রান্নাঘরে ঢুকেই চোখ জ্বালা বা নিঃশ্বাস ভারী লাগা—এই ছোট অস্বস্তিগুলোই যে বড় বিপদের ইঙ্গিত, তা অনেকেই বুঝে ওঠেন না। অথচ প্রতিদিনের রান্নার ধোঁয়াই নীরবে ফুসফুসের গভীরে ক্ষতি করে ডেকে আনতে পারে সিওপিডি (ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ)।
রান্নার সময় তৈরি হওয়া ধোঁয়া, ঘরের ভেতরের বায়ুদূষণ, ধূমপান কিংবা শিল্প দূষণ—সব মিলিয়ে ফুসফুস ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে পড়ে। বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে বহু নারী ধূমপান না করেও সিওপিডিতে আক্রান্ত হচ্ছেন শুধুমাত্র রান্নাঘরের ধোঁয়ার কারণে।
মাটির চুলা বা কাঠ, কয়লা, খড়ের মতো জ্বালানি ব্যবহারে যে ধোঁয়া তৈরি হয়, তাতে থাকা সূক্ষ্ম কণা পিএম২.৫ সরাসরি ফুসফুসের গভীরে পৌঁছে যায়। এর ফলে শ্বাসনালী সংকুচিত হয়, অক্সিজেন আদান-প্রদান ব্যাহত হয় এবং দীর্ঘদিনে কাশি, শ্বাসকষ্ট ও সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
এই নীরব রোগ থেকে বাঁচতে কিছু সহজ কিন্তু কার্যকর অভ্যাস গড়ে তোলা জরুরি। রান্নাঘরে পর্যাপ্ত বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা রাখতে হবে। সম্ভব হলে এলপিজি বা ইন্ডাকশনের মতো ধোঁয়াবিহীন চুলা ব্যবহার করা উচিত।
রান্নাঘরে এক্সহস্ট ফ্যান বা বাতাস নির্গমন ব্যবস্থা থাকলে দূষিত বাতাস দ্রুত বাইরে বেরিয়ে যায়। পাশাপাশি শিশু ও বয়স্কদের রান্নার ধোঁয়া থেকে দূরে রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
শ্বাসকষ্ট বা কাশি দীর্ঘদিন চললে অবহেলা না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই বুদ্ধিমানের। সময়মতো সচেতনতা ও সতর্কতা অবলম্বন করলেই রান্নার ধোঁয়া থেকে হওয়া সিওপিডি ঝুঁকি অনেকটাই কমানো সম্ভব।
প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন ১: সিওপিডি কী?
উত্তর: সিওপিডি একটি দীর্ঘমেয়াদি ফুসফুসের রোগ, যেখানে শ্বাস নিতে কষ্ট হয়।
প্রশ্ন ২: রান্নার ধোঁয়া কীভাবে ফুসফুস ক্ষতিগ্রস্ত করে?
উত্তর: ধোঁয়ার সূক্ষ্ম কণা ফুসফুসে প্রদাহ সৃষ্টি করে ও শ্বাসনালী সংকুচিত করে।
প্রশ্ন ৩: ধূমপান না করলেও কি সিওপিডি হতে পারে?
উত্তর: হ্যাঁ, দীর্ঘদিন রান্নার ধোঁয়ার সংস্পর্শেও সিওপিডি হতে পারে।
প্রশ্ন ৪: কোন চুলা সবচেয়ে নিরাপদ?
উত্তর: এলপিজি বা ইন্ডাকশন চুলা তুলনামূলকভাবে বেশি নিরাপদ।
প্রশ্ন ৫: কখন চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে?
উত্তর: দীর্ঘদিন শ্বাসকষ্ট, কাশি বা বুকে চাপ থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

