আধুনিক জীবনে স্ক্রিন যেন আমাদের দিনেরই একটি অংশ। কিন্তু জানেন কি, এই আলোই নীরবে বাড়িয়ে দিতে পারে আপনার বয়স? প্রতিদিন ঘণ্টার পর ঘণ্টা কম্পিউটার বা ফোনের সামনে বসে থাকা আমাদের ত্বক, চোখ এবং শরীরের ওপর ফেলছে গভীর প্রভাব।
বিশেষজ্ঞদের মতে, স্ক্রিন থেকে নির্গত নীল আলো ত্বকের গভীরে ঢুকে ফ্রি র্যাডিক্যাল তৈরি করে, যা কোষের গঠন ভেঙে দেয়। এর ফলে কোলাজেন কমে ত্বক ঢিলে হওয়া, বলিরেখা দেখা দেওয়া এবং কালো দাগ হওয়া দ্রুত বাড়তে থাকে। এই কারণেই অনেকেই অকাল বার্ধক্যের লক্ষণ খুব দ্রুত অনুভব করেন।
শুধু ত্বকই নয়, রাতে শোবার আগে স্ক্রিন ব্যবহার করলে নীল আলো মেলাটোনিন হরমোন কমিয়ে ঘুমের ছন্দ নষ্ট করে দেয়। পর্যাপ্ত ঘুম না হলে শরীরের রিপেয়ারিং প্রক্রিয়াও ব্যাহত হয়, ফলে ভেতর থেকে বার্ধক্য বাড়ে।
দীর্ঘক্ষণ স্ক্রিনে তাকিয়ে থাকার ফলে চোখ শুষ্ক হওয়া, ঝাপসা দেখা এবং মাথাব্যথা হওয়া এখন খুব সাধারণ। পাশাপাশি মোবাইল বা ল্যাপটপের দিকে ঝুঁকে বসলে ‘টেক নেক’ সমস্যা তৈরি হয়—ঘাড়ে ভাঁজ পড়ে, থুতনির নিচে ত্বক ঢিলে হয়, যা বয়সকে আরও বেশি তুলে ধরে।
তবে কয়েকটি ছোট অভ্যাসই আপনাকে রক্ষা করতে পারে। স্ক্রিনে কাজ করার সময় ব্লু-লাইট ফিল্টার বা নাইট মোড চালু রাখুন। প্রতি ২০ মিনিটে অন্তত ২০ ফুট দূরে ২০ সেকেন্ড তাকান। ঘুমানোর এক ঘণ্টা আগে স্ক্রিন বন্ধ করুন এবং মনিটরকে চোখের সমান উচ্চতায় রাখুন। ত্বক সুরক্ষায় অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, বিশেষ করে ভিটামিন–সি সমৃদ্ধ স্কিনকেয়ার ব্যবহার করলেও ক্ষতি কমে।
সচেতন ব্যবহারের মাধ্যমে স্ক্রিনের সুবিধা নিয়েও ডিজিটাল এজিং থেকে নিজেকে রক্ষা করা সম্পূর্ণই সম্ভব।
স্ক্রিনের নীল আলো কি সত্যিই ত্বকে বয়স বাড়ায়?
হ্যাঁ, নীল আলো ফ্রি র্যাডিক্যাল তৈরি করে কোলাজেন ভেঙে ত্বকের ক্ষতি বাড়ায়।ঘুমের ওপর স্ক্রিনের প্রভাব কতটা?
নীল আলো মেলাটোনিন কমিয়ে ঘুমের ছন্দ নষ্ট করে, যার ফলে ঘুমের মান কমে যায়।‘টেক নেক’ সমস্যা কীভাবে হয়?
ল্যাপটপ বা ফোনের দিকে ঝুঁকে বসলে ঘাড়ে চাপ পড়ে এবং ভাঁজ তৈরি হয়।ব্লু-লাইট ফিল্টার কি কার্যকর?
হ্যাঁ, এটি নীল আলোর ক্ষতিকর অংশ কমিয়ে চোখ ও ত্বকের সুরক্ষায় সাহায্য করে।স্ক্রিন ব্যবহারের ক্ষতি কমাতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অভ্যাস কোনটি?
শোবার কমপক্ষে এক ঘণ্টা আগে স্ক্রিন বন্ধ রাখা এবং নিয়মিত চোখকে বিশ্রাম দেওয়া।

