রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ আজ আষাঢ়ী পূর্ণিমা উপলক্ষ্যে ধর্মচক্র দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানের সূচনা করেছেন

Published By: Khabar India Online | Published On:

খবরইন্ডিয়াঅনলাইন, নয়াদিল্লিঃ রাষ্ট্রপতি শ্রী রামনাথ কোবিন্দ আজ রাষ্ট্রপতি ভবণ থেকে আষাঢ়ী পূর্ণিমা উপলক্ষ্যে ধর্মচক্র দিবস উদযাপন আনুষ্ঠানের সূচনা করেছেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী এই উপলক্ষ্যে একটি বিশেষ ভিডিও বার্তার মাধ্যমে দেশবাসীকে সম্বোধন করেছেন। মঙ্গোলিয়ার রাষ্ট্রপতি খলতমাগেইন বাতুলগা-র বিশেষ বার্তাটি অনুষ্ঠানে পাঠ করে শোনান ভারতে নিযুক্ত মঙ্গোলিয়ার রাষ্ট্রদূত মিঃ গনচিংগনবিডের। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী শ্রী প্রহ্লাদ সিং প্যাটেল এবং সংখ্যালঘু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী শ্রী কিরেন রিজিজু।

অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি শ্রী রামনাথ কোবিন্দ বলেছেন, মহামারী যেভাবে বিশ্বজুড়ে মানুষের জীবন এবং অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিচ্ছে সেখানে বুদ্ধের বার্তা আশার আলোর মতো পথ দেখিয়েছে। ভগবান বুদ্ধ লোভ, ঘৃণা, হিংসা, ইর্ষা এবং অন্যান্য অনেক অনৈতিকতা ত্যাগ করে সুখ খুঁজে পাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। কিন্তু এই বার্তার বিপরীত পথে হেঁটে তীব্র লোভের শিকার হয়ে মানবজাতি একইভাবে পুরনো হিংসা এবং প্রকৃতির ধ্বংসের দিকে ঝুঁকেছে। আমরা সকলেই জানি যে এ মুহুর্তে করোনা ভাইরাসের তীব্রতা হ্রাস পেয়েছে, তবে আমাদের সামনে জলবায়ু পরিবর্তনের মতো আরও অনেক বড় সমস্যা রয়েছে।

আরও পড়ুন -  Pakistan flood: বন্যায় ৪৭ শিশুসহ ১৩৬ মৃত্যু, পাকিস্তানে

শ্রী কোবিন্দ আজ রাষ্ট্রপতি ভবণে ধর্মচক্র দিবস উপলক্ষ্যে আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ সংঘের আয়োজিত এক ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখতে গিয়ে একথা বলেন।

রাষ্ট্রপতি বলেছেন, ধর্মের উৎস ভূমি হিসেবে ভারত গর্বিত। ভারতে আমরা বৌদ্ধ ধর্মকে সত্যের শ্রেষ্ঠ ভাবপ্রকাশ হিসেবে দেখে থাকি। ভগবান বুদ্ধের জ্ঞান প্রাপ্তি এবং পরবর্তী চার দশক ধরে তাঁর বাণী প্রচারের ফলে বৌদ্ধিক উদারবাদ ও আধ্যাত্মিক বৈচিত্র্যের জন্য ভারতের প্রতি চিরাচরিত শ্রদ্ধা বজায় ছিল। আধুনিক যুগেও দুজন ব্যতিক্রমী ভারতীয় ব্যক্তিত্ব- মহাত্মা গান্ধী এবং বাবা সাহেব আম্বেদকর বুদ্ধের বাণীর দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন এবং দেশের সেবায় নিযুক্ত হয়েছিলেন।

রাষ্ট্রপতি বলেছেন, তাঁদের পদক্ষেপ অনুসরণ করে বুদ্ধের আহ্বান সাগ্রহে শোনার চেষ্টা চালালে আমরা তাঁর মহৎ পথ অনুসরণ করতে পারব। বিশ্ব স্বল্পমেয়াদী এবং দীর্ঘমেয়াদী নানা সমস্যায় জর্জরিত। এমন অনেক রাজা ও সমৃদ্ধশালী ব্যক্তির গল্প রয়েছে যাঁরা তীব্র হতাশা থেকে বাঁচতে বুদ্ধের শরণাপন্ন হয়েছিলেন, জীবনের নিষ্ঠুরতা থেকে দূরে সরে এসেছিলেন। প্রকৃতপক্ষে বুদ্ধের জীবন বোঝায় যে এই অসম্পূর্ণ বিশ্বে আমরা কষ্ট থেকে মুক্তি পেতে পারি।

আরও পড়ুন -  Rohit Sharma: রোহিত শর্মা, অধিনায়ক পদ থেকে ছাঁটাই!

