একটি ছবি, আর তার সঙ্গে জুড়ে দেওয়া একটি ক্যাপশন— সেখান থেকেই শুরু তুমুল বিতর্ক। সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা সেই ছবি শেষ পর্যন্ত কেড়ে নিল ‘মিস ফিনল্যান্ড’ মুকুট।
ফিনল্যান্ডের প্রতিনিধি সারাহ জাফসে গত মাসে থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠিত মিস ইউনিভার্স প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। সেই সময় তোলা একটি ছবিতে চোখের কোণ টেনে ধরার ভঙ্গি করেন তিনি, যা পূর্ব এশীয়দের প্রতি অবমাননাকর বলে বিবেচিত হয়। বিতর্ক আরও তীব্র হয় যখন ছবিটির ক্যাপশনে লেখা ছিল— “এক চীনার সঙ্গে খাচ্ছি”।
ছবিটি ভাইরাল হতেই জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও চীনে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। আন্তর্জাতিক স্তরে সমালোচনার মুখে পড়েন ২২ বছর বয়সি সারাহ জাফসে। এর জেরে কর্তৃপক্ষ তার কাছ থেকে ‘মিস ফিনল্যান্ড’ খেতাব প্রত্যাহার করে নেয়।
বিতর্কের প্রভাব পড়ে ফিনল্যান্ডের জাতীয় বিমান সংস্থা ফিনএয়ার-এর ওপরও। পরিস্থিতি এতটাই জটিল হয় যে সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) মুখ খোলেন ফিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পেত্তেরি অর্পো। তিনি সারাহর অঙ্গভঙ্গিকে “কাণ্ডজ্ঞানহীন” বলে মন্তব্য করেন এবং জানান, এই ঘটনা দেশের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত করছে।
এদিকে ডানপন্থি দুই এমপি— জুহো এরোলা ও কাইসা গ্যারেডেউ— সারাহর সমর্থনে একই ভঙ্গিতে ছবি তুলে পোস্ট করলে তারাও সমালোচনার মুখে পড়েন। পরে পোস্ট সরিয়ে ক্ষমা চান তারা। তবে প্রধানমন্ত্রী সেই আচরণকে “শিশুসুলভ” বলে কড়া নিন্দা জানান।
সারাহ জাফসে দাবি করেছেন, পোস্টটি ভুলবশত হয়েছে। তার বক্তব্য, মাথাব্যথার কারণে সেই অভিব্যক্তি ছিল এবং ক্যাপশনটি এক বন্ধু তার অনুমতি ছাড়াই যোগ করেছিলেন। ইনস্টাগ্রামে ক্ষমা চেয়ে তিনি লেখেন, মানুষের প্রতি শ্রদ্ধা ও বৈচিত্র্যকে সম্মান করাই তার মূল মূল্যবোধ।
তবুও বিতর্ক থামেনি। কারণ ক্ষমা চাওয়ার বার্তাটি ছিল শুধুই ফিনিশ ভাষায়। সমালোচকদের মতে, যাদের অনুভূতিতে আঘাত লেগেছে, তারা সেই বার্তা আদৌ বুঝতে পারবেন কিনা— তা নিয়ে সন্দেহ থেকেই যাচ্ছে।
প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন 1: কেন মিস ফিনল্যান্ডের মুকুট কেড়ে নেওয়া হয়েছে?
উত্তর: বর্ণবাদী হিসেবে বিবেচিত একটি ছবি ও ক্যাপশন পোস্ট করার জেরে।
প্রশ্ন 2: কোন প্রতিযোগিতার সময় ছবিটি তোলা হয়েছিল?
উত্তর: থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠিত মিস ইউনিভার্স প্রতিযোগিতার সময়।
প্রশ্ন 3: সারাহ জাফসে কী ব্যাখ্যা দিয়েছেন?
উত্তর: তিনি বলেছেন, এটি অনিচ্ছাকৃত এবং ক্যাপশন তার অনুমতি ছাড়া যোগ করা হয়েছিল।
প্রশ্ন 4: ফিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী কী প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন?
উত্তর: তিনি ঘটনাটিকে কাণ্ডজ্ঞানহীন ও দেশের ভাবমূর্তির জন্য ক্ষতিকর বলেছেন।
প্রশ্ন 5: ক্ষমা চাওয়ার পরও কেন বিতর্ক চলছে?
উত্তর: কারণ ক্ষমা চাওয়ার পোস্টটি ফিনিশ ভাষায় ছিল, যা আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য হয়নি।

