বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন, যিনি জানিয়েছেন—আগামী সংসদ নির্বাচন শেষ হলেই তিনি পদত্যাগ করতে চান। এই হঠাৎ সিদ্ধান্তের পিছনে লুকিয়ে আছে অপমানবোধ, দীর্ঘদিনের যোগাযোগহীনতা এবং রাষ্ট্রপতির সাংবিধানিক অবস্থান নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন।
বৃহস্পতিবার রয়টার্সকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে সাহাবুদ্দিন বলেন, তিনি ‘চলে যেতে আগ্রহী’। ঢাকার সরকারি বাসভবন থেকে হোয়াটসঅ্যাপে এটি ছিল দায়িত্ব নেওয়ার পর তার প্রথম গণমাধ্যম সাক্ষাৎকার। তিনি মনে করেন, নির্বাচনের আগে পদত্যাগ করলে সাংবিধানিক জটিলতা তৈরি হতে পারে, তাই নির্বাচন পর্যন্ত তিনি দায়িত্বে থাকতে চান।
২০২৩ সালে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়া ৭৫ বছরের সাহাবুদ্দিন জানান—অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস সাত মাস ধরে তার সঙ্গে দেখা করেননি। শুধু তাই নয়, প্রেস বিভাগ প্রত্যাহার এবং বিশ্বের সব বাংলাদেশের দূতাবাস থেকে এক রাতের মধ্যে তার প্রতিকৃতি সরিয়ে ফেলা হয়। এটি তাকে গভীরভাবে অপমানিত করেছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
রাষ্ট্রপতির ভাষায়, “সব দূতাবাসে আমার প্রতিকৃতি ছিল, আর হঠাৎ এক রাতের মধ্যে সব সরিয়ে দেওয়া হলো। এতে ভুল বার্তা যায় যে হয়তো রাষ্ট্রপতিকে সরিয়ে দেওয়া হবে।” তিনি প্রতিকৃতি ইস্যুতে ইউনূসকে চিঠি পাঠালেও কোনো সাড়া মেলেনি বলে জানান।
সাহাবুদ্দিন আরও বলেন, তার কণ্ঠ রুদ্ধ করা হয়েছে। তবে ইউনূসের দফতর এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
তিনি নিশ্চিত করেন যে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের সঙ্গে তার নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে এবং সেনাপ্রধান তাকে আশ্বস্ত করেছেন—দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনাই তাদের লক্ষ্য।
যদিও প্রথমদিকে কিছু ছাত্র সংগঠন তার পদত্যাগ দাবি করেছিল, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে আর কোনো রাজনৈতিক দল এমন দাবি তুলেনি বলে জানান রাষ্ট্রপতি।
প্রশ্ন ১: রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন কেন পদত্যাগ করতে চান?
উত্তর: অন্তর্বর্তী সরকারের আচরণে অপমানবোধ ও দায়িত্ব পালনে বাধাগ্রস্ত অনুভব করায় তিনি নির্বাচন পরবর্তী পদত্যাগের ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।
প্রশ্ন ২: তার প্রতিকৃতি কেন দূতাবাস থেকে সরানো হয়?
উত্তর: রাষ্ট্রপতি জানান, কোনো পূর্বঘোষণা ছাড়াই এক রাতের মধ্যে প্রতিকৃতি সরানো হয়, যা তাকে হতবাক করেছে।
প্রশ্ন ৩: প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস কি রাষ্ট্রপতির সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন?
উত্তর: রাষ্ট্রপতির দাবি—প্রায় সাত মাস ধরে ইউনূস তার সঙ্গে দেখা করেননি।
প্রশ্ন ৪: সেনাপ্রধানের সঙ্গে রাষ্ট্রপতির সম্পর্ক কেমন?
উত্তর: তিনি জানান, সেনাপ্রধানের সঙ্গে তার নিয়মিত যোগাযোগ আছে এবং তারা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
প্রশ্ন ৫: রাজনৈতিক দলগুলো কি রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ দাবি করেছে?
উত্তর: সাম্প্রতিক মাসগুলোতে কোনো রাজনৈতিক দল তার পদত্যাগ দাবি করেনি।

