ধর্মচক্র দিবস উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের মূল অংশ

খবরইন্ডিয়াঅনলাইন, নয়াদিল্লিঃ শ্রদ্ধেয় রাষ্ট্রপতি শ্রী রাম নাথ কোবিন্দজী, অন্যান্য বিশিষ্ট অতিথিবৃন্দ। আষাঢ় পূর্ণিমার শুভেচ্ছা জানিয়ে আমি ভাষণ শুরু করছি। আষাঢ় পূর্ণিমা সকলের কাছে গুরু পূর্ণিমা হিসাবেও পরিচিত। এই দিনটির মমার্থ হ’ল – আমাদের পূজনীয় গুরুদের স্মরণ করা, যাঁরা আমাদের জ্ঞানালোকিত করেছেন। এই অভিব্যক্তি নিয়ে, আমরা ভগবান বুদ্ধকে বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই।

আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে, মঙ্গোলিয়ান কঞ্জুর – এর বেশ কয়েকটি কপি মঙ্গোলিয়া সরকারকে উপহার হিসাবে দেওয়া হয়েছে। মঙ্গোলিয়ান কঞ্জুর সারা মঙ্গলিয়াতেই সর্বস্তরে যথোচিত শ্রদ্ধা পেয়ে থাকে। অধিকাংশ বৌদ্ধ মঠের কাছেই এ ধরনের কপি রয়েছে।

বন্ধুগণ, বগবান বুদ্ধের অষ্টমার্গ বা বাণী বিভিন্ন সমাজ ও দেশের সার্বিক কল্যাণের দিশা দেখায়। ভগবান বুদ্ধের এই বাণী করুণা ও দয়ালুতার গুরুত্বকেই প্রতিফলিত করে। ভগবান বুদ্ধের শিক্ষার মধ্যেই নিহিত রয়েছে যে, চিন্তন ও কর্মপরিকল্পতা উভয়ই । বৌদ্ধ ধর্ম সম্মান ও শ্রদ্ধার শিক্ষা দেয়। মানুষকে সম্মানের শিক্ষা দেয়। দরিদ্র মানুষকে সম্মানের শিক্ষা দেয়। মহিলাদের প্রতি শ্রদ্ধার শিক্ষা দেয়। শান্তি ও অহিংসার বার্তা দেয়। তাই, বৌদ্ধ ধর্মের শিক্ষার মধ্যে এক সুস্থায়ী ও বিকশিত বিশ্বের ভাবার্থ লুকিয়ে রয়েছে।

আরও পড়ুন -  যৌন লালসা মেটান প্রধান শিক্ষক, সিসি ক্যামেরা দেখে, শিক্ষামন্ত্রীকে চিঠি

বন্ধুগণ, সারনাথে তাঁর প্রথম নৈতিক বক্তৃতায় এবং পরবর্তী সময়ে তাঁর শিক্ষা ও আদর্শ সম্পর্কে ভগবান বুদ্ধ দুটি বিষয়ের কথা উল্লেখ করেছিলেন – প্রত্যাশা ও অভিপ্রায়। ভগবান বুদ্ধ প্রত্যাশা ও অভিপ্রায়ের মধ্যে গভীর যোগসূত্র খুঁজে পেয়েছিলেন। প্রত্যাশা থেকেই অভিপ্রায়ের মানসিকতা জন্ম নেয়। ভগবান বুদ্ধের কাছে অভিপ্রায়ের উদ্দেশ্য ছিল – মানুষের সমস্যা দূর করা। আমাদেরকে বর্তমান এই পরিস্থিতিতে সব কিছুর ঊর্ধ্বে উঠে মানুষের মনে প্রত্যাশা সঞ্চারে যা কিছু করণীয়, তা করতে হবে।