রাষ্ট্রপতির সম্পূর্ণ ভাষণ দেখতে ক্লিক করুণ নিম্নলিখিত লিঙ্কে –
pibcms.nic.in/WriteReadData/userfiles/PIB%20Delhi/Speech-International%20Buddhist%20Confederation.pdf

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁর ভিডিও বার্তায় আষাঢ়ী পূর্ণিমা, যা গুরু পূর্ণিমা নামেও পরিচিত- উপলক্ষ্যে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন এবং ভগবান বুদ্ধের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেছেন। মঙ্গোলিয়ান কঞ্জুর-এর বেশ কয়েকটি অনুলিপি মঙ্গোলিয়া সরকারকে উপহার হিসেবে দেওয়া হয়েছে, এরজন্য তিনি উচ্ছাসও প্রকাশ করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভগবান বুদ্ধের অষ্টমার্গ বা বানী বিভিন্ন সমাজ ও দেশের সার্বিক কল্যাণের দিশা দেখায়। তিনি আরও বলেন, বৌদ্ধ তত্ত্ব সাধারণ মানুষ, নারী, গরিবদের প্রতি সন্মানের শিক্ষা দেয়। শান্তি এবং অহিংসার বার্তা বহন করে। তাই বৌদ্ধ ধর্মের শিক্ষার মধ্যে এক সুস্থায়ী ও বিকশিত বিশ্বের ভাবার্থ লুকিয়ে রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভগবান বুদ্ধ দুটি বিষয়ে কথা উল্লেখ করেছিলেন- প্রত্যাশা ও অভিপ্রায়। ভগবান বুদ্ধ প্রত্যাশা ও অভিপ্রায়ের মধ্যে গভীর যোগসূত্র খুঁজে পেয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী জানান, একবিংশ শতাব্দীর ব্যাপারে তিনি অত্যন্ত আশাবাদী। এই প্রত্যাশা দেশের নবীন বন্ধুদের বিশেষ করে যুব সম্প্রদায়ের কাছ থেকে সঞ্চারিত হয়েছে। তিনি বলেন, ভারত এখন বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ স্টার্ট-আপ উপযোগী দেশ। এখানে মেধাবী তরুণরা বিশ্ব সমস্যাগুলির সমাধান সূত্র খুঁজে বের করার প্রয়াসে ব্রতী রয়েছেন।

আরও পড়ুন -  ৫.১ বিলিয়ন ডলারের ক্ষতি ভূমিকম্পে সিরিয়ায়ঃ World Bank

বিস্তারিত জানতে নিচের লিঙ্কটিকে ক্লিক করুণ –
https://pib.gov.in/PressReleseDetail.aspx?PRID=1636320

অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রকের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী শ্রী প্রহ্লাদ সিং প্যাটেল এই আয়োজনের জন্য আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ সংঘের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। শ্রী প্যাটেল বলেন, ভগবান বুদ্ধের চিন্তাভাবনাগুলি ভৌগলিক সীমা অতিক্রম করে আজ সমগ্র বিশ্বের কাছেই প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে। কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী শ্রী কিরেন রিজিজু বৌদ্ধ ধর্মের মূল্যবোধ ও শিক্ষার বিষয় তুলে ধরেন। মন্ত্রী বলেন, বুদ্ধের জ্ঞান ও জনজাগরণের ভূমি হিসেবে পরিচিত ভারত এবং সেই ঐতিহাসিকতার সাক্ষ বহন করে নিয়ে চলেছে এই দেশ।

কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রকের সহযোগিতায় আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ সংঘ প্রতি বছর ধর্মচক্র দিবস উদযাপন করে থাকে। এরই অঙ্গ হিসেবে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। এর আগে চলতি বছরের গত ৭ই মে থেকে ১৬ই মে পর্যন্ত আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ সংঘ এবং সংস্কৃতি মন্ত্রক যৌথভাবে ভার্চুয়াল বৈশাখ উৎসব এবং বিশ্ব প্রার্থনা সভার আয়োজন করেছিল। সূত্র – পিআইবি।