ষ লক্ষ কৃষক এবং দুগ্ধচাষীরা উপকৃত হবেন বলে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জানান। এতে ভারতের দুধ উৎপাদন বাড়িয়ে তুলবে। বর্তমানে ভারতে দুধের রফতানির পরিমাণ নগণ্যই। তাই দুগ্ধ উৎপাদন ক্ষেত্রে ভারতকে নিউজিল্যান্ডের সমান স্তরে পৌঁছাতে হবে। কোভিড-১৯ লকডাউন চলাকালীন দুগ্ধ উৎপাদকরা দুধ সরবরাহ অব্যাহত রেখেছিলেন যা “অত্যন্ত সন্তোষজনক” বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
কেন্দ্রীয় সরকার দুগ্ধ পরিকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য দুগ্ধ সমবায়ীদের উৎসাহিত করে তুলতে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এজন্য এএইচআইডিএফ গঠন করা হয়েছে। এটি অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগ এবং বেসরকারী সংস্থাগুলিকে প্রয়োজনীয় সাহায্য যোগাবে। এই প্রকল্পের আওতায় কৃষি উৎপাদক সংগঠন, এমএসএমই, বিভাগের ৮টি সংস্থা, বেসরকারী সংস্থা এবং বেসরকারী উদ্যোক্তারা লাভবান হবে। প্রকল্পের ন্যূনতম ১০ শতাংশ খরচ তাদের বহন করতে হবে। বাকি ৯০ শতাংশ ঋণ আকারে ব্যাংকগুলি সরবরাহ করবে। ভারত সরকার ঋণের ক্ষেত্রে তিন শতাংশ ছাড় দেবে। মূলধন দুই বছর পর্যন্ত শোধ করতে হবে না। তারপরে ছয় বছরের মধ্যে সমস্ত ঋণ পরিশোধ করতে হবে।
ভারত সরকার এই উদ্দেশ্যে ৭৫০ কোটি টাকার ঋণ নিশ্চয়তা প্রকল্প তহবিল গঠন করবে। এটি পরিচালনা করবে নাবার্ড। এমএসএমই-র আওতাধীন সমস্ত অনুমোদিত প্রকল্পগুলি ঋণের জন্য আবেদন করতে পারবে। আগ্রহী ঋণ গৃহীতারা, তাদের নিজস্ব পরিকাঠামো তৈরি করে এবং নতুন দুগ্ধ ও মাংস প্রক্রিয়াকরণ শিল্প বা এ ধরনের কোনও শিল্প প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ঋণের জন্য আবেদন করতে পারেন। ক্ষুদ্র শিল্প উন্নয়ন ব্যাংক (সিডিবিআই)এর ‘উদ্যোমী পোর্টালে’র মাধ্যমে ঋণের জন্য আবেদন করা যাবে।
এই শিল্পে বড় আকারের বেসরকারী বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে। তাই সরকারের গঠিত ১৫ হাজার কোটি টাকার তহবিল প্রকল্পটি বেসরকারী বিনিয়োগকারীদের আকর্ষিত করবে এবং তারা এই ক্ষেত্রে বিনিয়োগে এগিয়ে আসবেন। এই শিল্পে বিনিয়োগ বাড়লে কৃষকদের আয় বাড়বে। কৃষকরা দুগ্ধ সমবায়গুলিতে যোগদান করলে বা কৃষকদের কাছ থেকে বেসরকারী সংস্থাগুলি দুধ কিনে নিলে কৃষকদের দুধ বিক্রয় সহজ হবে এবং তাদের আয় সুনিশ্চত হবে। এতে দুগ্ধের বাজারের পরিধিও প্রসারিত হবে। প্রত্যক্ষ ও অপ্রত্যক্ষ ভাবে ৩৫ লক্ষ লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে।
অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী শ্রী প্রতাপ চন্দ্র সারেঙ্গি বলেন কেন্দ্রীয় সরকার দেশের বিভিন্ন রোগ থেকে রক্ষার জন্য দেশে ৫৩.৫ কোটি গৃহপালিত পশুকে টিকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া নিয়েছে। এর মধ্যে ইতিমধ্যে ৪ কোটি প্রাণীকে টিকা দেওয়া হয়েছে।তিনি বলেন, দুগ্ধ প্রক্রিয়াজাতকরণের ক্ষেত্রে পিছিয়ে আছে দেশ। তবে সরকার যে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে তাতে কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করবে এবং দেশে ৫ লক্ষ কোটি টাকার অর্থনীতি গড়ার লক্ষ্য অর্জন সম্ভব হবে বলেও তিনি জানান।
পশুপালন পরিকাঠামো উন্নয়ন তহবিল সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য –
http://pibphoto.nic.in/documents/rlink/2020/jul/p202071601.pdf এই লিঙ্কে ক্লিক করুন।
সূত্র – পিআইবি।