ভোটার তালিকা সংশোধনের প্রথম ধাপ শেষ হতেই নতুন উত্তেজনা। কারণ দ্বিতীয় পর্বেই নাকি প্রকৃত লড়াই শুরু হবে—এমনটাই মনে করছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল। খসড়া তালিকা প্রকাশের আগে থেকেই দলীয় অন্দরে শুরু হয়ে গিয়েছে ব্যাপক প্রস্তুতি, আর সেই প্রস্তুতির কেন্দ্রে রয়েছে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
প্রথমেই নজর পরিযায়ী শ্রমিকদের দিকে। দক্ষিণবঙ্গের বহু জেলায় এখনো উল্লেখযোগ্য সংখ্যায় শ্রমিক ঘরে ফিরতে পারেননি। পরিবার ফর্ম জমা দিলেও নাম খসড়া তালিকায় উঠবে কি না, তা নিয়ে দলে সন্দেহ রয়েছে। তাই দ্বিতীয় ধাপে তাঁদের সশরীরে হাজির করানোই প্রধান লক্ষ্য। বুথ ও ব্লক স্তরের নেতৃত্বকে তাই কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছে নজরদারি বাড়ানোর।
দ্বিতীয় বড় চ্যালেঞ্জ ‘নথিহীন’ ভোটারদের ঘিরে। যাঁদের কাছে কমিশন নির্ধারিত কোনও নথি নেই, তাঁদের জন্য ১২ ডিসেম্বর থেকে ব্লকভিত্তিক ‘মে আই হেল্প ইউ’ ক্যাম্প চালু করছে নবান্ন। তৃণমূলের দাবি, বুথস্তর থেকেই নথিহীনদের তালিকা তৈরি করে রাখা হয়েছে, এবং তাঁদের শিবিরে পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব সংগঠনই নেবে।
তৃতীয় গুরুত্ব সদ্যবিবাহিত মহিলাদের নাম যুক্ত করা। বিয়ের পরে নতুন জেলায় বা রাজ্যে আসা মহিলাদের তথ্য সংগ্রহ করে সময়মতো নাম তোলায় জোর দিচ্ছে তৃণমূল। যদিও সংখ্যাটা বেশি নয়, তবু এই অংশকে পাশে পাওয়ার লক্ষ্য স্পষ্ট।
এর পাশাপাশি, দ্বিতীয় পর্বে অস্থায়ী কর্মীদের ব্যবহার, ভুয়ো ভোটার এড়াতে নজরদারি, মৃত ভোটারদের নাম বাদ পড়া নিয়ে কমিশনকে প্রশ্ন ছুড়ে চাপ তৈরি করার পরিকল্পনাও রয়েছে। ‘দিদির দূত’ অ্যাপে তথ্য দাখিলের মাধ্যমেও আলাদা সমান্তরাল হিসাব রাখছে তৃণমূল।
দলের বক্তব্য—প্রথম পর্বে কিছু ক্ষত তৈরি হলেও দ্বিতীয় পর্বেই তা সারিয়ে তোলার সুযোগ রয়েছে। আর সেই সুযোগ কাজে লাগাতেই নেমেছে গোটা সংগঠন।
1. এসআইআর-এর দ্বিতীয় পর্বের মূল লক্ষ্য কী?
দ্বিতীয় পর্বে পরিযায়ী শ্রমিক, নথিহীন ভোটার এবং সদ্যবিবাহিত মহিলাদের নাম সঠিকভাবে তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা।
2. নথিহীন ভোটারদের জন্য সরকার কী ব্যবস্থা নিচ্ছে?
১২ ডিসেম্বর থেকে প্রতিটি ব্লকে ‘মে আই হেল্প ইউ’ ক্যাম্প চালু হবে, যেখানে নথি তৈরির সহায়তা দেওয়া হবে।
3. পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে তৃণমূলের উদ্বেগ কেন?
অনেকে প্রথম পর্বে ফেরেননি, তাই তাঁদের নাম তালিকা থেকে বাদ পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
4. ভুয়ো ভোটার নিয়ে তৃণমূলের উদ্বেগ কী?
দলের ধারণা, এলাকায় নজরদারি কম হলে ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে ভুয়ো নাম ঢোকার সম্ভাবনা থাকে।
5. মৃত ভোটারদের নাম বাদ যাওয়ার ক্ষেত্রে তৃণমূলের পরিকল্পনা কী?
দল কমিশনের কাছে নথি দেখতে চাইবে, যাতে প্রয়োজনে আইনি চাপ তৈরি করা যায়।

