হাতের কাছে থাকা একটি সাধারণ প্লাস্টিকের বোতল—এই ছোট অভ্যাসটাই কি ভবিষ্যতের বড় বিপদের কারণ হয়ে উঠছে? আধুনিক ব্যস্ত জীবনে প্লাস্টিকের বোতলে জল বহন করা আমাদের দৈনন্দিন রুটিনের অংশ। কিন্তু সাম্প্রতিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতামত বলছে, এই অভ্যাস নারীদের জন্য বিশেষ করে পিসিওসের ক্ষেত্রে মারাত্মক ঝুঁকি ডেকে আনতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, প্লাস্টিকের বোতলের জলকে এখন ‘উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ’ বলেই ধরা হচ্ছে। গবেষণায় দেখা গেছে, এক লিটার প্লাস্টিকের বোতলের জলেতে প্রায় ২ লাখ ৪০ হাজার ন্যানো-প্লাস্টিক কণা থাকতে পারে। এই অতি সূক্ষ্ম কণাগুলি অজান্তেই শরীরে প্রবেশ করে রক্তপ্রবাহে মিশে যায়।
আরও বড় বিপদ হলো বিপিএ বা বিসফেনল-এ। এটি প্লাস্টিকের বোতল, খাবারের কন্টেইনার এবং টিনজাত খাদ্যের আস্তরণে ব্যবহৃত হয়। বিপিএ শরীরে নকল ইস্ট্রোজেনের মতো আচরণ করে, ফলে স্বাভাবিক হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায়।
পিসিওস যেহেতু একটি হরমোনজনিত জটিলতা, তাই বিপিএ শরীরে ঢুকলে সমস্যা আরও বেড়ে যেতে পারে। এর ফলে ইস্ট্রোজেন ডমিন্যান্স তৈরি হয়, সিস্টের আকার বাড়তে পারে, ব্রণ, চুল পড়া, ওজন বৃদ্ধি এবং মাসিক অনিয়মিত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। দীর্ঘমেয়াদে এটি বন্ধ্যাত্বের আশঙ্কাও বাড়াতে পারে।
এই কারণেই বিশেষজ্ঞরা প্লাস্টিকের বোতলের বিকল্প হিসেবে স্টিল বা কাচের বোতল ব্যবহারের পরামর্শ দিচ্ছেন। যতটা সুবিধাজনক মনে হয়, প্লাস্টিকের বোতলের ক্ষতিও ততটাই গভীর। সচেতন সিদ্ধান্তই হতে পারে সুস্থ জীবনের প্রথম ধাপ।
প্রশ্ন ও উত্তর
১. প্লাস্টিকের বোতলের জল কেন ঝুঁকিপূর্ণ?
কারণ এতে ন্যানো-প্লাস্টিক ও বিপিএ শরীরে প্রবেশ করতে পারে।
২. বিপিএ কীভাবে শরীরের ক্ষতি করে?
এটি নকল ইস্ট্রোজেন হিসেবে কাজ করে হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করে।
৩. পিসিওস আক্রান্ত নারীদের ঝুঁকি বেশি কেন?
কারণ তাদের হরমোন ইতিমধ্যেই ভারসাম্যহীন থাকে।
৪. প্লাস্টিকের বোতলের বিকল্প কী?
স্টিল বা কাচের বোতল সবচেয়ে নিরাপদ।
৫. এই অভ্যাস বদলালে কি উপকার হবে?
হ্যাঁ, দীর্ঘমেয়াদে হরমোনজনিত ঝুঁকি কমতে পারে।

