১৫ বছরে বাংলার অগ্রগতি, মমতার দাবি, “দেশের মডেল বাংলা”

Published By: Khabar India Online | Published On:

নতুন ভোটের আগেই ফের চমক দিল নবান্ন। মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই প্রকাশ করলেন তাঁর সরকারের ১৫ বছরের ‘উন্নয়নের পাঁচালি’, যেখানে উঠে এল অর্থনীতি থেকে সামাজিক সুরক্ষা— সব ক্ষেত্রের বিস্তৃত পরিসংখ্যান।

দুপুর দেড়টা নাগাদ নবান্নের সভাঘরে বৈঠক শুরু হলে উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন দফতরের সচিব ও মন্ত্রীরা। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে বনমন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদা প্রথমে ভিডিওর মাধ্যমে উন্নয়ন রিপোর্ট উপস্থাপন করেন। এরপর ছ’টি ভাষায় রাজ্য সরকারের রিপোর্ট কার্ডের উদ্বোধন করেন মমতা, জানিয়ে দেন— এই তথ্য আরও সমৃদ্ধ হয়ে এক সপ্তাহের মধ্যে মানুষের হাতে পৌঁছে যাবে।

মমতার কথায়, ২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার পর রাজ্যের জিএসডিপি বেড়ে এখন পৌঁছেছে প্রায় ২০ লক্ষ ৩১ হাজার কোটি টাকায়। রাজস্ব বৃদ্ধি হয়েছে ৫.৩৩ গুণ, ক্যাপিটাল এক্সপেন্ডিচার বেড়েছে ১৭.৬৭ শতাংশ। কৃষি, সামাজিক খাত, ফিজ়িক্যাল সেক্টর— সব জায়গাতেই দৃশ্যমান উন্নয়ন। তাঁর দাবি, ২০১৩ থেকে ২০২৩-এর মধ্যে দারিদ্রসীমার বাইরে আনা হয়েছে এক কোটি ৭২ লক্ষ মানুষকে।

কর্মসংস্থান প্রসঙ্গে মমতা জানান, রাজ্যে দু’কোটিরও বেশি মানুষের কাজের সুযোগ তৈরি হয়েছে। ছ’টি অর্থনৈতিক করিডোর তৈরি হওয়ার ফলে আরও এক লক্ষ চাকরির সম্ভাবনার কথাও তুলে ধরেন তিনি। দেউচা-পাঁচামিতেও সমপরিমাণ কর্মসংস্থানের আশা প্রকাশ করেন। তিনি আরও জানান, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পক্ষেত্রে কাজ করছেন এক কোটি ৩০ লক্ষের বেশি মানুষ, আর স্কিল ট্রেনিং পেয়েছেন ৪২ লক্ষ যুবক-যুবতী।

নিজেদের ‘বাংলা মডেল’-এর শক্তির কথা তুলে ধরে মুখ্যমন্ত্রী জানান, রাজ্যে গড়ে তোলা হয়েছে ১২ লক্ষ স্বনির্ভর গোষ্ঠী— যা দেশের মধ্যে নজির। পাশাপাশি বিজেপিকে কটাক্ষ করে বলেন, “লক্ষ্মীর ভান্ডার আমরা বছরে ১২ হাজার দিই, পাঁচ বছরে ৬০ হাজার— অনেক রাজ্যে শুধু দেখানোর জন্য করা হয়।” বর্তমানে ২ কোটি ২১ লক্ষ মহিলা এই প্রকল্পের সুবিধাভোগী।

কন্যাশ্রী, রূপশ্রী, স্বাস্থ্যসাথী থেকে জয় বাংলা— একাধিক প্রকল্পের পরিসংখ্যানও তুলে ধরেন মমতা। স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের আওতায় সুবিধা পেয়েছেন দু’কোটি ৪৫ লক্ষ পরিবার। সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পে মিলেছে কোটি কোটি মানুষের সহায়তা— বিপুল অঙ্কের বরাদ্দের তথ্যও প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী।

এছাড়া ৯৪টি সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পের মাধ্যমে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, কৃষি, গ্রামোন্নয়ন ও নারীকল্যাণে কীভাবে অগ্রগতি হয়েছে তা রিপোর্ট কার্ডে তুলে ধরা হয়েছে। কেন্দ্রীয় বরাদ্দ আটকে গেলেও ‘কর্মশ্রী’, ‘বাংলার বাড়ি’ প্রভৃতির মতো প্রকল্প চালু রেখেছে রাজ্য, এমনটাই জানান তিনি।

মঙ্গলবারই মালদহ ও মুর্শিদাবাদের উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়ার কথা উল্লেখ করেন মুখ্যমন্ত্রী।

 

১. মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কোন রিপোর্ট কার্ড প্রকাশ করেছেন?
গত ১৫ বছরে রাজ্য সরকারের উন্নয়নমূলক কাজের রিপোর্ট ও পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছেন তিনি।

২. রাজ্যের জিএসডিপি কত বৃদ্ধি পেয়েছে?
২০১১ সালের তুলনায় তা বেড়ে হয়েছে প্রায় ২০ লক্ষ ৩১ হাজার কোটি টাকা।

৩. কত মানুষকে দারিদ্রসীমার বাইরে আনা হয়েছে?
প্রায় এক কোটি ৭২ লক্ষ মানুষকে— ২০১৩ থেকে ২০২৩-এর মধ্যে।

৪. লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পের সুবিধাভোগী কতজন?
২ কোটি ২১ লক্ষ মহিলা এই প্রকল্পের সুবিধা পান।

৫. রিপোর্ট কার্ড কত ভাষায় প্রকাশ করা হয়েছে?
মোট ছ’টি ভাষায় রিপোর্ট কার্ড প্রকাশ করা হয়েছে।