খবরইন্ডিয়াঅনলাইন, নয়াদিল্লিঃ পঞ্চদশ অর্থ কমিশন আজ কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী ডঃ হর্ষ বর্ধন ও মন্ত্রকের উচ্চস্তরীয় আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেছে। এই বৈঠকে কোভিড-১৯-এর পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রক রাজ্য সম্পর্কিত প্রস্তাবগুলি সংশোধনের বিষয়, আর্থিক পরিস্থিতি এবং মন্ত্রকের স্বাস্থ্য সম্পর্কিত উচ্চস্তরীয় দলের পরামর্শের বিষয়গুলি নিয়ে পর্যালোচনা করা হয়।
বৈঠকে পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের চেয়ারম্যান শ্রী এন কে সিং জানিয়েছেন, মহামারীর এই অদ্ভূত পরিস্থিতির ওপর ভিত্তি করে কমিশন সরকারকে তার চূড়ান্ত প্রতিবেদনে স্বাস্থ্য সম্পর্কিত একটি পৃথক অধ্যায় রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে, এই প্রতিবেদন পেশ করার আগে কমিশন মন্ত্রকের কাছ থেকে বেশ কিছু বিষয়ে জেনে নিতে চাইছে। কেন্দ্রীয় সরকার স্বাস্থ্য পরিকাঠামো উন্নয়নে কিভাবে খরচ করছে এবং এই কোভিড-১৯ পরিস্থিতি মোকাবিলায় কি পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে তার সুস্পষ্ট ধারণা থাকা প্রয়োজন। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী ডঃ হর্ষ বর্ধন মন্ত্রকের নেওয়া একাধিক পদক্ষেপের বিষয়গুলি তুলে ধরেন। ২০১৭ সালের জাতীয় স্বাস্থ্য নীতি অনুযায়ী মন্ত্রক স্বাস্থ্য পরিকাঠামো উন্নয়ন ক্ষেত্রে যে একাধিক পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে বৈঠকে তা তুলে ধরা হয়। ২০২৫ সালের মধ্যে জিডিপি-র ২৫ শতাংশ জনস্বাস্থ্যে খরচ করার বিষয়, মোট স্বাস্থ্যক্ষেত্রের খরচের দুই-তৃতীয়াংশ প্রাথমিক স্বাস্থ্যক্ষেত্রে ব্যয় এবং ২০২০ সালের মধ্যে রাজ্য-ভিত্তিক বাজেটে স্বাস্থ্যক্ষেত্রে ৮ শতাংশ ব্যয় বৃদ্ধি – এর মতো বিষয়গুলি নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বর্তমানে জনস্বাস্থ্য ক্ষেত্রে ব্যয়ের ৩৫ শতাংশ কেন্দ্রীয় সরকার ব্যয় করে বলে জানান। তিনি বলেন, বাকি ৬৫ শতাংশ ব্যয়ভার বহন করে রাজ্য সরকার। এই মহামারীর পরিস্থিতিতে জনস্বাস্থ্য ক্ষেত্রে নজরদারি, জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা পরিচালনা, প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা, নাগরিক স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদানের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে বলেও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, প্রতি বছর প্রয়োজনীয়তার ওপর ভিত্তি করে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক স্বাস্থ্য পরিকাঠামো ক্ষেত্রের উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ বৃদ্ধির প্রস্তাব দিয়ে থাকে। প্রাথমিক স্বাস্থ্যক্ষেত্রে পরিকাঠামোগত উন্নয়নে মোট বরাদ্দের ১০ শতাংশ বৃদ্ধি করা হয়েছে বলেও তিনি জানান। অর্থ মন্ত্রকের কাছে স্বাস্থ্যক্ষেত্রে তহবিলের প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে একটি প্রস্তাবও জমা দেয় মন্ত্রক। জনস্বাস্থ্য ক্ষেত্র, প্রয়োজনীয় ওষুধ, কোভিড-পরবর্তী স্বাস্থ্যক্ষেত্রে সংস্কার ইত্যাদি বিষয়ে সহায়তা প্রদানের জন্য যে অর্থের প্রয়োজন তাও কমিশনের কাছে পেশ করা হয়। রাজ্যগুলিতে মেডিকেল কলেজ নির্মাণ, এর সঙ্গে জেলা হাসপাতালগুলির সংস্কার, স্বাস্থ্যক্ষেত্রে কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি,প্রধানমন্ত্রী স্বাস্থ্য সুরক্ষা যোজনা (পিএমএসএসওয়াই)-এর আওতায় সুপার স্পেশালিটি ব্লক চালু করা এবং প্রাথমিক স্বাস্থ্যক্ষেত্রে স্বাস্থ্য পরিষেবাকে আরও শক্তিশালী করার বিষয়গুলির ওপর বৈঠকে বিশেষ জোর দেয় মন্ত্রক।
এদিনের বৈঠকের আলোচিত সমস্ত বিষয়গুলি সম্পর্কে কমিশন, মন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের কাছ থেকে ভালো করে বুঝে নেয়। স্বাস্থ্য মন্ত্রক কমিশনকে জানিয়েছে, ২০২১-২২ অর্থবর্ষ থেকে ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষ পর্যন্ত তাদের ৬.০৪ লক্ষ কোটি টাকার প্রয়োজন রয়েছে। এর পাশাপাশি, এদিন কমিশন সরকারি স্বাস্থ্যক্ষেত্রে ব্যয় বৃদ্ধি, স্বাস্থ্যকর্মীদের আরও পেশাদার করে তোলার প্রয়োজনীয়তার ওপর সহমত পোষণ করে। কমিশন এও আশ্বাস দিয়েছে যে আজকের বৈঠকে উত্থাপিত সমস্ত বিষয়গুলিকে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হবে। সূত্র – পিআইবি।