বন্ধুগণ, আমি একবিংশ শতাব্দীর ব্যাপারে অত্যন্ত আশাবাদী। আমার মনে এই প্রত্যাশা আমার দেশের নবীন বন্ধুদের, বিশেষ করে যুবসম্প্রদায়ের কাছ থেকে সঞ্চারিত হয়েছে। আপনারা যদি দেখতে চান, প্রত্যাশা, উদ্ভাবন ও করুণা মানুষের যন্ত্রণা দূর করতে পারে, তা হলে তার উজ্জ্বল নিদর্শন হ’ল আমাদের স্টার্ট আপ ক্ষেত্র। মেধাবী তরুণরা বিশ্ব সমস্যাগুলির সমাধানসূত্র খুঁজে বের করার প্রয়াসে ব্রতী রয়েছে। ভারত এখন বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ স্টার্ট আপ উপযোগী দেশে পরিণত হয়েছে। আমি আমার নবীন প্রজন্মের বন্ধুদের ভগবান বুদ্ধের আদর্শগুলিকে আত্মস্থ করার আহ্বান জানাই। ভগবান বুদ্ধের এই আদর্শ আমার নবীন বন্ধুদের উদ্দীপ্ত করবে এবং এগিয়ে চলার পথ দেখাবে। একই সঙ্গে, এই আদর্শগুলিকে আত্মস্থ করে এদের মানসিক উদ্বেগ প্রশমিত হবে এবং মানসিকতায় উৎফুল্লভাব সঞ্চারিত হবে।

আরও পড়ুন -  Hackers: হ্যাকারদের জন্য কোনো কিছুই এখন নিরাপদ নয়, অ্যান্ড্রয়েড ফোন সুরক্ষিত রাখার উপায়

বন্ধুগণ, আজ সমগ্র বিশ্ব অভাবনীয় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। এই চ্যালেঞ্জগুলি সুস্থায়ী সমাধানের ক্ষেত্রে ভগবান বুদ্ধের আদর্শ ও বাণী তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে। বুদ্ধের বাণী অতীতেও প্রাসঙ্গিক ছিল, বর্তমানেও প্রাসঙ্গিক রয়েছে এবং ভবিষ্যতেও প্রাসঙ্গিক থাকবে।

বন্ধুগণ, এখন সময় এসেছে, আরও বেশি সংখ্যক মানুষকে ভগবান বুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত স্থানগুলির সঙ্গে পরিচয় ঘটানোর। ভারতে আমাদের এ ধরনের স্মৃতি বিজড়িত একাধিক স্থান রয়েছে। আপনারা জানেন, সাধারণ মানুষ আমার সংসদীয় নির্বাচনী কেন্দ্র বারাণসীকে কিভাবে চেনেন? এই বারাণসীই হ’ল সারনাথের অন্যতম আধ্যাত্মিক কেন্দ্র। আমরা বুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত স্থানগুলির সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দিচ্ছি। কিছুদিন আগেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা কুশীনগর বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক মানের বিমানবন্দর হিসাবে গড়ে তোলার কথা ঘোষণা করেছিল। এর ফলে, সারনাথে আরও কিছু সংখ্যক পুণ্যার্থী ও পর্যটক আসা-যাওয়া করতে পারবেন। এমনকি, বহু মানুষের কাছে আর্থিক সুযোগ-সুবিধার সম্ভাবনা গড়ে তুলতে সাহায্য করবে।
তাই, ভারত আপনাদের আগমনের অপেক্ষায় রয়েছে!
বন্ধুগণ, আপনাদের সকলকে আরও একবার আমার শুভেচ্ছা। ভগবান বুদ্ধের আদর্শ ও বাণী আমাদের জীবনে আলোর দিশা, সৌভ্রাতৃত্ব ও অভিন্নতার বার্তা নিয়ে আসুক। ভগবান বুদ্ধের বাণী আশীর্বাদ আমাদেরকে শুভ কিছু করার জন্য অনুপ্রাণিত করুক।

আরও পড়ুন -  রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ আজ আষাঢ়ী পূর্ণিমা উপলক্ষ্যে ধর্মচক্র দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানের সূচনা করেছেন

ধন্যবাদ। অনেক অনেক ধন্যবাদ। সূত্র – পিআইবি।

Leave a Comment